চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা
আপনি বাসে চড়ে রওয়ানা দিয়েছেন কোথাও। হঠাত বাসে দুএকজন যাত্রী ছিনতাইকারী বলে চেচিয়ে উঠল, তারপর মার শুরু করল একলোককে। আপনিও হাত মেলালেন। পরে মুমুর্ষপ্রায় লোকটির কাছ থেকে জানতে পারলেন ছিনতাইকারী (যারা ছিনতাইকারী বলে চেচিয়ে উঠছিল) তারা সব ছিনতাই করে পালিয়েছে।
সামহ্যোয়ার ইন নামক বাসে যারা তাদের যাত্রা শুরু করেছেন তাদের কাছে অনুরোধ কারো ব্যাপারে কিছু একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কে ছিনতাইকারী আর কে ভালো মানুষ তা বুঝে নিন আগে।
নাহয় দুষ্ট প্রকৃতির লোকগুলার স্বার্থহানি ঘটলে আপনিও তাদের শিকার হবেন।
নীতিগত কারনে বিরোধিতা করা আর ব্যাক্তিগত কারনে কারো বিরোধিতা করার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। দ্বিতীয়টার সাথে ব্যাক্তিগত স্বার্থটাই মুখ্য হয়ে দাড়ায়।
একবার হজরত আলী রা: কাফের সর্দারের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ন হলেন।
প্রবল যুদ্ধের পর আলী রা: একসময় জয়ী হয়ে কাফের সর্দারের বুকের উপর চেপে বসে তলোয়ার উত্তোলন করলেন মেরে ফেলার জন্য।
ঠিক ওই সময়টিতে কাফেরটি ঘৃনাভরে আলী রা: মুখে থু থু ছুড়ে মারল। তখন আলী রা: মনে ক্রোধের সন্চার হলে তিনি আরো শক্তিতে কাফেরের বুকে তলোয়ার চালাতে উদ্যত হলেন। কিন্তু কি মনে করে কাফের সর্দারের বুক থেকে নেমে দাড়ালেন। অবাক সেই কাফের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রথমত আমি তোমাকে খুন করতে চেয়েছিলাম নীতি (ধর্মের) কারনে। কিন্তু দ্বিতীয়বার ব্যাক্তিগত ক্রোধের বশবর্তী হয়ে।
তাই সেইসময় তোমাকে খুন করলে আমার ব্যাক্তিগত প্রতিহিংসাই চরিতার্থ হত। এবং যা হত খুবই অন্যায়।
এই অন্যায় কাজটি আমাদের সামহ্যোয়ার ইনে অনেকে করেন, তারপর উল্লাসভরে বলেন, ওরে আমি ব্যান কইরা দিছি।
বেশ কয়দিন আগে একটি বিদেশী কৌতুক দৃশ্য দেখেছিলাম। যেখানে একটি মাঠে ফুটবল খেলা হচ্ছিল।
এক খেলোয়ার বল নিয়ে যখন দৌড়াচ্ছিল তখন তাকে একজন ল্যাং মেরে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ঐ খেলোয়াড়টি একইভাবে আরেকজন খেলোয়াড় থেকে ল্যাং মেরে বল কেড়ে নেয়। কিন্তু একসময় দেখা যায় ঐ খেলোয়াড় ভদ্রলোক বল ছেড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের ল্যাং মারাতেই ব্যাস্ত। একসময় খেলার রেফারীকেও ল্যাং মারতে তার পেছন পেছন দৌড়ায় ঐ ভদ্রলোক, বল কিংবা লক্ষ্যের গোলপোষ্টের কথা তখন বেমালুম ভুলে গেছে।
আমাদের সামহ্যোয়ার ইনেও মাঝে মাঝে কেউ কেউ পোষ্টের বিষয়বস্তুর চাইতে অন্যকে ল্যাং মারাতে বেশি উত্সাহ দেখিয়ে ফেলেন।
সামহ্যোয়ার ইনের যে কোন সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের সবচাইতে সক্রিয় হয়ে উঠার কথা। এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য হবে কর্তৃপক্ষের সামনে সমস্যাটা উত্থাপন করা। কিন্ত মাঝে মাঝে দেখা যায় কর্তৃপক্ষের সবচাইতে ব্লগারদের কেউ কেউ অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠেন এবং পরিশেষে ব্যান হন। ব্যান হওয়ার আগে আবার বলতে ভুলেন না, আবার আসিব ফিরে।
কাউকে আপনি নিরপেক্ষ মনে করতে পারেন তখনই যখন পক্ষ বিপক্ষ দুপক্ষই তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।