রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অপারেটর টেলিটক বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে দেশে থ্রিজি সেবা দিচ্ছে।
টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রোববার রাজধানীর হোটেল রূপসী বাংলায় প্রথমবারের মতো থ্রিজি তরঙ্গের নিলাম হয়, যাতে প্রতি মেগাহার্টজ ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দরে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়।
প্রতি মেগাহার্টজ ২ কোটি ডলার ভিত্তিমূল্যের ওপরে একবার ডাকেই শেষ হয়ে যায় দুই ধাপের এই নিলাম প্রক্রিয়া।
প্রথম ধাপে দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণ ফোন কিনেছে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ, যাতে অন্য কোনো অপারেটর অংশ নেয়নি। আর দ্বিতীয় ধাপে একইভাবে পাঁচ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ কিনেছে বাকি তিন অপারেটর।
কোনো অপারেটর আগ্রহী না হওয়ায় তিনটি স্লটে ১৫ মেগাহার্টজ, অর্থাৎ মোট তরঙ্গের প্রায় ৩৮ শতাংশই থেকে যায় অবিক্রিত।
নিলাম শেষে বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অবিক্রিত তরঙ্গ রয়েছে এটি বড় কথা নয়, ২৫ মেগাহার্টজ বিক্রি হয়েছে এটিই বড় কথা।
তিনি জানান, চার বেসরকারি অপারেটরকে থ্রিজি লাইসেন্স বিক্রি করে সরকারের মোট আয় হবে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। এছাড়া নিলামে ওঠা দর অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করে টেলিটকও ১০ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গের সেবা দেবে।
চেয়ারম্যান জানান, নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রথম কিস্তিতে মোট টাকার ৬০ শতাংশ জমা দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে।
বাকি টাকা ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। টাকা জমা দেয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তারা লাইসেন্স পাবে।
৪ কোটি ৪৬ লাখ গ্রাহকের গ্রামীণ ফোন কবে নাগাদ থ্রিজি সেবা চালু করতে পারবে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিবেক সুদ সাংবাদিকদের বলেন “নিলামে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ পেয়ে আমরা খুশি। গ্রামীণফোন যত দ্রুত সম্ভব গ্রাহকদের জন্য এই সেবা চালু করবে। ”
বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াদ সিতারাও ‘শিগগিরই’ থ্রিজি সেবা চালু করার আশার কথা বলেন।
“বাংলাদেশের জন্য আজ একটি স্মরণীয় দিন। থ্রিজি লাইসেন্স হাতে পেলেই পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। ”
৫ মেগাগার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়ে ২ কোটি ৭৩ লাখ গ্রাহকের বাংলালিংক মানসম্মত থ্রিজি সেবা দিতে পারবে কিনা জানতে চাইলে সিতারা বলেন, গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় রেখেই এ তরঙ্গ নেয়া হয়েছে।
“বাংলালিংক গ্রাহকদের অবশ্যই মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা হবে। ”
অবশ্য বাংলালিংক মানসম্মত সেবা দিতে পারবে কি না তা নিয়ে নিলাম শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই পরিমাণ তরঙ্গে ‘কোয়ালিটি সার্ভিস’ দিতে পারবে কিনা- তা বাংলালিংক কর্মকর্তারাই বলতে পারবেন।
এয়ারটেলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা বিশ্বমানের থ্রিজি সেবা দিতে ‘অঙ্গীকারাবদ্ধ’।
“স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে নিলাম অনুষ্ঠানের জন্য আমরা বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বে আমাদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে বাংলাদেশেও মানসম্মত থ্রিজি সেবা দিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ”
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অপর অপারেটর রবি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “ব্যবসা লাভজনক হবে কি না- তা ভালভাবে খতিয়ে দেখেই আমাদের নিলামে অংশ নিতে হয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রুপের মূল প্রতিষ্ঠান আজিয়াটার আগের অভিজ্ঞতাও আমাদের কাজে লেগেছে। শিগগিরই থ্রিজি সেবা চালু করে গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণ করার বিষয়ে রবি কর্তৃপক্ষ আত্মবিশ্বাসী। ”
নিলামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গত ২৯ অগাস্ট বিড আর্নেস্ট মানি জমা দেয় বেসরকারি এই চার মোবাইল ফোন অপারেটর। থ্রিজি নীতিমালা অনুসারে ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাচ্ছে তারা।
নিলামের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেও দেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল ‘আর্থিক সমস্যার’ কারণে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে নিলাম থেকে ছিটকে পড়ে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।