আমি অন্ধ্........মূর্খ....জ্ঞানহীন....
আমার ঘনিষ্ট বন্ধু- জনি।
গত রাতে জনি কে নিয়া একখান জঠিল স্বপ্ন দেখলাম। সকালে মোবাইলে স্বপ্নের ঘটনা ওকে জানানোর পর থেকে ওর মোবাইল বন্ধ।
...........
স্বপনে দেখিলাম..........
আমি আর জনি আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
মারাত্নক আনন্দ ! !
ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ একটা বিশাল মার্কেটের ভেতর থেকে আমি জনিকে হারিয়ে ফেললাম।
অনেক খুজাখুজির পরও পেলাম না।
আমাদের দুজনের যে মোট ডলারগুলো ছিল তার প্রায় ৮০% ই জনির কাছে।
এর পর থেকে আমার দিনগুলো খুব কষ্টে কাটতে লাগলো। কোনরকমে হ্যান্ড টু মাউথ করে চলতে লাগলাম।
কিছুদিন পর পূর্ব ইতিহাস (আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট/তার বাবা নাকি জুতা কালি করতেন) এর জের ধরে জুতা কালির জিনিস পত্র নিয়া বইসা পরলাম।
ইনকাম মোটামোটি ভালই চলছিল।
বছরখানেক পরের কথা।
আমার আস্তানার পাশে পার্ক করা মার্সিটিজ বেঞ্চ থেকে এক ভদ্রলোক নেমে এসে তার জুতা দুটো কালি করতে বললেন। ভদ্রলোকের সিকিউরিটি হিসাবে দুইজন অস্ত্রধারী বিদ্যমান। আমি অতি যত্নসহকারে ভদ্রলোকের জুতা কালি করে দিলাম।
টাকা নেওয়ার সময় উপরের দিকে তাকিয়ে একটু অবাকই হলাম। ইনি আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধু জনি। ও আমাকে চিনতে পারলো। কিন্তু বেশি ঘনআলাপে রাজি নয়। বুঝলাম- বন্ধু আমার চেঞ্জ।
ও শুধু যাওয়ার সময় আমাকে ওর ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বল্ল-
-দোস্ত (খুব ক্ষিনস্বরে) এই নে আমার কার্ড । সময় করে অফিসে আসিস। কথা হবে।
মনে মনে ভাবি-
যাক্ ......... আমি শালা মুচি হইচি তো কি হইচে ? আমার দোস্ত তো একটা কিছু হইচে। তিনারে দুইজন বন্দুক লইয়া গার্ড রাহে।
বন্দু আমার আমেরিকার না জানি কি অইচে !!!!!! ভাবতেই পরানডা জুরাইয়া গেলো।
---------------------------
টুইন টাওয়ারের ১৮ তলায় জনির অফিস। লিফট এ লোকজনের লাইন দেখে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলাম। সিড়িতেও লোক জনের ভির কম না। সবাই নাকি ১৮তলায় যাবে।
১৬ তলার সিড়িতে লোকজন সিরিয়ালে খারাইছে। একজন সিকিউরিটি আমারেও সিরিয়ালে খারাইতে কইল। আমি কইলাম -
-ভাইজান আমি জনির অফিসে যামু। ১৮ তলায়। আমার লাইনে খাড়ান লাগবো না।
- হই মিয়া...... "মি. জনি সাহেব" বলেন। স্যারের সাথে দেখা করতে হলে একমাস আগে এপয়েন্টমেন্ট দিতে হয়। দেখি - আপনার এ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লিপ দেখি ?
-খাইছে রে। কয় কি ? আরে ভাই মি. জনি সাহেব আমার বাল্যকালের দোস্ত। উনারে গিয়া কন - নিশাচর আইছে।
-মাফ করেন ভাই । দেখত্যাছেন না ? লিফটের গোরায় মানুষ। সিড়িতে মানুষ। আর এরা সবাই আমেরিকার অনেক বড় বড় পজিশনে আছেন।
স্যারের সাথে এখন আমেরিকার সামরিক বাহিনীর প্রধান মিটিং করতাছে।
একটু পরে আইবো বেশ কয়জন মেজর জেনারেল। উনারা গত মাসে অগ্রিম এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়া সিডিউল নিছে। আর আপনে আইছে মিয়া এ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া। যান্ - নিচ তলায় বুকিং অফিস আছে। ওখান থেকে টিকেট লইয়া পরে আসেন।
-ঠিক আছে ভাই। দেখা না হয় নাই করলাম। আপনে এই কাগজটুকু শুধু মি. জনি সাহেবের কাছে পৌছে দেন। আপনি ফিরে আসলে আমি চলে যাবো।
-ওকে ।
-আমি আমার নামটা লিখে পাঠিয়ে দিলাম।
কিছুক্ষন পর সাথে আরো দুইজন সিকিউরিটি গার্ড নিয়া প্রথম সিকিউরিটি এসে আমারে জ্বব্বর কইরা তিনখান স্যালুট মাইরা স্যার স্যার কইরা মুখে ফ্যানা উঠাইয়া ফালাইলো।
-স্যার আসেন.................. স্যার। এই সরো--সরো--- স্যার আসেন। যান স্যার রুমে যান।
জনি স্যার রুমে আছেন।
............................................
অফিসটা ভালোই। টুইন টাওয়ারে অফিস !! কিন্তু রুমের ভেতরে বসার জন্য কোন চেয়ার নাই। কোন সোফা নাই। মাঝখানে শুধুমাত্র কোমর সমান উচুঁ একটা ছোট্ট গোল টেবিল।
একটু অবাক হলাম। আরও বেশি অবাক হলাম দোস্তকে লুঙ্গি পড়া দেখে।
মোটামোটি একবাক্যে প্রায় ১৭টা প্রশ্ন করার পর দোস্ত আমার কইলো........
-দ্যাখ দোস্ত বাইরে নিশ্চয়ই অনেক মানুষের লাইন দেখছস।
-হ
-তাইলে কথা না বাড়াইয়া তাড়তাড়ি কইরা চইল্যা যা। তোর কোন টাকা পয়সা দেওন লাগবো না।
এই কইয়া বন্ধু আমার টেবিলডারে ধইরা আমার দিকে পাছাড দিয়া লুঙ্গিডারে উঠাইয়া দিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।