leo_abdullah@yahoo.com
এ সময়ের তরুণ এবং মেধাবী এক ম্যাজিশিয়ান ডেভিড ব্লেইন। ম্যাজিকের দুনিয়ায় তিনি এনেছেন যুগান্তকারী পরিবর্তন। তার জীবনের নানা ঘটনা আর ক্যারিয়ারের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনার উপর ফিচার।
----------------------------------------------------------------------------------
হ্যারি হুডিনি (১৮৭৪-১৯২৬) আমরেকিার ইতিহাসে সেরা এবং স্মরণীয় এক ম্যাজিশিয়ান। একদম হাত-পা বাধা অবস্থায় আবদ্ধ স্থান থেকে বের হয়ে আসার দক্ষতার জন্য তিনি সেসময়ের মানুষের কাছে পরিচিত হয়েছিলেন এস্কেপ আর্টিস্ট নামে।
আজকের দিনের নতুন হুডিনি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে যেই মানুষটি তার বয়স ৩৪, জন্ম নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে ৪ এপৃল ১৯৭৩ সালে। নাম ডেভিড ব্লেইন। সকলের কাছে তিনি পরিচিত স্টৃট ম্যাজিশিয়ান হিসেবে, খুব কাছ থেকে জাদু দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দেন মানুষকে। কঠিন অবস্থায় তার টিকে থাকার অসাধারণ দক্ষতা হতবাক করে দিয়েছে এসময়ের সবাইকে।
ডেভিডের বাবা ছিলেন একজন স্প্যানিশ-পুয়েট্রো রিকান এবং মা রাশিয়ান বংশোদ্ভূত একজন ইহুদি।
ব্লেইনের ভাষ্য, তার ৪ বছর বছর বয়সে বাবা হারিয়ে যান এবং মাত্রাতিরিক্ত হেরোইন সেবনের ফলে সম্ভবত মারা যান অজ্ঞাত কোন স্থানে। বাবা সম্পর্কে তেমন বিশেষ কিছুই তিনি জানেনা ডেভিড কারণ তার মা এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইতেননা। জীবনে চলার পথে ব্লেইন অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তার মা প্যাটৃস হোয়াইটের কাছ থেকে। মহিলা ছিলেন একজন জিপসি, জাদু চর্চা করতেন। ডেভিডের বয়স যখন চার একদিন সাবওয়েতে এক লোককে ম্যাজিক দেখাতে দেখে তার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো।
এরপরই তিনি নিজের কার্ডগুলো নিয়ে বিভিন্ন টৃকসের প্র্যাকটিস আরাম্ভ করেন। মিসেস প্যাটৃস দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং নিউ ইয়র্ক থেকে পরিবার সহ যখন সরে আসেন নিউ জার্সিতে ডেভিডের বয়স তখন দশ। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের অভ্যাস ছিল তার। টিনএজ বয়সে ব্লেইন প্রায়ই ফিরে যেতেন নিউ ইয়র্কে তার অভিনয়ের ধারাবাহিকতাটা বজায় রাখতে। বেশ কিছু অ্যাড এবং নাটকেও কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল তার।
সতের বছর বয়সে ব্লেইন আবার ফিরে আসেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে। এই সময় তার মা জানতে পারলেন তিনি জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত। যেই মানুষটিকে ডেভিড ভালবাসতো এবং যার তদারকি আর অনুপ্রেরণা পেয়ে খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ম্যাজিকের জগতে ঢুকে পড়েছিলেন - সেই মানুষটি মৃত্যু পথযাত্রী। অসুস্থতা সত্তেও মিসেস প্যাটৃস তার লাইফ স্টাইলে কোন পরিবর্তন আনলেননা বরং ছেলেকে একজন সফল এন্টারটেইনার হবার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে দিতে লাগলেন। মহিলার সক্রিয় ভাব এবং ভিতরের প্রবল আকাংখা ধীরে ধীরে তার ক্যান্সার টিউমারের ছড়িয়ে যাওয়াকে দীর্ঘ দিনের জন্য থামিয়ে রাখলো।
