বঞ্চনার শক্ত হাত আজন্ম বেধে রেখে আমাকে করেছে দুঃখী । । অসহায়ত্তের সুযোগ নিয়ে নবাগত শিক্ষার্থীদের ওপর সিনিয়র শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন (র্যাগিং) বন্ধের লক্ষ্যে এ ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তি প্রদানসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের বিধানও করা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে র্যাগিং ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ঘোষণা দিল কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ডিন, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্টসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভায় এসব সদ্ধিান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট হলে অনুষ্ঠিত সভায় সদ্ধিান্ত হয়, নবাগত ছাত্রছাত্রীদের র্যাগিংয়ের কবল থেকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে বিভাগীয় সভাপতিরা বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভা ডেকে আগামী সাত দিনের মধ্যে নিজ নিজ বিভাগে নবাগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরান শিক্ষার্থীদের পরিচিতি সভার আয়োজন করবেন। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, র্যাগিং থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নবাগত শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় সভাপতি, ছাত্র-উপদষ্টো, হল প্রভোস্ট, ওয়ার্ডেন ও আবাসিক শিক্ষকদের ফোন নম্বর জানিয়ে দেওয়া এবং নতুন-পুরান শিক্ষার্থীদের সচেতন করার লক্ষ্যে ক্লাসে আগামী দুই সপ্তাহ কমপক্ষে ৫ মিনিট করে শিক্ষকদের র্যাগিংবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সভায় জোর দিয়ে বলা হয়, র্যাগিংয়ের সঙ্গে কেউ জড়িত হলে তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, হল প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল টিম, বিভাগীয় সভাপতি, বিভাগীয় ছাত্র উপদষ্টোরা অংশ নেন।
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে র্যাগিং কী : এর আগে জনসংযোগ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে র্যাগিং পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়, র্যাগিং একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি। এই ঘৃণ্য আচরণ দ্বারা ব্যক্তির অপূরণীয় শারীরিক-মানসিক ক্ষতি হতে পারে। র্যাগিং নাগরিক অধিকার পরিপন্থী, বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
নিম্নোক্ত যেকোনো আচরণ র্যাগিং হিসেবে গণ্য হবে। যেমন: দৈহিক বা মানসিক পীড়ন, যেকোনো ধরনের অশোভন আচরণ, যেমন : হুমকি, অবজ্ঞাসূচক উক্তি, গালাগাল, তিরস্কার, অশালীন অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি, কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ বা কর্তব্যকর্ম থেকে বিরত রাখার চেষ্টা বা মত প্রকাশে বাধাদান, জোরপূর্বক কোনো রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী করা এবং রাজনৈতিক সংগঠনে যুক্ত হতে বাধ্য করা, কারো সামাজিক বা মানবিক মর্যাদাহানিকর কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, ঘুষ বা যেকোনো ধরনের আর্থিক অনাচার, বল প্রয়োগ এবং এক্ষেত্রে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক জারিকৃত যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালাও স্মরণযোগ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র্যাগিং-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য প্রদান বা অভিযোগ দাখিল করতে হলে সরাসরি অথবা ফোনে যোগাযোগ ও ফোনে সংক্ষপ্তি বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে তথ্য প্রদান করা যাবে। ফোনে যোগাযোগ করতে হলে প্রক্টর ০১৭১৪০১২৩১৫, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ : ০১৮১৮৪৯৩২৫৭, ০১৭১৬৩৯৯৩৭২, ০১৭১৬০৬৪১০৫, ০১৭১২৫০৫৩২৪, ০১৭৪০৯৭৭৯৫৪, ০১৭১২১৬৮০৯৪, ০১৯১৩৬২৪৩৯০, সহকারী প্রক্টর (মহিলা) : ০১৭১২৬৮৭৪৪৫, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) ০১৭১১৪৬৯২৭৭ নম্বরে ফোন করা যাবে। অভিযোগকারীর নাম গোপন রাখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি থেকে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হলে নবাগত ছাত্রছাত্রীদের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা মানসিক নির্যাতন করছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে র্যাগ দমনে পদক্ষেপ নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সূত্রঃ কালেরকণ্ঠ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।