আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশিখর তেওকারাদং কিংবা তাজিংদং নয় । প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশিখর ত্লাংময় (বানানটা ত সংযুক্ত ল হবে) স্বপ্নচুড়া

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

(এখনো পর্যন্ত এ খবরটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নি, কিংবা কোন মিডিয়াতে খবরটি আসেনি। তারমানে প্রথম এই খবরটি সামহোয়ারইনব্লগে প্রকাশিত। ঠিক এই লেখাটির প্রকাশসত্ব সংরক্ষিত এবং অনুমোদন সাপেক্ষ) অনেকেই এখনো জানেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত শিখর কেওকারাদং (বানানটা কেওকারাডং নয়)। আবার অনেকেই বলে থাকেন তাজিংদং (বানানটা তাজিংডং নয়) হচ্ছে সর্বোচ্চ পর্বত শিখর। জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) দিয়ে মেপে দেখা গেছে কেওকারাদং এর উচ্চতা ৩১৯৪ ফিট।

আর তাজিংদং এর উচ্চতা ৩১৮৪ ফিট। অথচ জিপিএস এর রিডিং এর মিসটেক ১৫ ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সুতরাং খুব জোর দিয়ে বলা যাবে না কোনটি সর্বোচ্চ পর্বতশিখর; কেওকারাদং নাকি তাজিংদং? অবশ্য সরকারী হিসেবে কেওকারাদং এর উচ্চতা ৩১৭২ ফিট। জিং ফালেন পৃথিবীর সেরা পর্বতারোহীদের একজন। এই ব্রিটিশ ভদ্রলোক পৃথিবীর উচু উচু পর্বতশৃঙ্গ আরোহন করেছেন।

তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশে নতুন একটি পর্বত শৃঙ্গে আরোহন করেন। পরে তিনি তার গাইডকে বলে যান যে এই নতুন পর্বতশৃঙ্গই হিসাব মতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হবে। জিং ফালেনের গাইডের নাম রামমং মাস্টার। তিনি তাজিংদং এর পাশেই একটি গ্রামের অধিবাসী। তিনি পরবর্তীতে বিভিন্ন মানুষের কাছে বলে বেড়ান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংদং নয়, অন্য একটি।

এই কথাটি মুখে মুখে প্রচারিত হতে হতে জানতে পারেন কিছু পর্বতআরোহী। এদের মধ্যে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব, এক্সটিমিস্ট এবং বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট এক্সপ্লানডেশন ফোরামের পর্বতআরোহীরা রয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী হয়ে পড়ে। তারা গুগলআর্থে বিষয়টি নিয়ে সার্চ দিয়ে দেখেন আসলেই জিং ফালেনের আরোহন করা পর্বতটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। তখন তারা এ পর্বতে আরোহনের ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ে।

ঢাকা থেকে ৭ জনের একটি পর্বাতারোহী দল রওনা দেয় ১৯ ডিসেম্বর। এরমধ্যে ৫ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী পর্বতারোহী। বাংলাদেশের খ্যাতনামা ট্রেকার ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে তারা এ পর্বত আরোহন অভিযানে যান। এ দলে আরো ছিলেন পর্বতারোহী সজল খালেদ। দলটি ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের শেষ থানা বলে প্রচলিত থানচি তে পৌছায়।

পরবর্তীতে তারা প্রয়োজনীয় কার্য্যক্রম গ্রহণ করে পর্বত আরোহনের দিকে এগিয়ে যায়। দুর্গমপূর্ণ পর্বত আরোহনের পর দলটি ২৫ ডিসেম্বর সাফল্য পায়। ২৫ ডিসেম্বর সকাল ৯টা ৪৮ মিনিটে প্রথম দলের নেতা ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশের নতুন সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে আরোহন করেন। পরবর্তীতে আরোহন করেন সজল খালেদ। পরে অন্যান্য সদস্যরা আরোহন করে।

দলটি বিভিন্ন দিক থেকে জিপিএস দিয়ে পর্বতশৃঙ্গটির উচ্চতা মেপে দেখেছেন। তারা নির্ণয় করেছেন এই পর্বত শৃঙ্গটির উচ্চতা ৩৪৬১ ফিট। তার মানে এই পর্বতটি কেওকারাদং থেকে প্রায় ৩০০ ফিট বেশি উচু। দলটির সদস্যরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ শেষে ২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরে আসেন। এরইমধ্যে বাংলাদেশের নতুন এই সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটির নাম দেয়া হয়েছে।

বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাবের পর নাম ঠিক করা হয় “ত্লাংময় স্বপ্নচূড়া” (বানানটা ত সংযুক্ত ল আকার হবে)। ত্লাংময় (বানানটা ত সংযুক্ত ল আকার হবে) একটি বম শব্দ। বম চাকমাদের মতোই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠি। শব্দটির মানে সুন্দর পাহাড়। পর্বাতারোহী দলটির অভিযান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে প্রথমবারের মেতা বাংলাদেশিদের আরোহণ নিশ্চিত করলো।

পর্বাতারোহী দলটিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.