জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
আমরা জানি, বাংলা সনের প্রবর্তক সম্রাট আকবর। হিজরি সন মোতাবেক ফসলের খাজনা তুলতে গেলে দেখা যেত, মাঠে ফসল রয়ে গেছে, অথচ খাজনা দেয়ার সময় চলে এসেছে। ফলে খাজনা আদায় করা সম্ভব হত না। এ সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য সম্রাট আকবর একটি সৌর সন প্রবর্তন করেন। সেই সৌর সনটিই বাংলা সন।
সৌর সন প্রর্বতনের ফলে খাজনা তোলার আর কোন সমস্যা রইল না।
আমাদের দেশে বর্তমানে জুন মাসে বাজেট ঘোষণা করা হয়। জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত আমাদের অর্থনৈতিক বছর। আমাদের দেশের ঋতু চক্র অনুযায়ী জুনের মধ্যভাগ থেকে আগস্টের মধ্যভাগ পর্যন্ত বর্ষাকাল। তবে বর্ষাকাল বাস্তবে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
বর্ষাকালে কোন উন্নয়নমূলক কাজ করা যায় না। বরং বন্যায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয় সরকারকে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক বছরের শেষ দিকে আবার বর্ষার পদধ্বনি।
আমাদের দেশের লোক সামান্য অলস। আমরা কাজ ফেলে রাখতে পছন্দ করি।
এই অভ্যাসের বশে উন্নয়নমূলক কাজগুলো অর্থনৈতিক বছরের শেষে গিয়ে পড়ে। দেখা যায়, বর্ষাকালে চলে রাস্তা খোড়াখুড়ি, নর্দমা মেরামত ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজ। ফলে যেমন হয় জনদুর্ভোগ তেমনি কাজও মানসম্মত হয় না। কাজে দীর্ঘ সময় নষ্ট হয়।
আগেকার দিনে শরৎকালে ভারতীয় রাজারা দেশজয়ে বের হতেন।
সুলতান মাহমুদ মধ্য যুগে ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেন। প্রতিটি আক্রমণই তিনি পরিচালনা করেন শরৎ কালে।
আমার মূল কথা হল, আমাদের দেশের উন্নয়নকাজের সাথে আমাদের আবহাওয়াকে বিবেচনা করতে হবে। উন্নয়নমূলক কাজগুলো বর্ষাকালে না করে শুরু করতে হবে শরৎকালে। আর বাংলা সন যেহেতু আমাদের আবহাওয়া নির্ভর।
তাই এসব কাজের জন্য বিজাতীয় খ্রিষ্টাব্দ অনুসরণ না করে বাংলা সন অনুসরণ করলে বেশি ভালো ফলাফল পাওযা যাবে।
আমাদের অর্থনৈতিক বছর বৈশাখে শুরু ও চৈত্রে শেষ করলে বা আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে অর্থনৈতিক বছর শুরু ও শেষ করলে আমাদের উন্নয়নে আরও গতি লাভ করা সম্ভব।
আমাদের অলস স্বভাবের সাথে মিল রেখে অর্থনৈতিক বছর শেষ করা উচিত শীতকালে বা বসন্তকালে। কেননা তখন আবহাওয়া ভালো থাকে। ফলে সারা বছরে জমিয়ে রাখা কাজগুলো ভালো আবহাওয়ার কারণে দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে।
ফলে প্রতি বছরের কাজ প্রতি বছর শেষ হবে।
আমাদের দেশটা গড়ে তুলতে হবে আমাদেরই। তার জন্য যা করণীয় তা আমাদেরই করতে হবে। অন্য কেউ আমাদের হয়ে সে সব কাজ করে দেবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।