ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর জন্য এনার্জি সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ এনার্জি উৎপাদন করতে জ্বালানী পোড়াতে হয়। ফলে যতো এনার্জি উৎপাদন হয় পরিবেশের ততো ক্ষতি হয়। এ জন্য ফসিল ফুয়েল ব্যবহার কমানো, রিনিউয়েবল এনার্জি (সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ইত্যাদি) ব্যবহার ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। পৃথিবীতে বেচে থাকার জন্য টিপসগুলো সবার মেনে চলা উচিত।
১
সাধারণ ইলেকট্রিক বাল্বের পরিবর্তে এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করুন। কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প (সিএফএল) সাধারণ বাল্বের চার ভাগের এক ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।
২
রান্না হয়ে গেলে চুলা এক সেকেন্ডও জ্বালিয়ে রাখবেন না। আপনার চুলাটি গ্যাস, কেরোসিন কিংবা কাঠের যা-ই হোক না কেন।
৩
সূর্যতাপ দিয়ে পানি গরম করার প্রযুক্তি ব্যবহার করুন।
বর্তমানে এ ধরনের উন্নতমানের হিটার বাজারে পাওয়া যায়।
৪
পরিবেশ বান্ধব বিল্ডিং তৈরি করুন। অফিস কিংবা বাড়ি তৈরি করার সময় এমন একজন প্ল্যানার বেছে নিন যিনি এনার্জি সেভিং বাড়ির ডিজাইন করতে পারেন। এ ধরনের ডিজাইনে থাকতে পারে এয়ার কন্ডিশনের ব্যবহার সীমিত করে শীত ও গ্রীষ্মকালের জন্য আরামদায়ক ব্যবস্থা, সূর্যের আলো, তাপ ও প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ভালো প্ল্যানাররা দিনের বেলা আলো প্রবেশের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখেন।
৫
কমপিউটার বন্ধ রাখুন। শুধু প্রয়োজনের সময় কমপিউটার চালান। কমপিউটার চলার সময় প্রায় ৬০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে। তাই স্ট্যান্ডবাই মোডেও কমপিউটার রাখবেন না।
৬
লাইট বন্ধ রাখুন।
আপনার ঘুমানোর সময় বাতি নিভিয়ে রাখুন। অফিস বন্ধ থাকলে লাইট, এসি ও ইলেকটৃক যন্ত্রপাতি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখুন। এভাবে কি পরিমাণ বিদ্যুৎ সেভ করতে পারবেন তা আপনি ভাবতেও পারবেন না।
৭
বাগানে কিংবা কৃষি জমিতে পানি দেয়ার জন্য স্প্রিংকলার বা পানি ছিটানোর যন্ত্র ব্যবহার করুন। জলসেচ করে পানি দেয়ার দিন শেষ হয়ে গেছে।
৮
গাড়ি ও মোটরসাইকেলের টায়ার নিয়মিত চেক করুন এবং সঠিক প্রেশারে বাতাস রাখুন। এতে আপনার বাহনের মাইলেজ বাড়বে এবং এনার্জি সাশ্রয় হবে।
৯
এনার্জি সাশ্রয়ী যন্ত্র কিনুন। আপনার নিজের ব্যবহারের জন্য এনার্জি সাশ্রয়ী ইস্ত্রী (আয়রন), ওভেন, রেফ্রিজারেটর কিংবা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এতে আপনার ইলেকট্রিক বিল কমবে এবং পরিবেশেরও উপকার হবে।
১০
সব ধরনের দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকুন। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বাড়বে। এ জন্য স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতি নিন।
১১
তেল সাশ্রয়ী যানবাহন কিনুন। শুধু এনার্জি সেভিংয়ের জন্যই নয়, এভাবে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব থেকেও মুক্ত থাকা যাবে।
প্রত্যেক লিটার পেট্রল পোড়ানোর ফলে বাতাসে চার কেজি কার্বন ডাইঅক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে চিন্তা করার এখনই সময়।
১২
হাঁটার অভ্যাস করুন। কাছাকাছি দূরত্বে যাওয়ার জন্য যানবাহন ব্যবহার না করাই ভালো।
১৩
বিমান ভ্রমণ কমিয়ে আনুন।
দূর থেকে যে কাজ করা যায় তার জন্য অযথা ঝামেলা করবেন না। এভাবে আপনার টাকা বাচবে এবং পৃথিবীও বাচবে কার্বন ডাইঅক্সাইডের হাত থেকে।
১৪
শীতকালে গোসলের পর বাথরুমের গিজার বা পানি গরম করার যন্ত্র বন্ধ রাখুন। উন্নতমানের শাওয়ার পানির ফ্লো ঠিক রেখেই পানির খরচ কমায়। এতে পানি ও এনার্জি খরচ কমে।
১৫
ভোগ বিলাস কম করুন। এ জন্য আপনাকে কঠোর সাধনা করতে হবে তা নয়। কোনো জিনিস কেনার আগে চিন্তা করুন, এটা কেনা কি খুবই প্রয়োজন!
