আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার হারিয়ে যাওয়া এক ঘন্টা আর জাহাঙ্গীরনগরের বিশমাইল!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
আমার জীবন থুক্কু যৌবন থিকা এক ঘন্টা কাইড়া নেওনের পর নিজেরে কেমুন জানি এতিম এতিম ভাবতে লাগলাম- এই কথা শুইনা আমার এক বন্ধু সাত সকাল মানে আসল সময়ের ভোরবেলাই একখান মারফতী ডেলিভারী দিয়া কাইত কইরা দিলো মনটারে," আসলেই তো আমরা এতিম, আইছি একলা ন্যাংটা হইয়া যামু একলা ন্যাংটা হইয়া, খালি রাইখা যামু কয়ডা বদের হাড্ডির প্রোডাকশন!" মনখান ব্যাফক উদাস! গতকাইল রাতে ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াসের অর্ধেক দেখলাম, বাকীডা কারেন্ট চইলা যাওনে আন্ধারে দেখবার পারি নাই। সেই উচাটনিয়ান দুঃখ এই জন্য রুখবার পারি নাই যে ব্রাগাডা কেডা যার কারনে লেটি খুন হইলো আর ডমের মাথা বিগড়াইলো। পুরাই ভাবস নিয়া মুভী খান হইছে। মনে হইলো আগের সব কয়ডার ভাবের রেকর্ড এ ভাইঙ্গা দিছে, ব্যাবসা যাই করুক সেইডা নিয়া আমার ভাবনা নাই! তয় আমার পুরা গাও গরম! এমুন একখান মুভী কারেন্ট থাকলেই দেখন যায় ফুল সাউন্ডে! গত বুধবার সড়ক ভবনের একটা মিটিং শেষ কইরা চইলা গেলাম মল চত্বরে।

একটা জিনিস দেখনের খুব শখ আছিল হেইডা হইলো ডান পাশে সার ধরে স্টাচু অব লিবার্টির মতন খাড়াইয়া থাকন ২০ টি কৃষ্ঞচুড়া গাছে যখন একসাথে কৃষ্ঞচূড়া ফোটে তখন কেমন লাগে দেখতে! দেখলাম, মাচু খাইলাম, ওয়াই ফাইয়ে দুইজনের সাথে চ্যাট করলাম। একজন কইলো সাটুরিয়া ঘুরবার চায়। আমি কইলাম ভালা কথা, লও যাই। তখন হেয় জিগাইলো মল চত্বরে কার লগে ফিল্ডিং মারতাছো উত্তরে আমি কইলাম কৃষ্ঞচূড়ার লগে। সে কইলো হাহাপগে।

তখন সেই ইনফোটা দিলো আইজকা গেছিলাম জাহাঙ্গীর নগর। টার্গেট সাটুরিয়া হইলেও বিশমাইলে গিয়া কৃষ্ঞচূড়ার সারি দেখবার যামু। ভাবলাম ঐখানেও কেমুন আগুণ ধরছে এইডা অবলোচনের। কেউ একজন কইছিলো বিশমাইলেও নাকি কৃষ্ঞচূড়ার সারি আছে। দেইখা আচানক টাস্কি - অদ্ভূত সুন্দর জায়গা, লেকের ধারে খোলা জায়গায় সবুজ ঘাস আর দূরে জঙ্গলের সারি।

তবে একটা ব্যাপার দেইখা দিলে হার্ট খাইলাম ফ্রীতে গরমের সাথে। এইবার কৃষ্ঞচূড়ার ফলনে উপর্যূপরি ধ্বস! আগুণ তো ধরেই নাই, মনে হইলো কৃষ্ঞচূড়া গুলান কি কারনে ফুল না ফুটাইয়া ফাটাইয়া সবুজ পাটা ফাটাইতাছে। আমার লগেরটা কয় সবুজ ঘাস দেইখা- আমার না খুব ইচ্ছা করছে গরু হয়ে যাই আর এসব ঘাস খাই! আমি কইলাম," গরু যখন হইবাই, তাইলে কুরবানীর সময় হইয়ো, গরূর মেলা দাম, তুমারে নিয়াই আল্লাহু আকবর!" যাই হোউক সাটুরিয়া যেই না যামু তখন কইলো একটা পিকনিক চলতাছে। সুইমিং পুলের ওদিকে। ইউআরপির পুলাপান যারা এলজিআরডিতে ইন্টার্নি করতাছে তারা নাকি দাওয়াত দিছে।

আমি মনে মনে কইলাম," হাছিনা আপা, বাইচা গেলো ১০ টার ঘুম ১১ টা দেখাইয়া আমারে আসল টাইমের ৯ টায় উঠাইলো। আমার জীবন থিকা ১ ঘন্টা উইথাআউট পারমিশনে চুরিও করলো। কিন্তু ফল তো খারাপ হইতাছে না। মাফ করন যায় মনে হয়!" নাচতে নাচতে গেলাম সবুজের জঙ্গল দিয়া সুইমিং পুল। দেখি বাম পাশের নীচু ঢালের জঙ্গলে অনেক গুলান পোলা মাইয়া বইসা রইছে।

