একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে করা মামলায় পলাতক চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আজ সোমবার জবানবন্দি দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন (৭০)। তিনি মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও রায়েরবাজার বধ্যভূমি এলাকায় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের একজন প্রত্যক্ষদর্শী।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আজ সোমবার দেলোয়ারের জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাহিদুর রহমান।
জবানবন্দিতে দেলোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে রায়েরবাজার বধ্যভূমির হত্যাযজ্ঞের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান তদারকিতে ছিলেন। একাত্তর সালের ১৪ ডিসেম্বর একটি মাইক্রোবাসে করে আরও কয়েকজনের সঙ্গে তাঁকেও হাত ও চোখ বেঁধে মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
সেখানে একটি ঘরে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। ওই ঘরে আটক থাকার সময় তিনি শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে নির্যাতন করতে দেখেন। নির্যাতনের সময় মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে ঘাতকেরা মুনীর চৌধুরীকে রড দিয়ে পিটিয়ে ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলে। সেখানে তিনিসহ অন্য বন্দীদের দফায় দফায় নির্যাতনের পর ১৪ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদপুরের কাঁটাসুরে (বর্তমান রায়েরবাজার বধ্যভূমি) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও গুলি করে দলে দলে বন্দীদের হত্যা করা হয়।
১৫ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত এ হত্যাযজ্ঞ চলে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই দিন হত্যাযজ্ঞের একপর্যায়ে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন তাঁর থেকে কিছুটা দূরে চলে গেলে তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক বন্দী ছাত্রের সহায়তায় হাতের বাঁধন খোলেন ও পরে চোখ খুলে দেখতে পান মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। অনেকের চোখ কোটর থেকে বের করে ফেলা হয়েছে এবং সবারই শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য দাগ। পরে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।