আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাল্পনিক বাজেটে নির্বাচনী হাওয়া

ভালবাসি নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার ২০১৩-১৪ অথৃ বছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন। একই সাথে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে ব্যবসায়ীদেরকেও সন্তুষ্ট রাখার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী মুহিত এবারো ডিজিটাল পদ্ধতিতে (পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে) বাজেট উপস্থাপন করছেন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনতুষ্টির সব ব্যবস্থাই রাখার চেষ্টা আছে দুই লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার এই বাজেটে। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা; যার ৬৫ হাজার ৮৭০ কোটি যাবে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)।

জনতুষ্টির জন্য নতুন বাজেটে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতের জন্যও উদ্যোগের কথা আছে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সংসদ অধিবেশনে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এর ঘণ্টাখানেক আগে জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিমন্ত্রিসভা এই বাজেট অনুমোদন করে। মহাজোট সরকারের শেষ বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দল সংসদে থাকলেও বাজেট উপস্থাপনের দিন যে তারা আসবে না, বুধবারই তা জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।

এই সরকারের আগের চার বাজেট উপস্থাপনের দিনও সংসদে অনুপস্থিত ছিল বিএনপি। বাজেটের আকাড় দুই লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার এই বাজেটে এবার অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের বড় একটা অংশই যাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং পেনশন বাবদ। এর সঙ্গে বিদেশি ঋণের পুঞ্জীভূত সুদ মেটানোর দায়ও রয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাজেটে আশা করছেন, নতুন অর্থবছরে রাজস্ব বাবাদে সরকার পাবে এক লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।

যার মধ্যে এক লাখ ৩৬ হাজার ৯০ কোটি টাকার যোগান দেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর, আমদানি শুল্ক এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) থেকে আদায় হবে এই অর্থ। বাকি ৫ হাজার ১২৯ কোটি টাকা এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে এবং ২৬ হাজার ২৪০ কোটি টাকা কর বর্হিভূত আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন মুহিত । এই হিসাবে আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি থাকছে ৫৫ হাজার ৩২ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪.৬ শতাংশ। তবে অনুদানসহ হিসাব করলে ঘাটতি দাঁড়াবে ৪৮ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা, জিডিপির ৪ শতাংশ।

এই ঘাটতি মেটানো হবে বিদেশি ঋণ, সঞ্চয়পত্র বিক্রি এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ঋণ থেকে। বাজেটে বৈদেশিক ঋণের প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৩ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ৩৩ হাজার ৯৬৪ কোটির মধ্যে ব্যাংক থেকে ধার করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২৫ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা এবং জাতয়ি সঞ্চয়পত্র থেকে ৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা আসবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। মহাজোট সরকারের শেষ বাজেট দেয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে এর আগে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমার শেষ বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হাই গ্রোথ অ্যান্ড হাই ইনভেস্টমেন্ট।

অর্থ্যাৎ বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনই এবারের বাজেটের দর্শন। ” মহাজোট সরকারের প্রথম বাজেটের আকার ছিলো ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। শেষ বাজেটে তা বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে। করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ২০ হাজার টাকা নির্বাচনের বছর জনগণের ওপর চাপ কমিয়ে করজালের বিস্তৃতি বাড়াতে করমুক্ত আয় সীমা শিথিল করার পাশাপাশি ন্যূনতম কর কাঠামোয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নতুন প্রস্তাবিত বাজেট করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা করার কথা বলেছন।

অর্থ্যাৎ যাদের বার্ষিক আয় দুই লাখ ২০ হাজার টাকার কম, তাদের আয়কর দিতে হবে না। চলতি বছরের বাজেটে ব্যাক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ছিল দুই লাখ টাকা। এছাড়া নারী করদাতা এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের করমুক্ত আয় দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রতিবন্ধী করদাতাদের করমুক্ত সীমা দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট প্রস্তাবে বলেন, “মূল্যষ্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রান্তিক করদাতাদের করভার লাঘব করা ইত্যাদি বিবেচনায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।

