জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
দুর্নীতি বিস্তারে এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। কয়েকদিন আগে চুল কাটাতে গেছি সেলুনে। সবাই জানেন, গল্প বলায় নরসুন্দররা ওস্তাদ। যথারীতি তিনি চুল কাটছেন, আর গল্পও বলছেন। নানা জ্ঞানের কথার মাঝখানে তিনি একটি চমৎকার বিষয়ের অবতারণা করলেন।
তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। তিনি প্রতি সপ্তাহে বাড়িতে টাকা পাঠান। তবে তিনি সে টাকা মানি অর্ডারে পাঠান না, কোন লোক মারফতও পাঠান না। তিনি টাকা পাঠান ফ্লেক্সিলোডে।
ব্যাপারটা এরকম।
তিনি তার গ্রামের এক পরিচিত ফোন ফ্যাক্সের দোকানদারের কাছে ফ্লেক্সিলোডের মাধ্যমে ১১০০ টাকা পাঠান। সেই ফোন ফ্যাক্সের দোকানদার এই সেলুন মালিকের স্ত্রীকে ১০০০ টাকা নগদ দিয়ে দেন। ১০০ টাকা তার কমিশন বাবদ কেটে রাখেন। এভাবে প্রতি সপ্তাহে তার বাড়িতে টাকা পাঠাচ্ছেন।
আমি তার গল্প শুনে মুগ্ধ।
দেশের নানা উন্নতির সাথে মোবাইল ফোনের উন্নতি সবার চেয়ে বেশি। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এর গ্রাহক। ভাবতে ভাল লাগে আমাদের হাতের মুঠোয় এখন যোগায়োগের একটি আধুনিকতম প্রযুক্তি।
কিন্তু এই ফ্লেক্সিলোডের আরেকটি গল্প শুনে আমার মন খারাপ হয়ে গেল। বর্তমান সরকার ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
অনেক সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী ঘুষের টাকাসহ যৌথবাহিনীর কাছে ধরা পড়েছে। যৌথবাহিনীর লোকজন টাকার ফটোকপি রেখে তারপর লোকজনকে ঘুষ দিতে পাঠাত। ফলে খুব সহজে ঘুষের টাকা সনাক্ত করা যেত। কিন্তু তার জন্য তো ঘুষ থেমে নেই। এখন কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঘুষ নেন ফ্লেক্সিলোডে।
তারা হাত দিয়ে টাকা ধরার বদলে বলে দেন একটি নাম্বার। সেই নাম্বারে ঘুষের টাকা ফ্লেক্সি করে পাঠিয়ে দিতে হয়। এভাবে আধুনিক প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে ঘুষ খাওয়া চলছে।
নরসুন্দর ভাইয়ের এই অভিনব গল্প শুনে বুঝলাম, আমরা সকল আধুনিক প্রযুক্তিকে ঘুষ দুর্নীতির কাজে ব্যবহার করতে দারুণ ওস্তাদ। এই চক্র থেকে এ জাতি সহসা বের হতে পারবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।