কিন্তু এক সময় তাকে হার মানতে হলো ক্যান্সারের কাছে। ১৯৯৪ সালে ৪৮ বছর বয়সে ব্লেইনের কোলে মাথা রেখে মারা গেলেন প্যাটৃস হোয়াইট। এমনকি তার মৃত্যুর দিনেও তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে গেছেন, সাহায্য করেছেন গরিবদেরকে। সহৃদয়তা ও বদান্যতার এক অনন্য জীবনযাপন করে গেছেন মিসেস প্যাটৃস।
মাকে হারানোর বেদনা ব্লেইনের স্বপ্ন পূরণের অভিপ্রায়কে স্তিমিত করতে পারেনি।
সেরা এন্টারটেইনার হবার প্লান অনুযায়ী তিনি এগিয়ে নিতে লাগলেন তার দক্ষতার ক্ষেত্রকে। ‘ম্যাজিশিয়ান অফ দা মিলেনিয়াম’ উপাধি পাওয়া ব্লেইন সনাতন ধর্মবিশ্বাস থেকে বের হয়ে এসেছেন। মাধ্যাকর্ষন শক্তিকে উপেক্ষা করে ভেসে থেকেছেন তিনি নিউ ইয়র্কের রাস্তায়। তার সর্বপ্রথম এবিসি স্পেশাল প্রোগাম ডেভিড ব্লেইন : স্টৃট ম্যাজিক-এ ভেসে থাকার সেই দৃশ্য সবাইকে হতবাক করে দিয়েছিল।
ব্লেইনের নাম ছড়াতে থাকে যখন তিনি সেলিব্রেটি পার্টিগুলোতে পারফর্ম শুরৃ করেন।
বিনোদনকে সবধরনের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জোড়ালো প্রতিভা তার মধ্যে ছিলো শুরৃ থেকেই। সে কারণেই আরো বড় কিছু পাবার জন্য তিনি তার শৈল্পিক নৈপুণ্যের ভিডিও টেপগুলো পাঠিয়ে দিলেন এবিসি টেলিভিশনের স্টুডিওতে। প্রত্যুত্তর যা পলেন তা এক অর্থে অভিভূত হবার মত। তাকে খুব দ্রুত একটা ইন্টারভিউ দেয়ার অনুরোধ জানালো এবিসি। ১৯৯৭ সালে এবিসি সম্প্রচার করলো ‘ডেভিড ব্লেইন : স্টৃট ম্যাজিক’ প্রোগ্রামটি।
স্টৃট ম্যাজিকের মাধ্যমেই সারা বিশ্ব পরিচয় পেলো ব্লেইনের মেধা, মতা এবং চমৎকারিত্বের। এই টিভি প্রোগ্রামের পরই ব্লেইনের জীবন কাহিনী নিয়ে বড় পর্দায় কাজ করে রবার্ট ডি নিরোর প্রোডাকশন কোম্পানি ট্রাইবেকা।
দুই বছর পর, ১৯৯৯ সালে ডিরেক্টর হারমোনি কোরিনের সহায্য নিয়ে ব্লেইন তার দ্বিতীয় এবিসি স্পেশাল ‘ডেভিড ব্লেইন: ম্যাজিক ম্যান’ এর ডিরেকশন দিলেন। এই শোটি প্রথম প্রোগ্রাম স্টৃট ম্যাজিকের মতো করে চিত্রায়িত হয়নি। বরং ম্যাজিক ম্যান এর শট নেয়া হয়েছে অনেকটা মুভির মতো করে ফলে সম্পুর্ণ নতুন এক মাত্রা যোগ হয় তার দ্বিতীয় ভিডিওটিতে।
একই বছরের ৫ এপৃল জীবন্ত সমাহিত হবার ভয়কে অতিক্রম করলেন ব্লেইন যেই ভয়টা সবসময়ই কাজ করতো হুডিনির মধ্যে। নিউ ইয়র্ক শহরের ডোনাল্ড ট্রাম্পে মাটি খুড়লেন। একটা গ্লাস কফিনের মধ্যে সমাহিত করে ফেললেন তিনি নিজেকে। কোন খাবার এবং পানি ছিলনা। আশপাশটা ছিল নোংরা।
পথচারীরা দিনরাত ২৪ ঘন্টাই তাকে দেখতে পেত। অবশেষে জয় করলেন তিনি ভয়কে। একদম সরু এবং দুর্বল অবস্থায় সাতদিন পর ১২ এপৃল কফিন থেকে উঠে এলেন ডেভিড ব্লেইন। এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডেভিড বলেছেন, সাত দিন পর পরিবর্তিত একজন মানুষ হয়ে উঠে এসেছি আমি।
