ব্লগে লেখা প্রায় ভুলেই বসেছিলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ র্যাগিং এর একটা খবর দেখে আবার কী-বোর্ডের উপর আঙ্গুল চালালাম বহুদিন পর। চাকুরির কাজে জীবিকার প্রয়োজনে আজ আমি আমার প্রিয় জাহাঙ্গীরনগর থেকে প্রায় ৩৫০ কি.মি দুরে। ৩৪ ব্যাচের ছাত্র হিসেবে আমার ক্যাম্পাস জীবন ১৮ এপ্রিল, ২০০৫ থেকে। এরপর পড়াশুনা শেষ করে চাকুরি-কাজের চাপে অনেক দূরে চলে আসলেও আমার মন-প্রাণ জাবি জুড়ে।
গত কাল জাহানারা ইমাম হলের র্যাগিং এর কথা দেখে আবার ও জাবি আমাকে বাধ্য করলো এর এর সম্পর্কে কিছূ কথা বলতে। জাহাঙ্গীরনগর বাংলাদেশের একমাত্র ক্যাম্পাস যেখানে সবাই তার নিজ মতামত খোলাখুলি ভাবে প্রকাশ করতে পারে। আর র্যাগিং এর মত একটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বর্তমান জাবি প্রসাশন এবং ছাত্রছাত্রী বর্তমানে যথেষ্ট সোচ্চার। সেখানে র্যাগিং এর মতো একটি মুখরোচক কাহিণী তৈরী করে তা দিয়ে গুজব ছড়ানোর মতো মানসিকতা যারা পোষন করেন তাদের বলছি, আপনার বোনকে কি আপনে যেকোন প্রয়োজনের খাতিরে নোংরা গল্পের নায়িকা বানাবেন ? নাকি তার যেকোন অসহায়তার সুযোগ নিয়ে নিজে নিজে লাভবান হবার চেষ্টা করবেন ? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি গর্ব করে বলতে পারি, বড়/সিনিয়র ভাইবোন দের সাথে পরিচয় হওয়া বা তাদের সাথে প্রথম সাক্ষাতে মজার কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে পুরো ক্যাম্পাসের জীবনে তা মনে রেখে সামনে এগিয়ে চলাকে র্যাগিং বলে না। আজকালকার দিনের কিছু সংখ্যক ফার্মের মুরগীর(আক্ষরিক অর্থেই) অহেতুক ভীতি এবং তাদের বোকা** মার্কা অ্যাটিচ্যুডের সুযোগ নিয়ে একটি গোষ্ঠী আমার / আমাদের জাহাঙ্গীরনগর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
৬ বছর ক্যাম্পাস জীবনে র্যাগিং এর এমনতো কোন ঘটনা শুনিনি যাতে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেছে ! আমি নিজেই তো ৭/৮ বার র্যাগ খেয়েছি। তাতে আমি মরে গেছি ? বরং চলার পথে বড়দের সাথে আরও গভীরভাবে মেশার সুযোগ পেয়েছি। আমার মতে জাহাঙ্গীরনগরের এই সপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তির যোগ্যতা যাদের হয়নি, তারা ছোটলোকের মতো পিছন থেকে এইসব রটনা/গুজব রটিয়ে তাদের মনের জ্বালা মেটাচ্ছে। আর আগেই বলেছি, এই রটনার প্রধান কাস্টমার হলো সেইসব ফার্মের মুরগী, যারা ড্যাডি-মাম্মির কোল থেকে বের হয়ে এসে বিভিন্ন অ্যাটিচ্যুডের মাধ্যম্যে তাদের নিজেদের টোপ হিসেবে তুলে দিচ্ছে গুজব আলাদের কাছে। আমি বলতে পারি, এই সব ফালতু কেরামতিতে কোন লাভ হবে না।
জাহাঙ্গীরনগর তার আপন মহিমায় সদা উজ্জ্বল থাকবে। জাবি'র দরজা সবার জন্য খোলা। এসে দেখে যান জাবি'র ভালোবাসা, জাবি'র আন্তরিকতা. . . । এই সব ফালতু কাজ করার আগে বিবেককে (যদি থাকে) প্রশ্ন করুন, যে প্রশ্নটা আমি আপনাকে/আপনাদের লেখার শুরুতে করেছিলাম ? আছে উত্তর দেয়ার সাহস ? আছে . . . . .?? ??
সুলতান
৩৪ তম ব্যাচ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।