আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গতকাল @ বসুন্ধরা সিটি

আল বিদা

গতকাল ১৩ জুন আমার জন্মদিন ছিল। এরপর আবার ছুটির দিন। কিছু আত্নীয়ও দুপুরে আসার কথা। ঘুম থেকে উঠেই আব্বা বাজারে গেল আর আম্মা আর আমার বৌ লীমা রান্নাঘরে। স্বাভাবিকভাবেই দিনটি বাসায় কাটানোর ইচ্ছা।

সকাল ১০ টায় লীমার অনুমতি নিয়ে (কত অনুগত!) চুপিচুপি গেলাম বসুন্ধরা সিটি। বসুন্ধরার সামনে বাস থেকে নেমে দেখলাম দুজন সিড়িতে বসে আছেন। একজন আনুমানিক ৩৫ বছর ধরে দেহটাকে বহন করা মিলটন অন্যজন কাচাপাকা চুল গোফের এক সুপুরুষ (পরে জেনেছি তিনি ক্যামেরাম্যান)। দুজনই পেপার পড়ছেন। আগেই বলে রাখি আমি শাশ্বতর জন্য করা এই মহান উদ্যোগে সামিল হতে যাইনি।

গিয়েছিলাম যাদের সাথে এখানে প্রতিদিন এতটা সময় কাটাই তাদের দূর থেকে একটু দেখতে। গিয়েই বুঝলাম এখনও লোকজন আসেনি। অন্তত যাদের কাছে টি শার্ট আর ব্যানার তারা আসেনি। আমি ঘুরতে লাগলাম বসুন্ধরা মার্কেটে আর দেখছিলাম মানুষের এক্সপ্রেশন। বসুন্ধরা সিটি এখন ওয়ারিদময়।

২০% ডিসকাউন্টের ইরানী দোকান ঘুরলাম। মেয়েদের অন্তর্বাসের একটি দোকানে দেখলাম একটি মেয়ে সব সামলাচ্ছে। আমি নিজেকে দুষ্টামী থেকে সংযত করলাম। আরেক মেয়েকে দেখলাম বোরকা পড়ে তার বয়ফ্রেন্ডের জন্য একগোছা গোলাপ নিয়ে ঢুকতে। তার বয়ফ্রেন্ড তাকে কিস করল।

আমার চরিত্র বদ তবুও সদরঘাটে দাড়িয়ে চুমাচুমি করার কথা ভাবতে পারি না। প্রায় ১১.৩০ টায় আরও কয়েকজন ব্লগার এল। তারা কেন জানি ছুটাছুটি করছিল। একবার মার্কেটের ভিতরে, একবার বাইরে। ২ জন মেয়েকে দেখে ভাবলাম তারা কোন ব্লগার।

মৌসুম জানা মুনিয়া শাহানা সারিয়া - নাহ্ কাওর সাথে মিলে না (তাদের কাউকে চিনি না)। আমি অন্য অনেককেই চিনলাম না। মনে হয় ১২.৩০ টার দিকে তারা গেটে দাড়ালেন। এবার আমার পালা। দুই গেটে দুই দল।

একদিকে ঐ ২ মেয়েসহ ক্যামেরাম্যান, অন্যগেটে মিলটন ও অন্যরা। কেউ গেট দিয়ে ঢুকার সময় তারা বিনীতভাবে তাদের উদ্দেশ্য বলছেন। এমন সময় ঠিক সিনেমার নায়িকাদের মত ২ সখী নিয়ে এক সুন্দরী আসলেন। লোকে আমাকে কখনও কখনও আমার চরিত্র নিয়ে কত কি বলেছে। কিন্তু ঐ ৩ মেয়েকে দেখে মিলটন ২৮ দাত বের করে যে হাসি দিল তা দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।

একটু পরেই তাকিয়ে দেখি মেয়েটাও নাই মিলটনও নাই। আমি ক্যামেরাম্যানের গেট দিয়ে ঢুকলাম। কতজনকে কত বিনয়ের সাথে তিনি সাহায্যের কথা বলছেন। আর আমাকে পাত্তাই দিলেন না! আমি ভিতরে ঢুকে লিয়া মনির সাহায্যের বাক্সে রাগ হয়ে ২০ টাকা ফেললাম। আবার বের হয়ে ট্রাই করলাম অন্য গেটে।

একই ঘটনা!! রেগে আবারও ঢুকলাম ক্যামেরাম্যানের গেট দিয়ে। এবার পাত্তা পেলাম। মজা করার জন্য শ্বাশতর ডিটেইল শুনলাম। তাকে বললাম আপনারা কি রাজশাহী থেকে এসেছেন? তিনি ঐ ২ মেয়েকে দেখিয়ে বললেন, ওরা এসেছে। তিনি আরও বললেন তারা সামহোয়ার ইন............।

আমি বললাম - সামহোয়ার ইন, এইটা আবার কি? উনি বললেন যে এইটা একটা বাংলা ব্লগিং সাইট। আমি ভয়ে আর জিজ্ঞেস করি নাই - ব্লগিং কি। আমি একটা ৫০০/- টাকার নোট বের করলাম। তিনি বললেন পুরোটা রেখে দিব? সাহস কত!!! আমি কিছু রাখতে বলে তার নাম জানতে চাইলাম। তিনি লম্বা একটি নামের পর বললেন ডাকনাম রনজু।

তার কোমল হাতে হাত মিলিয়ে 'গুড লাক' বলে চলে আসলাম। কিন্তু তিনি আমাকে তো টি-শার্ট দিলেন না। যে টাকা আমি দিলাম তাতে একটা টি-শার্ট পেতে পারি। কিন্তু কিছুই পেলাম না। বঙ্গবন্ধুর মত আমিও জানতে চাই - 'আমার টি-শার্ট কই'? ব্লগার বন্ধুরা, আমি আপনাদের মত এত মহৎ হৃদয় না যে শ্বাশতর জন্য কিছু করব।

আমি নিতান্তই আপনাদের একটু দেখতে গিয়েছিলাম। আপনাদের শুভেচ্ছা। স্যালুট করি আপনাদের মানবতা। আশা করি এই লেখার কারনে রনজু ভাই বা মিলটন ভাই রাগ করবেন না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।