আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন নিয়া আরও কিছু কথা

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

জাবির আন্দোলন নিয়া প্রথম লেখাটা লেখছিলাম ৩০ জুলাই। (Click This Link)। আন্দোলন একটা মোড় নিছিল সেই সময়। ছানোয়ার হোসেনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন আমি প্রথম দিন থেকেই পর্যবেক্ষণ করতেছি।

পরশু পর্যন্ত আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, আন্দোলন মিনিমাম জয় অর্জন করবে। কিন্তু কাল সকালে পত্রিকা হাতে নিয়া হতাশ হয়া গেলাম। এখন জাহাঙ্গীরনগর থেকে ম্যাক্সিমাম দূরত্ব রাইখা চলি। সো, পুরা ফিচারটা আমার কাছে ক্লিয়ার নয়। বিশেষ কইরা ইন্টারনাল ম্যাকানিজম।

সেইটা পরিস্থিতির ভিতরে না থাকলে কোনোভাবে বুঝা সম্ভবও না। রায়হানদার একটা পোস্টে আলামত পাইছিলাম যে, সানীর সাপোর্টে শক্তিশালী কোনো পক্ষ আছে। (Click This Link)। কিন্তু এইভাবে ছাড়া পেয়ে যাবে সেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হইতেছিল। কালকে থেকে আজকে বেশ কয়েকটা পোস্ট পড়লাম সামহয়ারইনে।

কাল শুরু করছিলেন অন্যমনস্ক শরৎ আজকে লাস্ট পড়লাম নুশেরার পোস্ট। একজন বাদে সবাই আন্দোলনে সমর্থন দিছেন। জাবি প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছেন। শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। তাদের কর্তব্যে অটল থাকতে বলেছেন।

আমার মতে, সামহয়ার থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যে সাপোর্ট পাইলো এইটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলনের শুরু থেকেই সাপোর্ট দিয়েছেন ব্লগাররা। পরশু সিন্ডিকেট বসার দিনে আনু মুহাম্মাদ প্রথম আলোতে কলাম লিখছেন। বিভিন্ন মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে। এর আগে আন্দোলনকারীরা যখন অনশন পালন করতে গিয়া জীবন বিপন্ন করছিলেন তখন দেশের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টরা বিবৃতি দিছেন।

তারা সশরীরে জাবিতে গিয়ে সংহতি জানাইছেন। এবং তাদের সামনেই ভিসি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি পত্রপত্রিকায় আন্দোলনের সমর্থনে প্রচুর লেখা পড়ছি। ফেসবুকে গ্রুপ হইছে একাধিক। প্রাক্তন ছাত্ররা সংহতি জানাইছেন একাধিকবার।

গত ২ আগস্ট অনেকে গিয়া সমর্থন জানায়ে আসছেন। অর্থাৎ আমাদের সমাজের বহু অংশের সক্রিয় সমর্থন সত্ত্বেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ সিন্ডিকেট একটা অন্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এইখানে বলে রাখি, সিন্ডিকেট কোনো বিচারালয় না। নানা সুবিধাভোগী, আমলা, শিক্ষক রাজনীতির টাউটরা এইখানে বসেন। তাদের মূলকাজই হইলো, চুরি-চামারি, ডাকাতি ইত্যাদির ভাগবাটোয়ারাকে বৈধতা দেওয়া।

ফলে, সিন্ডিকেটগুলা প্রচণ্ড চাপে না থাকলে আন্দোলনের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। এখন প্রশ্ন হইলো, আমাদের সব চাপ সত্ত্বেও কেন জাবি কর্তৃপক্ষ বা সিন্ডিকেট কেন আন্দোলনের দাবির প্রতি মিনিমাম শ্রদ্ধা দেখাইলো না? কারণটা যদি বলি, তাইলে নির্মম শোনাইতে পারে। কিন্তু সেইটাই সত্য। সেটা হইলো, রাস্তার আন্দোলন ততোটা শক্তিশালী ছিল না। ফলে, ভার্চুয়াল বা কাগুজে সমর্থন কোনো কাজে আসে নাই।

আন্দোলন শুরু করছে, নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। জাবির ইতিহাসে নাট্যতত্ত্বে কোনো শিক্ষার্থীর আন্দোলনে আসাই একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। তারা যখন তাদের বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করছে তখন সেইটার গুরুত্ব ভয়াবহ। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরে আন্দোলনের ঐতিহ্যবাহী শক্তিগুলা এইটা বুঝতে সময় ক্ষেপন করছে। ফলে, আন্দোলন জমাট বাঁধতে অনেক সময় লাগছে।

দীর্ঘায়িত আন্দোলন চালায়ে নেওয়ার মতো কঠিন কাজ আর নাই। সময় যত দীর্ঘায়িত হইছে ততোই দুর্বল হইছে। সব কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরও প্রশাসনের ওপর চূড়ান্ত চাপ দেওয়া সম্ভব হয় নাই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত সংখ্যায় রাস্তায় নামে নাই। এর মূল কারণ আর কিছু না।

ক্যাম্পাসের ভিতরে খুব একটা মুভ করা হয় নাই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা পত্রিকা পইড়া বা ব্লগ পইড়া আন্দোলনে আসে না। তারা বন্ধু-বন্ধু যোগাযোগের ভিত্তিতে আসে। সেইরকম কার্যকর মুভ হয় নাই। আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখলাম, তাদের একটা বড় অংশ বাইরে মানে ঢাকায় মুভ করতে সময় ব্যয় বেশি করছেন।

যাই হউক, আন্দোলনের প্রথম পর্বটা ব্যর্থ হইছে। কিন্তু তৎক্ষণাৎ আন্দোলনের পক্ষ থেকে সানীকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্তটা ভাল হইছে। সামাজিক বয়কটের ঘোষণা থেকে নতুন করে মুভ করা সম্ভব হইতে পারে। তার জন্য ঢাকায় মুভ করলে বা মিটিং করলে কোনো কাম হবে না। এইগুলা কোনো ফল দেয় না।

স্পটে গিয়া ছাত্রদের বুঝায়ে মিছিলে আনতে হবে। কিশোরকে নির্মমভাবে আহত করা হইছে। সংবাদপত্রের নিউজ থকে যা বুঝলাম, হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায় নাই। জাবিতে যে আন্দোলনকারীরা থাকেন, তাদের মনে রাখতে হবে, সানীর বাড়ি সাভার-ধামরাই এলাকায়। এলাকার গুণ্ডা-পাণ্ডাদের কাজে লাগিয়ে সে ক্যাম্পাসে ঢুকার চেষ্টা করবে।

সে কড়া আওয়ামী লীগার হইলেও, আগে ছাত্রদলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বইলা শুনছি। এবারও ছাত্রদল তার কাছ থেকে টাকা খাইছে, বইলা ক্যাম্পাসে গুজব আছে। সো, নতুন আন্দোলন দানা বাঁধার আগে আন্দোলনকারীদের সাবধান থাকতে হবে। একা চলা যাবে না। ক্যাম্পাসের ভিতরে বাইরে দল বেঁধে চলা ফিরা করতে হবে।

আরেকটা আশঙ্কা হইলো, কর্তৃপক্ষ ও সানী চাইবে তার ওপর এখন আন্দোলনাকারীরা শারীরিক হামলা করুক। যার ভিত্তিতে তারা মামলা, শোকজ, বহিষ্কার ইত্যাদি করতে পারে। আমি শারীরিক আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলবো। নাজুক সময়টা অতিক্রম করতে পারলেই, সব ঠিক হয়া যাবে। আশাটাই মূল কথা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.