১৬
মুখ ধোয়ার সময়, সাবান মাখার সময় বা দাড়ি শেভ করার সময় পানির ট্যাপ বন্ধ রাখুন। অপ্রয়োজনে পানি নষ্ট করবেন না। ভবিষ্যতে পানির দাম অনেক বাড়বে বলে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন।
এখনই এর অপচয় রোধ করা শিখুন।
১৭
রিসাইক্লিং বাড়ান। পরিবেশ রক্ষায় রিসাইক্লিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৮
বায়ুশক্তি ব্যবহার করুন। শহরাঞ্চলে উইন্ডমিল বানানো লাভজনক না হলেও উপকূল অঞ্চলে, নদীর ধারে কিংবা যেখানে জোরে বাতাস বয় এমন স্থানে উইন্ডমিল খুবই লাভজনক ও পরিবেশসম্মত।
১৯
পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগ বর্জন করুন। বাজারে প্রচলিত মোটা পলিথিনের ব্যাগ ও বিভিন্ন পণ্যের পলিথিনের মোড়কও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
২০
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন। ছোট গাড়ির তুলনায় বড় গাড়ি অনেক বেশি এনার্জি এফিসিয়েন্ট (যাত্রীপ্রতি)। ট্রেনের যাত্রীপ্রতি জ্বালানি খরচ অনেক কম।
আপনার এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট না থাকলে তা চালু করার উদ্যোগ নিন।
২১
কাগজ বাচান। যে কাজ কমপিউটার, ইন্টারনেট, ই-মেইল বা টেলিফোনে করা সম্ভব তার জন্য কাগজ নষ্ট করবেন না। সবকিছু কাগজে তুলে রাখার পুরনো অভ্যাস ভুলে যান।
২২
গাছ লাগান।
কার্বন ডাইঅক্সাইড কমানোর জন্য গাছ অত্যন্ত কার্যকর। পৃথিবীর প্রত্যেকে যদি একটি করে গাছ লাগাই তাহলে প্রায় সাড়ে ৬ বিলিয়ন নতুন গাছ পৃথিবীর কার্বন ডাইঅক্সাইডকে অনেক কমিয়ে আনবে।
২৩
যেসব গাড়ি সাশ্রয়ী জ্বালানি ব্যবহার করে সেগুলো কেনার কথা চিন্তা করুন। অন্য কেউ এগুলো ব্যবহার না করলে আপনিই হয়ে উঠুন এগুলোর প্রথম ব্যবহারকারী।
২৪
উন্নত টেকনলজির এনার্জি এফিশিয়েন্ট যন্ত্রপাতি উন্নয়ন ও গবেষণায় সাহায্য করুন।
পরিবেশ সহায়ক প্রযুক্তি প্রসারে উৎসাহ দিন।
২৫
আপনার আশপাশের সবাইকে জানান, পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া বাচার কোনো উপায় নেই। পরিবেশ বিষয়ে সবাইকে শিক্ষা দিন।
(পুরনো লেখা)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।