২০০৫ সালে আমি, মামুন ও শরীফ—আমরা তিন বন্ধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম।
আমি ও মামুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে উঠলাম, দূর সম্পর্কের এক বড় ভাইয়ের সুবাদে। শরীফ উঠেছিল সালাম বরকত হলে।
উঠতে-না-উঠতেই পড়লাম এক বিড়ম্বনায়। হলের বড় ভাইকে সালাম না দেওয়ার কারণে অনেক আপত্তিকর কথা শুনতে হয় আমাকে।
সবাই আমাকে দেখে বলতে শুরু করলো, “নয়া পোলাটার ভদ্রতার কোনো বালাই নেই। এখানে পড়াশুনা করবে কি করে?”
ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে পড়ি আরেক বিপদে। পাঁচ-ছয় জন বড় ভাই আমাকে ঘিরে ধরলেন। প্রথমে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এরপর বড় ভাইয়েরা যা বলেন তাই করতে থাকলাম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই বলে ওঠেন, “তুই কি প্রেম করিস?” আমি ভয়ে ভয়ে বলি, “না। ” আরেকজন বলে, “তুই তোর বড় আপুকে প্রেমের প্রস্তাব দিবি। ”
আমি কখনও ভাবতে পারিনি যে, এই ধরনের মহা সমস্যায় পড়তে হবে আমাকে। ভয়ে ভয়ে আমি বড় আপুকে প্রেমের প্রস্তাব দেই। তারপর আর কি!
শুধু আমি নই, আমার মতো মামুনও পড়েছিল একই সমস্যায়।
তার সমস্যা ছিল আরো ভয়াবহ, ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মামুনকে বলে সাদা কাগজে অশ্লীল শব্দ লিখতে এবং সেই কাগজে বড় আপুদের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে।
মামুনকে পশুপাখিদের ডাক নকল বলে। মামুন কোনো রকমে ছাগলের ডাক নকল করে রক্ষা পায়। এরপরও থেমে থাকেনি।
বড় ভাইদের একজন মামুনকে বলে, “মামুন মনে করো, আমার নাম দোলা। তখন তুমি আমাকে কি বলে ডাকবে?” সবশেষে কান-ধরে উঠবস করার পর মামুন এই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পায়।
তবে বন্ধু শরীফের কাহিনীগুলো আরো ‘নির্মম’। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরা তাকে একটি সিগারেট এক মিনিটে টেনে শেষ করতে বলে। যথারীতি শরীফ তা পারেনি।
কোনো রকমে মোরগ লড়াইয়ের খেলা দেখিয়ে সে যাত্রায় রেহায় পায়।
এই হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের সামান্য কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা।
রবিউল ইসলাম আমার খুব প্রিয় এক বন্ধু। আমাদের কাছ থেকে এসব তিক্ত অভিজ্ঞতা শোনার পর, সে আর পরীক্ষাই দিতে আসেনি জাবিতে।
সূত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।