পৃথিবী মানুষের পূর্বে জ্বীনদের দখলে ছিল। অনেকে তাই বলে। আসলে এই জ্বীন কি? ধর্মে জ্বীনদের ব্যাপারে কি বলা হয়েছে? এসব নিয়েই আমার পোষ্ট।
আল্লাহ যখন মাটি দিয়ে মানুষ তৈরী করলেন। অর্থাৎ আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন তখন আগুনের তৈরী জ্বীনদের সরদার "শয়তান", আদম (আঃ) এর শ্রেষ্ঠত্ত মানতে রাজি হলো না।
এ ব্যাপারে তার সরাসরি বক্তব্য ছিল,
তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ, আর আদমকে সৃষ্টি করেছ মাটি দিয়ে।
আসলে জ্বীন জাতি তৈরী আগুনের শিখা দিয়ে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, সেই আগুনের ধরন কেমন? এর উত্তর এভাবে দেয়া যেতে পারে, আমরা আদমের বংশধর। সুতরাং আমরাও মাটির তৈরী। কিন্তু আমাদের রক্ত-মাংসের দেহে মাটির সন্ধান কি পাওয়া যায়? তাই বলা যেতে পারে, আমরা তৈরী এক বিশেষ ধরনের মাটি দিয়ে।
সৃষ্টিকর্তা প্রথমে আমাদের গঠনটি তৈরী করেন সেই বিশেষ ধরনের মাটি দিয়ে। তারপর জীবন দান করার পর দেহে মাটির কোনো অস্তিত্ত থাকে না। ঠিক তেমনি, জ্বীনদেরও সৃষ্টি করা হয়েছে এক বিশেষ ধরনের আগুনের স্ফুলিঙ্গ দিয়ে। যার কোন ধুয়া নেই।
এখন আবার প্রশ্ন আসতে পারে, যদি আগুনেরই হয়ে থাকে, তাহলে আমরা দেখতে পাই না কেনো? এই উত্তর হচ্ছে, ঐ যে বললাম, বিশেষ ধরনের আগুন।
তাই আমাদের চোখে ধরা দেয় না জ্বীনদের অস্তিত্ত। তার মানে এই নয় যে জ্বীনরা আমাদেরও দেখতে পায় না। তারা মানুষের সর্বধরনের গতিবিধি দেখতে পায়।
আবার জ্বীনদের সত্তা এমনভাবে গঠিত যে, তারা যে কোনো সময়ে, যে কোনো জায়গায় উপস্থিত হতে পারে। তবে এখানে সবচাইতে মজার ব্যাপারটি হচ্ছে জ্বীনদেরও নিজস্ব একটি গোষ্ঠী আছে।
তারাও বংশ বিস্তারে সক্ষম। ধর্মে বলা হয়ে থাকে, পাখিদের যেমন একটি নিজস্ব প্রজাতি আছে, মানুষেরও যেমন আছে, ঠিক তেমনি জ্বীনদেরও আছে। তাদেরও পাপ-পূণ্য আছে। তাদেরও জান্নাত-জাহান্নাম আছে। ইরশাদ আছে, আল্লাহ বলেছেন,
আমি জ্বীন ও মানুষকে কেবলমাত্র এই উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি যে, তারা উদ্যোগি হয়ে কেবলমাত্র আমারই দাসত্ব করবে।
আমি তাদের নিকট থেকে কোন রিয্ক পাওয়ার আশা করি না, আশা করি না যে তারা আমাকে খাওয়াবে।
অনেকে বলে, জ্বীনরা নাকি মানুষের ভাষাও বুঝতে পারে। তবে তারা আরবি ভাষা নাকি একটু ভালো বোঝে। আবার অনেকে বলে, যে জ্বীন মানুষের যে এলাকায় বসবাস করবে, সেই এলাকার লোকদের ভাষা তারা বুঝবে।
অর্থাৎ, মানুষকেই শুধু আল্লাহ পরীক্ষা করার জন্য এ পৃথিবীতে পাঠায়নি, মানুষের সঙ্গী হিসেবে আছে জ্বীন।
হাশরের ময়দানে জ্বীন ও মানব জাতিকে একই সাথে জীবিত করা হবে। ধর্মে স্পষ্ট বলা হয়েছে, জ্বীন মানুষের মতই স্বতন্ত্র এক জীবন্ত সত্তা। জ্বিনকে দেখা যায় না দেখে আমরা বিজ্ঞান মনষ্ক মানুষেরা বিশ্বাস করতে চাই না এ ধরনের অদৃশ্য অস্তিত্ত।
যতযাই বলি না কেনো, এ মহা-সুন্দর ভুবন আপনা-আপনি তৈরী হয়নি। তার একজন স্রষ্টাতো অবশ্যই আছে।
আর তা এক রহস্য। হয়তো সেই রহস্য মৃত্যুর পর প্রতিটি মানুষের কাছে উন্মোচিত হবে। আর যদি, মৃত্যুর পর কোনো জগত না থাকে, তবে মানুষের কাছে সৃষ্টি রহস্য, রহস্যই থেকে যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।