লেখার মান যাই হউক সব কিন্তু লেখকের নিজস্ব সম্পত্তি
সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, সীমিত অধিকার, চাপ ও মৌলিক অধিকার হরণকারী জরুরি আইনের ভীতির মধ্যে সংবাদকর্মীদের এখন কাজ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি সামরিক-বেসামরিক সংস্থা গণমাধ্যমের কাজে হস্তক্ষেপ করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
দেশে মুক্ত তথ্য প্রবাহের ক্ষেত্রে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক, প্রধান সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক যৌথসভা করেন। এ সভাটি ছিল মূলত সোমবারের মুলতবি সভা।
প্রবীণ সাংবাদিক আতাউস সামাদের সভাপতিত্বে ওই সভায় দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বার্তা প্রধান, ফেডারেল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে আতাউস সামাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "গত বছরের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর থেকে দেশের সংবাদ মাধ্যমকে সীমিত অধিকার, চাপ ও মৌলিক অধিকার হরণকারী জরুরি আইনের ভীতির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে, সরকারি সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন সংস্থা গণমাধ্যমের কাজে হস্তক্ষেপও করছে। "
এতে আরও বলা হয়, "জরুরি অবস্থার মধ্যে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না। সংবাদ মাধ্যমের দৈনন্দিন কাজেও নিয়মিত হস্তক্ষেপ কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
"
সভায় জরুরি অবস্থা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সভায় একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
আতাউস সামাদ সাংবাদিকদের জানান, পরবর্তী সময়ে আলাপ-আলোচনা করে ওই কমিটি গঠন করা হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিউজ টুডে'র সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক জগলুল আহমেদ চৌধূরী, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, আমাদের সময়ের সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, যুগান্তরের উপ-সম্পাদক শাজাহান সরদার, দিনকালের নির্বাহী সম্পাদক মারুফ কামাল খান, চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল আমিন প্রমুখ।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক কামালউদ্দিন সবুজ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে মোজাম্মেল হক, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ওমর ফারুক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানও বৈঠকে ছিলেন।
দেশে মুক্ত তথ্য প্রবাহের ক্ষেত্রে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা প্রথম বৈঠক করেন। সে বৈঠকে সোমবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার বৈঠক মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়।
সোমবারের সভায় ইত্তেফাকের সম্পাদক রাহাত খান, সমকালের সম্পাদক আবেদ খান, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক খায়রুল আনোয়ার, চ্যানেল ওয়ানের প্রধান বার্তা সম্পাদক নাজমুল আশরাফও উপস্থিত ছিলেন।
চার প্রবীণ সাংবাদিকের বিবৃতি:
প্রবীণ সাংবাদিক কে জি মোস্তফা, এ বি এম মূসা, নির্মল সেন ও কামাল লোহানী মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে বর্তমানে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের ওপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, "আমরা পূর্বসূরি সাংবাদিক জগতের দিকপালদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সব প্রতিবন্ধকতার অবসানের সংগ্রামে জীবন সায়াহ্নে এসে শরিক হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্বৈরাচারী সব বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করার লড়াইয়ে আমরা যেভাবে সফল হয়েছি, বর্তমান লড়াকুদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সাফল্য কামনা করছি। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।