২৭ নভেম্বর ২০০০ সালে এ যাবৎ কালের সবচেয়ে কৃতিত্বপূর্ণ কাজটি করলেন ব্লেইন।
আলাস্কা থেকে আনা ছয় টন ওজনের একটা বরফ-চাইয়ের (ওপব ইষড়পশ) মধ্যে জমিয়ে ফেললেন নিজেকে। কান্ডটি তিনি ঘটালেন নিউ ইয়র্ক সিটির টাইমস স্কয়ারে। টেলিভিশনের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ডেভিড ব্লেইন: ফেৃাজেন ইন টাইম’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় এক মিলিয়ন লোক প্রত্যক্ষ করলো ৬১ ঘন্টা ৪২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড পর বরফের ভিতর থেকে তার বের হয়ে আসার দৃশ্য। স্বচ্ছ বরফটা ছিলো খাড়া করে রাখা এবং এর মাঝে ছিলো ফাকা। ডেভিড পুরোটা সময় সেখানে ছিলো এটা প্রমাণ করতেই এ ব্যবস্থা নেয় হয়েছিলো।
বের হবার পর তাকে মোটেও সুস্থ দেখাচ্ছিলনা। টাইমস স্কয়ারে জড়ো হওয়া হাজার হাজার লোক তার নাম ধরে ডাকছিলো কিন্তু ডাক্তাররা তাকে দ্রুত হাসপাতোলে স্থানান্তর করেন। আবার খাড়া হতে ব্লেইন পুরো একমাস সময় নিয়েছিলেন।
আমেরিকার বাইরে ব্লেইন তার দক্ষতাকে নিয়ে গেলেন ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে। বৃটেনে তার যেই ভিডিওটি প্রথম রিলিজ হয় সেটি ছিলো আদতে আগেকার ‘ম্যাজিক ম্যান’ এবং ‘স্টৃট ম্যাজিক’ এই দুটোর সংমিশ্রণ।
ওই ভিডিওটির টাইটেল করা হয় - ‘মিসটিফায়ার’ অর্থাৎ রহস্যময়। মিসটিফায়ার বৃটেনের দর্শকদেরকে ভাসিয়ে দিলো। বৃটেনকে রহস্যাবৃত্ত করে ফেললেন ব্লেইন, ফলাফল হিসাবে মিললো বৃটিশ ভিডিও অ্যাসোসিয়েসন অ্যাওয়ার্ড এবং হোম এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। নভেম্বর ২০০১ সালে ব্লেইন রিলিজ করলেন ‘শোম্যান’। এটি ইউকেতে তার দ্বিতীয় ভিডিও।
এই ভিডিওটিতে ‘ফ্রোজেন ইন টাইম’ এর অদেখা কিছু ফুটেজ অন্তর্ভুক্ত করা হয় যা ব্লেইনের প্রথম দিককার স্টৃট পারফরমেন্সের সময়ের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
এরপর তিনি যে স্টান্টশো করেন তাকে বলা হয় ভার্টিগো। নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রায়ান্ট পার্কে ৮০ ফুট উচু এবং ২২ ইঞ্চি প্রস্থের একটা পিলারের মাথায় তুলে ফেললেন তিনি নিজেকে। ২০০২ সালের মে মাসের ঘটনা এটি। নিচে নামার আগ পর্যন্ত টানা ৩৫ ঘন্টা ২৩ মিনিট ঠায় দাড়িয়ে ছিলেন তিনি ওই পিলারের উপরে।
তার কঠিন এই প্রচেষ্টার প্রস্তুতি হিসেবে ওই সময় ব্লেইন কোন খাবার খাননি এবং খুব সামান্যই পানি পান করেছিলেন।
এরপর ব্লেইন বললেন, আরো যতদুর সম্ভব নিজেকে আমি ঠেলে দিতে চাই। ৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩ থেকে ব্লেইন শুরু করলেন তার ৪৪ দিন দীর্ঘ অনশন। তবে যেমন তেমন অনশন নয়, এবার লন্ডনের টেমস নদীর তীরে পটারস ফিল্ড পার্কে ৩০ ফুট উচুতে ঝোলানো হলো স্বচ্ছ প্লেক্সিগ্লাস (চষবীরমষধং) নির্মিত একটা বাক্স। এর মধ্যে ফিট করা হলো একটা ওয়েবক্যাম যাতে দর্শকরা সার্বক্ষনিক ভাবে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
