গেরিলা কথাবার্তা
(রিপোস্ট জরুরী মনে হল, কারণ, হান্নান সরকার-কৃষ্ণপদ দাস-রেজাউল-জয়নাল.. এই তালিকা দীর্ঘতর হচ্ছে। আর জুজু বিষয়ক নতুন তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে সবখানে। কিছু লিঙ্ক এবং ছবি যোগ করলাম, গত কয়েকদিন ধরে খুঁজতে খুজতে পাওয়া)
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বি এস এফ'র গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বি ডি আর এর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এ দুজন হচ্ছেন: বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কীর্তনীয়া গ্রামের হাবিলদার মো. আব্দুল হান্নান সরকার (বয়স: ৫৩) এবং মাগুড়ার শালিখা উপজেলার খোলাবাড়ী গ্রামের কৃষ্ণপদ দাশ (বয়স: ৩৯)। চাপাইনবাব গঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর সীমান্তের পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
আমরা বি ডি আরের এই দুই বীর সেনানীর আত্মার শান্তি কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের জমিনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই দুই যোদ্ধার আত্মত্যাগ জাতি কখনো ভুলে যাবে না।
পত্রিকায় পড়েছি, বিডিআরের এই দুই সদস্যর গ্রামে এখন কান্নার রোল। যদিও এর মধ্যে শহীদ মো. আব্দুল হান্নান সরকারের পুত্র আর. জি. কিবরিয়া তাঁর পিতার আত্মত্যাগের রাজনৈতিক দার্শনিক তাৎপর্য ভুলে যান নি।
তিনি বলেছেন, আমি গর্বিত, কারণ আমার বাবা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন।
আর শহীদ মো. আব্দুল হান্নান সরকারের বড় আশা ছিল- চাকুরী থেকে অবসর নেয়ার পর পবিত্র মক্কা জেয়ারতে যাবেন। Click This Link
শহীদপুত্র আর. জি. কিবরিয়ার মত আমরাও বি ডি আর এর এই দুই সদস্যের আত্মত্যাগের রাজনৈতিক-দার্শনিক তাৎপর্য বুঝতে চাই। এই বোঝাপড়া আরো নির্মোহ হয় যদি আমরা একে সাম্প্রতিক আন্ত / র্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরিসরে স্থাপন করি।
সেনাবাহিনী প্রধান মঈন উ আহমদের ভারত সফর নিয়ে বলি। প্রতিবেশী দেশে আমাদের সেনাপ্রধান শুভেচ্ছা সফরে যাবেন- এতে কোন আপত্তি নেই।
কিন্তু সফরের স্থান বাছাইয়ের মধ্যে তাঁর মনোভাবের সাংস্কৃতিক অভিমুখটি বুঝা যায়। আমাদের সেনাপ্রধান রবি ঠাকুরের শান্তি নিকেতন পরিদর্শনে গেছিলেন, কাঁধে ঐ বিশেষ বিদ্যা নিকেতনের ওর্না ঝোলানো ছবিটাও আমরা পত্রিকায় দেখেছি। Click This Link
তাঁর রবীন্দ্রনাথ পরিদর্শনে আমাদের কোন আপত্তি নেই: বিশেষ করে যে মানবিক রবীন্দ্রনাথের সাথে আমাদের আশৈশব আত্মীয়তা। কিন্তু, মঈন উ আহমদ কি আসলেই প্রকৃত রবীন্দ্রনাথে পৌঁছতে পেরেছিলেন।
ভারত তার পররাষ্ট্রনীতির প্রয়োজন পূরণার্থে এক নতুন রবীন্দ্রনাথকে নির্মাণ করেছে।
এই রবীন্দ্রনাথ গোঁড়া হিন্দু, ব্রাহ্মণ এবং প্রবলভাবে জাতীয়তাবাদী ''ইণ্ডিয়ান''। ভারতীয় পররাস্ট্র দপ্তরের এই ''রবীন্দ্রনাথ'' বৈচিত্রে বিশ্বাস করে না, আধিপত্যে সহায়ক। এই রবীন্দ্রনাথ পরিদর্শনে গেলে আপনার কাঁধে গোলামীর ওর্না ঝুলবেই।
আমাদের সেনাপ্রধান বোধ হয় শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রনাথকে আদি রবীন্দ্রনাথ ঠাউরেছেন। ভেবেছেন, তার সফরের পর ভারত গঙ্গায় পানি বইয়ে দেবে, বিএসএফ গুলি করে আর পাখির মত মানুষ মারবে না, বাণিজ্যে সমতা আসবে।
সেনাপ্রধানের ভাবনা যে ভুল এখন আমরা তা বুঝতে পেরেছি। আমরা বুঝি, সমঝোতা ও সম আত্মীয়তার নামে গোলামীর ওর্না পরলেই দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধান হবে না। জাতি হিশেবে আত্মমর্যাদার সাথে টিকে থাকাটাই হচ্ছে আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
এবং আমরা যাতে ভুলে না যাই, শহীদ মো. আব্দুল হান্নান সরকার মক্কা জেয়ারতে যেতে চেয়েছিলেন, শান্তি নিকেতন নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।