http://bdhome24.ucoz.com
আমি আজ এটা বলবো না যে আমি জীবিত? বেঁচে আছি না মারা গেছি তা আমি নিজেও জানি না। আর অপরের কথা, কই আজ পর্যন্ত কেউ তো জানতেও চাইলো না।
প্রবাস আমার হয়তো আমার কাঙ্খিত চাওয়া ছিল না। কিন্তু শখ করে দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশে পা দেয়নি। বুক ফাটা কষ্টে যখন দেশ ত্যাগ করবো ঠিক তার পূর্ব মুহূর্ত্বে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।
কিভাবে ভাবছেন?
স্বপ্ন, আশা, ভালো বাসা কোনটাই আমার মনে আজ পর্যন্ত দাগ ফেলতে পারে নি আজ পর্যন্ত। আমাদের সমাজে প্রচলিত ধারণা আছে মেজো ছেলেরা সব সময় খারাপ হয়। আর আমি নিজে মনে করি মোজো হয়ে জন্মগ্রহণ করাটাই হয়তো মহা পাপ যার মাসুল আমি প্রত্যেকটা মুহুর্ত্ব দিয়ে এসেছি আজও আমাকে দিতে হচ্ছে কিন্তু কেন? এর উত্তর আজও আমাকে কেউ দিতে পারেনি। ব্লগে যত ব্লাগার আছে তাদের বেশির ভাগই শিক্ষিত,বড় বড় ওজনের সার্টিফিকেট ধারী। কিন্তু সেরকম আমার শিক্ষাগত যোগ্যতাও আমার নেই খুব সমান্য সৈনিকের ঘরের ছেলে আমি।
দেশ ছেড়েছিলাম ফ্যামেলীর উন্নতির জন্য। ফ্যামেলীর সমস্যার জন্য নিজের পড়ালেখা ছেড়ে ভবিষ্যৎটাকে জলাঞ্জলী দিয়ে যখন বিদেশ পাড়ি দেব ঠিক সেই মুহুর্ত্বে আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। কম্পিউটার অপারেটার এর ভিসার জায়গায় ভিসার প্রফেশন পেইন্টার। আধা শিক্ষিতি ছেলে হিসেবে আমার কিছু করা উচিত ছিল, কিন্তু আমি তো জানতাম কিছু করার আগেই আমার সব শেষ। হ্যাঁ আমি ভুল করেছিলাম, কি ভূল? আপন জনকে বিশ্বাস করার ভুল।
নিজের পিতার জ্ঞানের উপর বিশ্বাস কারাও আমার ভুল হয়েছিল। তাই দেশ কে সালাম জানিয়ে চলে এলাম দুবাই,ইউ,এ,ই। দেশে থেকে আমার ধরণা ছিল আমার সাথে খারাপ কিছু একটা ঘটে গেছে । আমার ধারণাটা মোটেই মিথ্যে হয় নি। তার প্রমান আসার পর থেকেই পেতে লেগেছিলাম।
বাঙ্গালী কোম্পানি। সব কিছুই আমার ধারণার বিপরীতে চলে গেল। আমি শুধু নিরব দর্শকের মতো চেয়ে চেয়ে দেখ কিভাবে আমার স্বপ্ন রঞ্জিত ভুবনটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আর আমি কিছু করতে পারছি না। আমি দুই লাখটাকা দিয়ে বিষ কিনেছি । সে বিষ না পারছি খেতে না পারছি ফেলে দিতে, খেয়ে নিলেও আমার বাবার দেওয়া দুইলাখটাকা লস, আবার ফেলে দিলেও দুইলাখ টাকা লস।
তাই বিষে বোঝা আমি নিরবে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। গরুর ঘাড়ে যখন জোয়াল দেওয়া হয় তখন গরু কিন্তু হাটতে চাই কারণ জোয়াল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে হেঁটে বেড়ানো অনেক আরাম দায়ক। সেভাবেই বিষের বোঝাটাকে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে। আজও আমার মনে আছে আমার বাবা দুবাই আসার এক সম্পাহ পর জিজ্ঞেস করেছিল,"কিরে কোম্পানি বাঙ্গালী না আরাবিয়ান"। আমি সেদিনই বুঝেছিলাম, আজ আমার এ অবস্থার জন্য আমার বাবার ভুমিকাও কত দূর?
আজ প্রবাস জীবনে কত কষ্ট আর যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে দিন পার করি ওপর ওয়ালাই ভালো জানে।
কিন্তু তারপরও যখন দেখলাম যে ফ্যামেলীর জন্য আমি নিজেকে জলাঞ্জলী দিলাম, তারা আমার থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আজ তাদের আর আমার মধ্যে একটা অবিশ্বাস কাজ করছে। তাই আজ এমূহুর্ত্বে আমি একটাই চিন্তা করি, বিদেশ এসে যে আমাকে এরকম পরিস্থির মুখোমুখি হতে হবে জানলে আমি কোন দিন বিদেশ আসার কথা স্বপ্নেও ভাবতাম না। আজ সবাই পর হয়ে গেছে। আর সাথে থেকে গোলো আগের মতো শূন্য হাত,খালি পকেট,আর ফাকা বিবকেস? আর আমার আপন জন কে বিশ্বাস করার মাসুল।
আমি সব কিছু দেখলাম বুঝলাম, আমার চোখের সামনে দিয়ে ঘটে গেল কিন্তু কিছু করতে পারলাম না। আমি নিজেকে মরতে দেখলাম আমার প্রবাসের মাটিতে নির্মম মৃত্যু হলো। তবু আমার মতো আর সব কেন করুণ মৃত্যুকে বরণ করতে এই প্রবাসে পা দিচ্ছে........................।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।