পলিথিন পরিবেশের জন্য মারাত্বক হুমকি সরুপ। পলিথিনের এই ভূমিকা সম্পর্কে জেনেও আমরা নির্বিকার। আমরা সামান্য সুবিধার জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর পলিথিন অহরহ ব্যাবহার করছি। বাজারে গেলে দেখা যায় প্রকাশ্যেই পলিথিন ব্যাগ নিয়ন্ত্রনহীনভাবে বিপুলভাবে ব্যাবহৃত হচ্ছে । প্রশাসন যেন দেখেও দেখছে না।
অথচ রপ্তানী ছাড়া সকল ক্ষেত্রে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ।
বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আশির দশকে বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে পলিথিনের ব্যাবহার শুরু হয়। পলিথিন একটি রাসায়নিক পদার্থ। রসায়নের ভাষায় একে পলিথাইনিলও বলা হয়। এতে ইথাইনিলের পলিমারগুলো একটার সংগে অন্যটার সংযোগ করে পাতলা শিটের মত তৈরী করা হয়।
এটা সহজে অক্সাডাইজ হয় না অর্থাৎ ভেঙ্গে মিথেন বা কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিনত হয় না। এই জন্যই পলিথিন পচেঁ না। আর সে কারনেই একবার ব্যাবহারের পর সম্পুর্ন অপচনশীল স্হায়ী জড়বস্তু হিসেবে পরে থাকে। আমাদের দেশে পলিথিন ব্যাগ তৈরিতে ব্যাবহৃত হয় চতুর্থ বা পঞ্চম বারের রিসাইকলড। প্লাষ্টিক ছাই অথবা বিদেশ থেকে আসা সাগু দানার মত গ্রামিউল নামক রাসায়নিক পদার্থ অত্যান্ত বিষাক্ত প্রোপাইলিনের সাথে পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বনের ৩/৪ টি মনিকুলেন সংমিশ্রনে তৈরি পলিথিন।
মাটি, পানি, বায়ু এই তিন স্তরেই এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। অপচনশীল বলে মাটির উর্বরা শক্তি মারাত্বকভাবে বিনষ্ট করে। নালা-নর্দমা থেকে শুরু করে নদ-নদী পর্যন্ত সকল স্তরেই পানির স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় পলিথিন দ্বারা। একে পুড়িয়ে ফেললেও যে ধোয়া নির্গত হয় তাতে বায়ু দূষিত হয় ভিষনভাবে। তাছাড়া খাদ্য সামগ্রীতে পলিথিন ব্যাগ ব্যাবহার করলে ক্যান্সার চর্মরোগ সহ নানা স্বাস্হ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
একটা হিসেবে দেখা যায় প্রতিদিন শুধু ঢাকা শহরেই গড়ে এক কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যাবহৃত হয়। যার মধ্যে ৯০ লক্ষ ব্যাগই নিক্ষিপ্ত হয় প্রতিদিন।
সরকার যখন প্রথমে ঢাকা ও পরে সারাদেশে পলিথিন ব্যাগ ব্যাবহার নিষিদ্ধ করে তখন জনগনের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু ইদানিং বাজারগুলোতে গেলে দেখা যায় আবার পলিথিন ব্যাগ ব্যাবহার হচ্ছে দেদারসে। যেন দেখার কেউ নেই।
প্রশাসন দেখেও কিছু দেখছে না আর আমরাও জেনেশুনে একটা বিষাক্ত জিনিষ অনায়াসে ব্যাবহার করছি।
আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। পরিবেশকে সুস্হ সুন্দর রাখতে কিঞ্চিৎ ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। তা না হলে আমরা অচিরেই বিশাল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে যাবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।