যেতে চাও যাবে, আকাশও দিগন্তে বাঁধা, কোথায় পালাবে!
চাল রফতানী নিয়ে ভারত সরকারের তুঘলকী কারবার এবং সিদ্ধান্তহীনতার ফলে দেশের চালের বাজারের অগ্নিমুল্যের কথা আমরা কম বেশী সবাই জানি । তবে এর পাশাপাশি ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন অপর্যাপ্ত মজুদের কারন দেখিয়ে বাংলাদেশের সাথে স্বাক্ষরিত ১২০,০০০ টন জ্বালানী তেল রফতানীর চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত জানানোয় সামনে আরো বড় দুর্দিনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে । আমি অবশ্য চালের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার চাইতে আমাদের সামরিক (পড়ুন তত্বাবধায়ক) সরকারে অদক্ষতাকেই এর জন্য বেশী দায়ী করবো ।
জ্বালানী তেলের সাথে বাজার মুল্য অঙ্গাঙ্গিকভাবে সম্পর্কিত । এই রফতানী চুক্তি বাতিলের ফলে বাংলাদেশ যে জ্বালানী তেলের ঘাটতিতে পড়বে তার মোকাবেলা কি এই সরকার করতে পারবে? সরকারের হাতে কি কোন বিকল্প প্ল্যান আছে? এই পরিমাণ জ্বালানী তেলের ঘাটতি হলে তার প্রভাব শুধু যোগাযোগ ক্ষেত্রে নয়, শিল্পক্ষেত্রেও পড়বে ।
সবচাইতে অগ্রহণযোগ্য ব্যাপার হলো ভারত সরকারের একেবারে শেষ সময়ে তেল রফতানীতে অসম্মতি । চুক্তি অনুযায়ী এই তেল বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিলো মার্চের শেষ সপ্তাহে বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে । ভারত কি আগে বুঝতে পারেনি যে তাদের জ্বালানী মজুদে সমস্যা হবে? একেবারে শেষ সময়ে রফতানীতে অসম্মতি জানিয়ে বাংলাদেশকে একটি বড় ধরণের সংকটের মুখোমুখি দাড় করানোটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না । এমনিতেই আমাদের সরকারের দক্ষতা প্রশ্নসাপেক্ষ, এখন এই অল্প সময়ের মধ্যে তেলের বিকল্প যোগান সরকার কি নিশ্চিত করতে পারবে? যদি না পারে (সেটার সম্ভাবনাই বেশী) তাহলে সামনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা দেখা দেবার সম্ভাবনা প্রবল ।
হঠাৎ করে এসব ঘটনা কিসের আলামত ।
নিশ্চিতভাবেই এগুলি বাংলাদেশ সরকারে জন্য একটি বড় কূটনৈতিক ব্যর্থতা ও একটি বড় ধরনের ধাক্কা । কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো চুক্তিগুলি কোন ধরণের শর্ত মেনে স্বাক্ষর করা হয় যে একেবারে শেষ মুহুর্তেও রফতানী করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেশ এভাবে পিছিয়ে যেতে পারে? দেশকে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাড় করাবার জন্য এইসব অসম চুক্তি সম্পন্নকারী ব্যক্তিবর্গও কোনভাবে দায় এড়াতে পারেননা । আর ভারত হঠাৎ করেই এত বেশী বৈরী আচরণ শুরু করলো কেন?
সামনে বাংলাদেশের জন্য বড় বেশী কঠিন দিন অপেক্ষা করছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।