সময় ২০০৪ সাল। আসার বন্ধু সেতু অর্থনীতি থেকে পাস করে বের হবে হবে করছে। পরীক্ষা শেষ একটি মাত্র ভাইভা বাকি। বিশাল অবসর আর এই অবসরে ফার্স্ট ইয়ারের এক মেয়েকে ভালোবেসে ফেললো সে। মেয়েটিও সেতুকে জীবনের থেকে বেশী ভালোবাসে।
১৩ই মার্চ ২০০৪ এর কথা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ ই কোনদিন ভূলবেনা। সেদিন কটকা সমূদ্র সৈকতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষা সফরে গিয়ে বুয়েটের দুইজন এবয় খুবির ৯ জন সহ মোট ১১ জনের সলিল সমাধী হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এড়াতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং কমিটি রায় দেয় দূর্ঘটনার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরাই দায়ী এবং তাদের সুপারিশ ছিল
১। দোষী ছাত্র ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিঃস্কার করা (অবশ্য সেখানে যাদের নাম উল্লেখ করা হয় তাদের ৭ জনই নিহত হয় ঐ দূর্ঘটনায়)।
২।
ভবিষ্যতে কোন শিক্ষা সফরের অনুমতি প্রদান না করা সহ আরও অনেক কিছু।
পত্রিকায় এসব খবর পড়ে সাধারণ ছাত্র -ছাত্রীরা ফেটে পড়ে ক্ষোভে, সেতু ও ছিল তাদের একজন।
জুন মাসে তৎকালিন ভিসি আঃ কাদের ভূইয়ার নৈতিক স্খলনের প্রমান মেলে এবং ইউজিসি তদন্ত কমিটি তদন্তে যায় খুবিতে, সেখানে সেতু সহ অনেক ছাত্র-ছাত্রী স্বাক্ষ্য প্রদান করে যার মধ্যে সেতু বিভিন্ন প্রমান সহ কাদের ভূইয়ার দূর্নীতি ও ছাত্রি নীপিড়নের বিষয়টি তুলে ধরে। সেতুর ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা করতে পারছিনা কারন ওকে কথা দিয়েছি ওর জীবন নিয়ে কখনও লিখবো না তাই।
আর এরই ফলশ্রুতিতে ওদের উপর নেমে আসে অত্যাচারের খড়গ।
জুলাই এর চার তারিখ সেতুর বিভাগের কিছু ছাত্র যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি প্রদান করতে, ভিসি সাহেব অফিসে না থেকে সময় দিয়েও ঐ সময় ক্যাম্পাস্থ বাসভবনে ছিলেন এবং ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের দপ্তরের একজন সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের পরামর্শে ছাত্ররা ভিসির বাসভবনে যায় স্মারকলিপি দিতে। সেখানে আগে থেকে সাজিয়ে রাখা ভিসির দালালেরা ভাংচুর করে দায় চাপায় ছাত্রদের উপর এবং সন্ধ্যা বেলায় সেতুসহ মোট পনের জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিঃস্কার করা হয়।
আর ভিসি পক্ষের শিক্ষকেরা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে দোষী ছাত্রদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিস্ট কালের ক্লাস বর্জনের ঘোষনা দেয়। কিন্তু সেদিন কোন ছাত্র ভাংচুর করেনি করেছিল কাদের ভূইয়ার পা-চাটা কিছূ কর্মকর্তা।
এরপর সেতু হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের করে ঘুরতে থাকে কোর্টের বারান্দায় বারান্দায়, প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা খরচের পর ২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল মহামন্য হাইকোর্ট সেতুর বিরুদ্ধে নেয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে অবৈধ বলে রায় দেয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে ছাত্র হিসাবে তার সব অধিকার ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু ততদিনে কেটে গেছে একটি বছর। আর সেতু রায় পাওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাকিদের মাফ করে দেয়। আর শিক্শা মন্ত্রনালয় ভিসি কাদের ভূইয়াকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
{বন্ধু সেতু মাফ করিস যে টুকু লিখেছি তার জন্য}
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।