আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়তে ভর্তি হই , হওয়ার পড়ে এই ধরনের তথাকথিত রেগিংর শিকার হতে হয়েছে কম বেশি। ক্লাসে আমরা সবাই ভয়ে ভয়ে থাকতাম কখন কাকে রেগ দেয়ার জন্য না জানি ডেকে নিয়ে যায়। একমাত্র আমরাই মনে হয় প্রথম ব্যাচ ছিলাম যারা সবাই একসাথে বলেছিলাম এক জন রেগিং খাব না সবাই মিলে খাব, টিকই সবাই মিলেই খেতে হয়েছিল সেদিন, শুধু মাত্র আমাদের সীমাবদ্দতার জন্য। আমি যেদিন রেগ খাই সেদিন যারা আমাকে ক্লাস শেষে রেগ দিতে এসেছিল তারা সবাই হতাশ হয়েছিল কিছুটা কারন মজা পায় নাই। আমাকে রেগ দেয়ার সময় ভাবছিলাম এদের যদি ভবিষ্যতে কখনো আমার গ্রিপে পাই খবর করে দিব, যদিও এই মনভাব পরে বদলে গিয়েছিল কারো কারো প্রতি কারন তাদের মন মানসিকতা ভালো ছিল বলে।
রেগ দেয়ার কারন যদি হয় পরিচিত হওয়া তাহলে বলব টিক আছে কিন্তু প্রক্রিয়া টিক নেই, কারন রেগ দেয়ার সমায় কেও কেও যা করে থাকে দেখে আমার মনে হত তারা বিকৃত রুচির অধিকারী। আমাদের টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট থেকে বলা হত রেগ খেলে সবার সাথে পরিচিত হবে, লেখা পোড়া শেষ হলে চাকরি পেতে সহায়তা করবে। হা হা হা যা কিনা হাস্যকর এই জন্য যে কয়জন বড় ভাই বলতে পারবে যে তারা তাদের ডিপার্টমেন্ট এর ছোট ভাই দের জন্য কিছু করেছে ? কয়জন আছেন ? সত্যি কথা সব সময়ই শুনতে কষ্ট লাগে যদিও সত্য। বরঞ্চ এমন ও বড় ভাই পেয়েছি উল্টো পারলে বলে দিয়েছে যে এদের নিয়েন না থাকবে না চলে যাবে।
পরবর্তীতে আমাদের যখন রেগিং দেয়ার সময় এসেছিল আমি কখনই দেই নাই, বরঞ্চ ছেলেদের বাঁচিয়ে দিয়েছি যদিও তার মূল্যায়ন পাই নাই, তার জন্য দুখও নেই অবশ্য।
এবার রেগিং নিয়ে মজার ঘটনা বলি, আমাদের টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট ই শুধু রেগিং দেয় বলে দুর্নাম ছিল যার জন্য স্যারদেরকেও আমাদের জন্য কথা শুনতে হত অন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে। আমরা যখন ১_২ তে তখন আমাদের ছেলেপেলেরাও আচ্ছা মতন রেগ দিয়ে জাল মিটাচ্ছিল যাই হোক একদিন ক্লাস শেষে বেশ কিছু ছেলে ৫ তলার একটি ভবনে রেগ দিচ্ছিল। ওই সময় আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর হেড স্যার কি জন্য জানি ওই রুমে নক করেন। দরজা খুলে উনি যা দেখেন তাতে তো উনি থ। উনি জিজ্ঞেস করলেন ছেলেরা তোমরা কোন ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র ? তো ছেলেরা চালাকি করে বলেছিল অন্য এক ডিপার্টমেন্ট এর কথা এটা শুনে আমাদের হেড স্যার মহা খুশি হয়ে ওদেরকে ওই রুমে তালা মেরে রেখে সবাইকে খবর দেন।
তার পর যা হবার তাই হল সবার মাঝে উনি আরও বেশি লজ্জা পেলেন আর ওই ছেলেদের সাজা হয়েছিল বেশ কিছুদিন বিতারিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
মোদ্দা কথা আমাদের ডিপার্টমেন্টে যে কথা প্রচলিত আছে তার কোন মূল্যায়ন নেই সুতরাং ছোট ভাইদের বলব তোমরা বড়দের সম্মান করবে এমনিতেই, যারা কাছে টেনে নেয়ার তারা নিবেই আর যারা নিবে না তারা কোন কালেই কোন কারনেই নিবে না।
আমার সাথে খুব অল্প কিছু বড় ভাইদের সাথে পরিচয় হয়েছে যারা আমাকে পছন্দ করেন আমাকে জানেন বলে আর আমি তাদের সম্মান করি তাদের জানি বলে, তারা আমার জন্য কিছু করেছে এটা বলব না কিন্তু তারা আমাকে নিয়ে ভাবে এটার জন্যই আমি খুশি।
আজ রেগিং নিয়ে লিখছি যদিও এটা আরও আগে লিখা উচিৎ ছিল যখন কিনা প্রথম ভর্তি হয়েছিলাম তখন কিন্তু আজ লিখলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রেগিং বন্ধ করা হয়েছে অনেক জায়গায় লেখালেখি হচ্ছে এটা নিয়ে। শুনেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও রেগিং বন্ধ করা হয়েছে কিন্তু তার সত্যতা কত টুকুন জানি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।