মেডিকেলে পড়ার সময় থাকতাম চট্টগ্রামে। ওআর নিজাম রোডে ছাদের উপর , পাহাড়ে হেলান দেয়া দুরুমের একটি ফ্ল্যাটে। ১৯৯৮ সালের ঘটনা। আমার সাথে থাকতেন রাসেল নামে এক বছরের সিনিয়র একবড় ভাই। টিপিক্যাল ভালো ছেলে।
আমার কোনো একটি পরীক্ষা শেষ। জানুয়ারি মাস সম্ভবত। রাতে সবাই মিলে বল্লাম আড্ডা দিব- কিন্তু রাসেল ভাই জানালো- না সকালে তার ৭ টা সময় ওয়ার্ডে যেতে হবে- তিনি ঘুমিয়ে পড়বেন আর আমাদেরকেও বড়ভাইসুলভ উপদেশ দিয়ে গেলেন রাত না জেগে ঘুমাতে- আর চেঁচামেচি না করতে। তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন ১১ টা নাগাদ। আমাদের মাথায় চাপল দুষ্ট বুদ্ধি।
বাসার সকল ঘড়ি দেড় ঘন্টা আগিয়ে দিলাম। রাসেল ভায়ের হাতঘড়ি আর আ্যালার্ম ক্লকও দেড় ঘন্টা আগিয়ে দিলাম। তখন আমাদের কারো সেল ফোন ছিল না। আমরা ১টা নাগাদ শুয়ে পড়লাম। আসলে রাসেল ভাই ছিলেন খুবই ।
ালো মানুষ- সরল সোজা- তিনি যখন এলার্ম শুনে উঠলেন তখন তার ঘড়িতে দেখাচ্ছে ৬.৩০ আসলে সময় তখন ভোর ৫টা। তিনি উঠে বলতে লাগলেন আরে আজকে এত কুয়াশা কেন? আমরা বল্লাম ' বস, যান আমরা পড়ে যাবো- আরেকটু ঘুমাই'। তিনি পড়িমড়ি করে রওনা দিলেন মেডিকেলের দিকে।
আমরা তো মহা উত্তেজিত। কি হয় কি জানি।
খানিক পড় দেখি কে যেন আমাদেরকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে গেছে। দরজাটি এমনছিল যে বাইরে থেকে তালা দিলে ভেতর থেকে খোলা যায় না। বুঝলাম এটা রাসেল ভায়ের কাজ।
ঐদিন দুপুর তিনটার দিকে তিনি এসে আমাদের মুক্ত করলেন।
তেমন একটা রাগ তার মধ্যে দেখলাম না।
আমরা ভয়ে ভয়ে ছিলাম। কিন্তু তিনি স্বাভাবিক ভাবে আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন- ঘড়ির কাটাগুলো ঠিক করা হয়েছে কিনা?
ঐ রাসেলভাই আজ মেডিসিন ও পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ। প্রায়ই দেখা হয় আর আমি নিজের অজান্তেই ফিক করে হেসে ফেলি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।