ব্লেইনের এই কাজটি প্রচুর মিডিয়া কভারেজ পায়। এসময় অনেক মজার ঘটনাও ঘটে। রিমোট-কন্ট্রোল চালিত খেলনা হেলিকাপ্টারে করে তার বাক্সের কাছে বার্গার পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এটা ছিল এক ধরনের টিটকারী। এছাড়াও গলফের বল, ডিম ইত্যাদি ছুড়ে মারা, তার পানি সাপ্লাইয়ের লাইন কেটে দেয়ার মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে।
এই দীর্ঘ সময় সে কারো সাথেই কোন যোগাযোগ করছিলোনা বলেই খেপে গিয়েছিলো অনেকে। ব্লেইনের প্রতি সমর্থন জানাতে পাচজন লোক সার্বক্ষণিক ভাবে তার বাক্সের নিচে অবস্থান নিয়েছিলো। ১৯ অক্টোবর শেডিউল অনুযায়ি ৪৪ দিন পর বের হয়ে এলেন ব্লেইন এবং ফিসফিস করে করে সবার উদ্দেশ্যে বললেন - আই লাভ ইউ অল। প্রচন্ড শুকিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০৫ পাউন্ড ওজন নিয়ে উঠেছিলেন বাক্সে, বের হলেন ৫৪ পাউন্ড হারিয়ে।
আজ থেকে প্রায় একশ বছর আগে হ্যারি হুডিনি যেমনটা করেছিলেন ম্যাজিককে জনসমক্ষে এনে ওই রকম আনন্দই পান ব্লেইন। খ্যাতিমান ম্যাজিশিয়ানদের মতোই ডেভিড ব্লেইন জাদুকরী কৃতিত্বের বদলে নিজেকে টিকিয়ে রাখার পরীক্ষায় ফেলতেই বেশী পছন্দ করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে ব্লেইন খোলা রাস্তায় লোক ডেকে ডেকে ম্যাজিক দেখিয়েছেন। তিনি কার্ডের টৃক্স থেকে শুরু করে শুন্যে ভাসা এবং দৃষ্টি বিভ্রম জাতীয় শো যেমন মরা মাছিকে দৃশ্যত আবার বাচিয়ে তুলেছেন। ছোট্ট একদল ক্যামেরা ক্রু নিয়ে সরাসরি নিত্যকার লোকজনদের সামনে রেকর্ড করেছেন।
আর এর মাধ্যমেই তিনি তৈরী করেছেন অসাধারন কিছু টিভি স্পেশাল - ডেভিড ব্লেইন : স্টৃট ম্যাজিক, ডেভিড ব্লেইন: ম্যাজিক ম্যান এবং ডেভিড ব্লেইন: মিস্টিফায়ার।
এরপর তিনি তার মনোযোগ সরিয়ে আনলেন কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার ক্ষমতা দেখানোতে। এসব কাজের মধ্যে আছে - জীবিত অবস্থায় সাতদিন নিজেকে সমাহিত রাখা, ৬১ ঘন্টা বরফের খাচায় আটকে রাখা, ১০০ ফুট উচু একটা পোলের ছোট্ট পাটাতনে ঠায় ৩৫ ঘন্টা কাটানো এবং টেমস নদীর উপরে ঝুলানো স্বচ্ছ কাচের বাক্সে কোন খাবার ছাড়াই ৪৪ দিন কাটিয়েছেন তিনি। নিজেকে এই সব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেয়ার ব্যাপারে ব্লেইন বলেছেন, অন্যের মনোযোগ আকর্ষনের জন্য আমি এসব করিনা। এর কারণ আমি কিছু ছবি তৈরী করতে চাই, ম্যাজিককে শিল্পের মতো ব্যাবহার করে সত্যিকারের সেই ছবিগুলো বানাতে চাই আমি যেগুলো দীর্ঘ সময় টিকে থাকবে।
আর আমি যতক্ষণ বেচে আছি, প্রচন্ড সচেতন হয়েই এই কাজগুলো করছি ... নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে তার মুখোমুখি হচ্ছি। এমনটাই আমি করে যেতে থাকবো কারণ এভাবেই নিজের কাছে আমি প্রকাশিত হই।