আমার লগেরটা দেখি ওদের ঐখানেই লইয়া গেলো। যাইয়া দেখি পুরাই পাংখা। আমরা পোলারা ছিলাম ৫ খান আর আমার লগের খানরে নিয়া মাইয়া হইলো ৬ খান। কাপল ছিলো ২ জন সেই হিসাবে ৪ জন ফ্রী যার মধ্যে ২ জন ফাটাফাটি। জঙ্গলে আয়োজন খারাপ না- গরূর গোস্ত, খিচূড়ি, আন্ডা, লাকড়ী, কেরাসিন (লাকড়ি জ্বালানীর লিগা), সয়াবিন তৈল, মসল্লা ইত্যাদি।

যেহেতু আমি কাজ কিছুই পারি না, তাই প্রথমে যাইয়াই আমি একটা টস্কি লাগানি কাজ কইরা ফেলাইলাম। বাতাসের ঠেলায় চুলা জ্বালান যাইতাছিলো না। আমি একটা পাতা ছিড়লাম তারপর বাতাসে উড়াইলাম। বাতাস দুই ডিরেকশন থিকা আসতাছে। চুলার চারিদিকে কিছু সরু লাকড়ি দিয়া খুটা গাড়লাম আমার দেখাদেখি অন্যরাও গাড়লো।

তারপর বেশ কিছু পাতা ওয়ালা ডাল পালা ছিড়লাম জঙ্গল থিকা। ঐ দুই ডিরেকশন পাতার স্তূপ দিয়া ঢাইকা দিলাম। তখন হঠাৎ দেখি চুলার আগুন দেখে কে! এইখানেও ফিজিক্স কামে লাগছে। তারপর সবাই লাকড়ি খুজতে গেলো। আমি কিছু দূর যাইয়া খুইজা আনলাম তারপর লাটসাহেবের মতো বইসা রইলাম।

সবাই অল্পতেই অবাক। অবশ্য আসল কাজ করছে আমান নামের পোলাডা আর আমার লগেরডা। এরা দুইজন রান্না বাড়া সব করলো আর বইসা সব খাইয়া ঘড়িত দেখি বিকাল ৩:৪০ মিনিট। খাওন এতই গরম সোয়াদীশ হইছে যে খাইয়া অহন দেখি কেউ উঠতে পারে। গোস্ত আর খিচুড়ি অনেক বাইচা গেছিলো মাগার কেউ খাইতে পারতাছিলো না।

অতঃপর গ্রুপ ফটোসেশন আর নিলাম বিদায়। তয় চান্স পাইনাই আমার বিজনেস কার্ড বিলানের যেইখানে আমার নম্বর খান আছিলো-- আফসুস! অতঃপর রাস্তায় খাড়াইয়া হঠাৎ কইরা লগেরটা ডিসিশন নিলো সিএনবির অরন্যালয়ের চিড়িয়াখানা দেখবো। আমি মনঃক্ষুন্ন কইরা কইলাম," লও যাই!" আসলে মনঃক্ষুন্ন হমু না কেন, এত সুন্দর সুন্দর হুর পরী থাকতে, দুইটা ফাটাফাটি লেডিস হল- প্রীতিলতা হল আর জাহানারা ইমাম লগে বেগুন জিয়া হল থুইয়া কে ঐ ঝিমাইনা অজগর দেখবার চায়। যাই হোউক, আউল ফাউল কাজ দিয়া যখন রওনা দিমু তখন ঘড়ির দিকে তাকাইয়া দেখি সন্ধ্যা ৭:৩০ টা। খাইলাম একটা টাস্কি।

অখনও সূর্য্যমামু আসমানে খিল খিল কইরা হাসতাছে। দুই মিনিটের লিগা মনে হইলো স্ক্যান্ডিনেভিয়ান কান্ট্রীতে অবতীর্ন হইলাম। পরে বাসে উইঠা ভুল ভাংলো। বাসায় আসলাম ৮:৩০ টায়, তখনও দেখি মানুষ এশার নামাজ থুইয়া মাগরিব পড়তে ছুটতাছে। মানুষ তাইলে এশা পড়বো কখন- রাইত বারোটায়? বাসায় আইসা উদাস বদনে ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াসের বাকীডু দেখলাম।

ফেলিক্সের পতন আর আসলেই ব্রাগা কেডা, হেইডাও বুঝলাম, তয় টানেলের মধ্যে দিয়া রেসখান মনে ধরছে আর তার চেয়ে মনে ধরছে ডমের গাড়ীখান! পুরাই ঝাক্কাস। অবশ্য আরো একখান ঝাক্কাস ছবি আছে- ক্রাংক (হাই ভোল্টেজ)। পাগলা জেসন স্ট্যাটথামের পাগলামী দেখবার মন চায় খালি!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.