” বদলানো হচ্ছে ন্যূনতম করের কাঠামোও কর সনাক্তকারী নম্বরধারীদের (টিআইএন) মধ্যে যারা সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা, তাদের আয় বছরে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা না হলেও আগের মতোই ৩ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। আর জেলা শহরভিত্তিক পৌর এলাকার করদাতাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম আয়কর হবে ২ হাজার টাকা। এছাড়া জেলা সদরের বাইরে অন্যান্য এলাকা এবং গ্রামীণ এলাকার করদাতাদের ন্যূনতম আয়কর ১ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুহিত আশা করছেন, ন্যূনতম আয়করের এই কাঠামো গ্রাম অঞ্চলের করদাতাদের আয়কর দিতে উৎসাহিত করবে এবং করজাল সম্প্রসারণে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। মূল্যস্ফীতি মহাজোট সরকারের শেষ বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে এবং জনজীবনে ফিরে এসেছে স্বস্তি। ” চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরেছিলেন অর্থমন্ত্রী। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। মার্চে এ হার ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ছিল। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের তথ্যকে ভিত্তি ধরে করা পুরনো হিসাবেও।

এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মার্চে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিগত বছরগুলোর বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরে বাজেট বক্তৃতায় মুহিত বলেন, সন্তোষজনক খাদ্য মজুদ, দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, কৃষি খাতে ধারাবাহিক সহায়তা দেয়ায় মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে পেরেছে সরকার। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে। যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতির চ্যালেঞ্জের সঙ্গে রাজনৈতিক চাপ সমন্বয়ের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।

অবশেষে ‘পরীক্ষামূলক’ জেলা বাজেট মহাজোট সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা থাকলেও মেয়াদের শেষ বছরে এসে অবশেষে পরীক্ষামূলক জেলা বাজেট পেল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় টাঙ্গাইল জেলার জন্য পরীক্ষামূলক বাজেটের ঘোষণা দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। পরীক্ষামূলক এই বাজেটে চলতি আগামী অর্থবছরের টাঙ্গাইল জেলার জন্য মোট এক কোটি ৬৭ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৭ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অনুন্নয়ন ব্যয় দেখানো হয়েছে এক কোটি ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪৩ টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫৫ লাখ ৪৯ হাজার ২৪ টাকা। গত অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটে এই জেলার জন্য মোট বরাদ্দ ছিলো এক কোটি ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিজয়ের পর থেকে প্রতি বাজেটের সময় ‘আগামী বছর জেলা বাজেট দেয়া হবে’ বলে ঘোষণা দেয়া হতো। এবারের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “অবশেষে জেলা বাজেট এবার সম্ভবপর হলো। “এবার টাঙ্গাইল জেলার জন্য একটি পরীক্ষামূলক জেলা বাজেট পেশ করছি। আমি আরও আশা করছি যে, আগামী দুই মাসের মধ্যে আমরা বাকী ৬টি বিভাগের ৬ জেলার জেলা বাজেট টাঙ্গাইলের ধাঁচে প্রকাশ করতে পারবো। ” রাজস্ব উন্নয়ন বাজেটের অধীনে পরিচালিত টাঙ্গাইল জেলায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাজকর্ম সম্পর্কে একেবারে নির্ভুল না হলেও নির্ভরযোগ্য বিবৃতি এই জেলা বাজেটে থাকছে বলে তিনি জানান।

মুহিত বলেন, “এখানে জেলাতে সরকারের বাজেটমাফিক কী ধরণের কার্যক্রম হচ্ছে এবং কত খরচ হচ্ছে তার একটি ধারণা পাওয়া যাবে। এই বাজেট প্রণয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে একটি জেলা কীভাবে প্রভাবিত এবং উপকৃত হয় তার বিবরণ প্রদান। আমার প্রত্যাশা যে, এতে সরকারের কাজে স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা আরো উন্নত হবে। ” ভবিষ্যতে জেলা থেকে আসা প্রস্তাবিত অভিমত ও কার্যক্রমগুলোও আস্তে আস্তে জেলা বাজেটে স্থান পাবে বলে আশা করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অবশ্য তার একটি পূর্ব শর্ত আছে, সেটি হচ্ছে, শক্তিশালী জেলা পরিষদ।

” পুঁজিবাজার ‘চাঙ্গা করতে’ একগুচ্ছ প্রণোদনা চলমান ‘মন্দা’ কাটিয়ে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে বিনিয়োগকারীদের জন্য একগুচ্ছ প্রণোদনা প্রস্তাব করা হয়েছে আগামী বাজেটে। প্রস্তাবনার মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার শেয়ার লেনদেন থেকে অর্জিত আয়কে করমুক্ত রাখার বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রয়েছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, বিনিয়োগে কর রেয়াত বাড়ানো ও শেয়ার প্রিমিয়ামের ওপর কর প্রত্যাহার করা। বক্তব্যে মুহিত বলেন, দেশের পুঁজিবাজারকে সংস্কার ও সংহত করার চেষ্টা সফল হয়েছে। পুঁজিবাজারে ‘কিছুটা’ স্থিতিশীলতাও এসেছে। প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে- আয়ের ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ করলে এখন থেকে আয় বা করপোরেট করের ওপর ১৫ শতাংশ কর রেয়াত পাওয়া যাবে।

ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগের ওপর কর রেয়াত ২০ শতাংশ খেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ব্যক্তিশ্রেণির সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা এক কোটি থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে। শেয়ারের অভিহিত মূল্যের প্রিমিয়ামের ওপর বিদ্যমান ৩ শতাংশ কর এবং বন্ড বিক্রির সময় উৎসে আয়কর বিলোপ করা হয়েছে। আর মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ওপর ১৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়া এবং করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগও অব্যাহত রাখা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০১-০২ থেকে ২০০৫-০৬ পর‌্যন্ত আওপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকার পরিমাণ ছিল ৪৩০ কোটি। এর বিপরীতে ২০০৯ থেকে বর্তমান পর্যন্ত উত্তোলিত টাকার পরিমাণ ৪ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। একই সময়ে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৩০২ কোটি টাকার বিপরীতে বর্তমানে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা উত্তোলিত হয়েছে। মুহিত বলেন, “বস্ত্রখাতে বিশেষ করে পোশাক শিল্পে যে ব্যাপক অগ্রগতি হচ্ছে তার অন্যতম উপাদান হচ্ছে পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি উত্তোলন। ” গাড়ি যত পুরনো, দাম তত কম ব্যক্তিগত ব্যবহারের পুরানো গাড়ির দাম কমছে।

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, গাড়ি যত বেশি পুরানো হবে, দাম তত কম হবে। বর্তমানে ৫ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ি আমদানি করা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে মোটর গাড়ির শুল্ক-কর গত ২০০৯-২০১০ এবং ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে পুনর্বিন্যাস করা হয়। ২০১১-২০১২ ও ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে এক্ষেত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আগামী অর্থ বছরেও বর্তমান শুল্ক কর কাঠামো অব্যাহত রাখার কথাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন।

তবে ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা দেয়া আছে। ১০ শতাংশ ডিলারস কমিশনসহ এক্ষেত্রে সর্বসাকুল্যে ৩৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা দেয়া হয়। সবকিছু বাবদ(কনসুলিডেটেড) এই অবচয় সুবিধা ন্যায়ভিত্তিক নয় বলে অর্থমন্ত্রীর মনে হয়েছে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে একটি পুরনো গাড়ির করভার একটি নতুন গাড়ির চেয়ে বেশি পড়ে। এ কারণে বৃহস্পতিবার ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী কনসুলিডেটেড অবচয় সুবিধার পরিবর্তে বছরভিত্তিক অবচয় সুবিধা দেয়ার সুপারিশ করেন অর্থমন্ত্রী। এক বছরের কম পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা না দেয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

এছাড়া এক বছরের বেশি কিন্তু ২ বছরের কম পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা ৩০ শতাংশ, দুই বছরের বেশি কিন্তু তিন বছরের কম পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা ৩৫ শতাংশ, তিন বছরের বেশি কিন্তু চার বছরের কম পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা ৪০ শতাংশ এবং ৫ বছর পর্যন্ত পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা ৪৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমদানিকারকরা আলাদাভাবে কোনো ডিলার্স কমিশন পাবেন না। পুরনো গাড়ির যে ভিত্তি মূল্যের ওপর অবচয় দেয়া হবে, তা কোনোভাবে সমমানের নতুন গাড়ির দামের চেয়ে চেয়ে বেশি হবে না। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডার সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইর পরিচালক আব্দুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের এ উদ্যোগে জনসাধারণ যেমন কম দামে গাড়ি পাবেন, তেমনি রাজস্ব আয় বাড়বে। ” অর্থমন্ত্রী এরইমধ্যে জানিয়েছেন, এ নিয়ে মোট সপ্তমবারের মতো সংসদে বাজেট উপস্থাপন করছেন তিনি।

আর এটিই হচ্ছে তার ‘জীবনের শেষ’ বাজেট। “সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী নির্বাচনে অংশ নেব। কিন্তু মন্ত্রী হব না। ”  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।