যদিও রাস্তায় ম্যাজিক তিনিই প্রথম দেখাচ্ছেননা কিম্বা কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার কাজগুলোও তিনি প্রথম করেননি তবে, ম্যাজিকে ব্লেইনের অবদান হলো: যেখানে অন্য ম্যজিশিয়ানরা ক্ষুদে দর্শকদের কাছে পৌছুতে পারেননি; মাত্র এক দশকের মধ্যে ভিডিও ও টেলিভিশন মাধ্যমকে ব্যবহার করে তিনি ম্যাজিককে নিয়ে গেছেন এমটিভি জেনারেশনের কাছে। সুস্থ অবস্থায় দীর্ঘ দিন বেচে থাকুন আত্মবিশ্বাস আর সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সকলের প্রিয় ম্যাজিশিয়ান অফ দি মিলেনিয়াম ডেভিড ব্লেইন।
ডেভিড ব্লেইনের সম্পর্কে টুকিটাকি আরো কিছু তথ্য :
- তার বাম হাতের বাহুতে টাট্টু আকা নাম্বারটি হলো ১৭৪৫১৭।
এটি ইটালিয়ান লেখক এবং রসায়নবিদ প্রাইমো লিভাইয়ের (চৎরসড় খবার) নাজি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের নাম্বার।
- সালভাদর ডালি’র ‘ক্রাইস্ট অফ সেন্ট জন অফ দা ক্রস’ আকা আছে ব্লেইনের পিঠে। তার ভার্টিগো ফিল্মটিতে ওই ছবিটা পুরোপুরি দেখা গেছে।
- জানা গেছে তিনি ডেট করেছেন আমেরিকান গায়িকা ফিওনা অ্যাপল, ম্যাডোনা, সুপার মডেল জোসি ম্যারান, ফ্যাশন মডেল লোনেকি ইঙ্গল এবং অভিনেত্রী ডেরিল হান্নার সংগে।
- ব্লেইন গ্রাজুয়েশন করেছেন ১৯৯১ সালে।
তিনি নিউ জার্সির লিটল ফলসে প্যাসিফিক ভ্যালী হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। দি টাইমস পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইউনিভার্সিটিতে যেতে পারলে সময়ের সদ্ব্যবহার সম্পর্কে আরো বেশী কিছু শিখতে পারতাম আমি ... এই ব্যাপারটা আমাকে ঈর্ষান্বিত করে।
- লাস্ট কল উইথ কারসন ডালি - পোগ্রামটিতে তিনি নাকি নিজের হৃৎপিন্ড বের করে বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিলেন। দৃশ্যটি ধারন করা হলেও পড়ে তা বাদ দেয় এনবিসি। তারা বলেছিলো, দৃশ্যায়নের সময় উপস্থিত অনেক দর্শক প্রচন্ড রকম মানসিক ধাক্কা খেয়েছিল।
অনেক ক্রু মেম্বার চিৎকার আর কান্নাকাটি করতে করতে বের হয়ে গিয়েছিলো স্টেজ থেকে।
- ২০০২ সালে ডেভিড মিস্টেরিয়াস স্ট্রেঞ্জার: এ বুক অফ ম্যাজিক নামে একটি বই প্রকাশ করেন প্রকাশনী সংস্থা র্যান্ডম হাউস থেকে। বইটির তিনটি পার্ট। এক অংশে তার অটোবায়োগ্রাফি, আরেক অংশে ম্যাজিকের ইতিহাস এবং সবশেষে পাঠকদের জন্য গুপ্তধনের একটা ধাধা - আর্ম চেয়ার ট্রেজার হান্ট।
- মিস্টেরিয়াস স্ট্রেঞ্জার: এ বুক অফ ম্যাজিক বইয়ে উল্লেখিত আর্মচেয়ার ট্রেজার হান্ট বা গুপ্তধনের ধাধাটির পরিকল্পনা করেছিলেন গেম ডিজাইনার কিফ জনসন এবং বই প্রকাশের ১৬ মাস পরে ২০ মার্চ ২০০৪ সালে ধাধার সমাধান করেন শেরী স্ক্যান্স।
- ২০০৭ সালে ডেভিড ব্লেইন খুবই চমৎকার ভাবে টিএনটিতে এনবিএ (ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন) এর জন্য একটা কমার্শিয়াল অ্যাডভার্টাইজিং সিরিজ রেকর্ড করেছেন।
- ডেভিড ব্লেইনের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটের অ্যাড্রেস হলো: http://www.davidblaine.com
---------------- সমাপ্ত -------------------
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।