আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লোকসভায় আস্থাভোটে বিজয়ী মনমোহন : সরকার বাঁচলেও বাঁচেনি মান


(২য় কিস্তি) রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া : আস্থাভোটে বিজয়ের পর মনমোহন সিং বলেন, “সোনিয়াজি ও ইউপিএ’র সব নেতাকে ধন্যবাদ। আর যারা আমাদের জয়ের জন্য সক্রিয় ছিলেন, ধন্যবাদ তাঁদেরকেও। এই জয় সারা দুনিয়ায় এই বার্তা ছড়াবে যে, ভারত বিশ্বসভায় নিজের জায়গা চাইছে। ” তিনি আরও বলেন, তার সরকার এখন পরমাণু চুক্তি করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন। অপরদিকে সরকারের সাবেক মিত্র সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত মন্তব্য করেন, ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য চরম দুঃখজনক দিন আজ।

আজ পারমাণবিক চুক্তির জন্য সকল নৈতিকতা পরিহার করা হয়েছে। বিরোধীদল বিজেপির প্রেসিডেন্ট রাজনাথ সিং বলেন- ‘এই জয় দুর্নীতির। লোকসভায় অনুপস্থিত কিংবা সরকারের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য আমাদের সদস্যদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। আমাদের পার্লামেন্টে কখনও এমন লজ্জাকর ও কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেনি। ’ আর সরকার সমর্থক কাশ্মীরের আইনপ্রণেতা ওমর আব্দুল্লাহ বলেছেনÑ যদিও সরকারের জয় হয়েছে, তবে পার্লামেন্ট আজ হেরেছে।

ভারত ও বিশ্বে ভোটপরবর্তী প্রতিক্রিয়া : আস্থাভোটে মনমোহন সরকারের বিজয়ের পর ঘটে চলছে একের পর এক ঘটনা। বামপন্থীদের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন রাজনৈতিক ফ্রন্ট, বিভিন্ন দল বহিস্কার করেছে তাদের সংসদ সদস্যদের। এমনকি লোকসভার স্পিকার ১০ বারের নির্বাচিত এমপি সোমনাথকেও দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। ভারতের শেয়ার বাজারে দেখা দিয়েছে চাঙ্গাভাব। এদিকে আস্থাভোটে মনমোহন সরকার জিতে যাওয়ায় উজ্জীবিত মার্কিন সরকারও।

বিজয়ের পর মনমোহনকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে, ভারত সরকার এখন দ্রুত চুক্তিটি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাবে। ভারতের চির প্রতিদ্বন্দী পাকিস্তান সরকারও মনমোহনকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যারা বহিষ্কৃত হয়েছেন দল থেকে: আস্থাভোটে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের বিজয়ের পর বিরোধীদল বিজেপি বহিস্কার করেছে তাদের ৮ এমপিকে। এদের ৪ জন সরকারের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন, আর বাকি ৪ জন ছিলেন অনুপস্থিত। বহিস্কৃত বিজেপি সদস্যরা হলেন- ব্রিজভুষণ শরণ সিং, মঞ্জুনাথ, চন্দ্রভান সিং, এইচ টি স্যাঙ্গিয়ানা, মনোরমা, হরিভাই মাধব, বাবু ভাই কাটারা ও সোমভাই প্যাটেল।

অন্যদিকে তেলুগু দেশম পার্টি একই কারণে তাদের ২ এমপি ডি কে আদিকেশভুলু নাইডু ও এম জননাধামকে বহিস্কার করেছে। উল্লেখ্য পার্লামেন্টে দলটির ৫ জন সদস্য রয়েছেন। ঘটনার পর সিপিআই(এম) বহিস্কার করেছে তাদের প্রায় অর্ধশতাব্দীর সতীর্থ, ১০ বারের নির্বাচিত এমপি ও বর্তমান লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টপাধ্যায়কে। অবশ্য দল থেকে বহিস্কারের পরও স্পিকার পদে থাকতে সোমনাথের কোন অসুবিধা হবে না। বিরোধীদের নতুন ফ্রন্ট: অব্যাহত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক চুক্তি প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে ভারতের কমিউনিস্টরা ও অন্য বিরোধী দলের একটি নতুন ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে।

এ ফ্রন্টে রয়েছে সরকারের সাবেক মিত্র চার বামপন্থী দল এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী(?) মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজপার্টি (বিএসপি)। এগিয়ে যাচ্ছেন মনমোহন: এদিকে আস্থাভোটে বিজয়ের পর সরকারের অনিশ্চয়তা কেটে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনমোহন সরকার পরমাণু চুক্তিকে দ্রুত এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও উজ্জীবিত হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছ। সরকার টিকে যাওয়ায় ভারতের শেয়ার বাজার হয়েছে চাঙ্গা।

সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কারের পথও সুগম হয়েছে। তবে বিরোধী বিজেপি ও বামদলগুলো সারাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। সে অনুযায়ী কাজও শুরু করেছে তারা। (আগামী সংখ্যায় সমাপ‌্য)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.