আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিডর দুর্যোগে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটি @ প্রতি : রাগ ইমন

http://aloukikhasan.blogspot.com

রাগ ইমন তার পোস্টে কমেন্ট করেছে এইরকম অলৌকিক হাসান, দেশের প্রতি প্রচুর দায়িত্ব বোধ করেন বলেই জানতাম। "দেশকে যদি মা মানেন, মায়ের বিপদের দিনে আপনি কোথায়?"। চ্যানেল এস এর পক্ষ থেকে কি করলেন, একটা ছোট্ট হলেও আপডেট আশা করেছিলাম কিন্তু। আর আপনি ভালো লেখেন, একটা ভিডিও আপলোড করে কোন মতে দায় সারলেন? আশা করি, সিডার নিয়ে আপনাদের/ লন্ডনের কর্মকান্ড নিয়ে একটা পোস্ট অন্তত দেবেন । ------------------------ সিডরের আপডেট আশা করছিলা নাকি? বলো নাই তো।

জি-টকেও জিগাইতে পারতা। তয় হঠাৎ কইরা এতোদিন পর আমার কাছে আপডেট জানতে চাইছ বইলা সাধারণ ব্লগাররা টাসকি খাইলেও খাইতে পারে। তোমার কমেন্টের মধ্যে কেমন যেন 'এইতো হালা অলৌকিকরে ধইরা ফালাইছি, হুদাই দেশ লইয়া ফাল দেয়, মাগার কিছুই করে না' টাইপের একটা গন্ধ পাইছি। যদিও অনেক দেরিতে গন্ধটা ছড়াইছ। যাউগ্গা, তারপরও জানতে চাইছ বইলা হাল্কা কিছু কই।

জানোই তো লন্ডন হইল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা। যদি বাংলাদেশী ধরো তাইলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা। সিডর উপলক্ষ্যে এখানকার কমিউনিটির টিভি-রেডিও-সংগঠনগুলো ফান্ড রাইজ করেছে। চ্যানেল এস বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে ১ মিলিয়ন পাউন্ড বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে কালেক্ট করেছে। এবং এদের ত্রাণ কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের জন্য দুইজন প্রতিনিধিকেও পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশে।

অন্যান্য টিভি যেমন বাংলা টিভি, এটিএন ইউকে, চ্যানেল আই ইউকে এরাও আলাদাভাবে ফান্ড কালেক্ট করেছে। বাংলাদেশী বিভিন্ন স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনগুলো কনসার্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডোনেশন কালেক্ট করেছে। এখানকার শিল্পী সমাজ বাউলগানের আসরের সমস্ত পয়সা দান করেছেন। সমগ্র ইউকের বাংলাদেশী মালিকানাধীন প্রায় ১২ হাজার রেস্টুরেন্টের প্রতিটি টেবিল থেকে ১ পাউন্ড করে সংগ্রহ করেছে। গড়পরতায় প্রতিটি রেস্টুরেন্টে মিনিমাম যদি ৫০টি টেবিল থাকে তাহলে একটু অংক করে দেখে নাও বাংলাদেশী টাকায় কতো উঠল।

এছাড়াও প্রতিটি রেস্টুরেন্টের মালিক-কর্মচারী তাদের একদিনের বেতন দিয়েছেন। বিভিন্ন জেলাভিত্তিক ও অঞ্চলভিত্তিক (যেমন, ওল্ডহ্যাম বাঙালি এসোসিয়েশন, গ্রেটার সিলেট এসোসিয়েশন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন) সংগঠনগুলো তাদের উদ্যোগে প্রচুর পাউন্ড দেশে পাঠিয়েছে। লন্ডনে প্রচুর বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে মসজিদ রয়েছে। সেসব ছাড়াও প্রতিটি মসজিদে সিডর আক্রান্তদের জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে এবং ফান্ড কালেক্ট করা হয়েছে। যেসব কর্মজীবী বাঙালি এখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান(বাঙালি প্রতিষ্ঠান না), সুপারমার্কেট (যেমন টেসকো, সেইন্সবারি), আছেন তারা স্ব স্ব উদ্যোগে ফান্ড কালেক্ট করেছেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রতিদিনই প্রচুর অর্থ জমা হচ্ছে এবং সোনালী ব্যাংক ইউকে সরকারের ত্রাণ তহবিলে টাকা পাঠানোর জন্য কোনোরূপ কমিশন গ্রহণ করছেন না। কিছু কিছু বাঙালি মানি এক্সচেঞ্জ কম্পানিগুলো কমিশনের ক্ষেত্রে রেট কমিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও বাঙালি ব্যারোনেস পলাউদ্দিন হাউস অফ লর্ডসে সিডর নিয়ে কনফারেন্স করেছেন। সেখানে চ্যানেল এস ভিডিও প্রেজেন্টেশন করেছে। এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এখন আসো আমার কথায়। কইলা যে আমি ভিডিও আপলোড কইরা দায়সারা কাম সারছি। কি করুম কও, আমি তো হুদা জনপ্রিয়তা অথবা দেশপ্রেম দেখাই না। আকাইম্যা না থাইক্কা কামে থাকি। আমি আমার প্রফেশনের জায়গা থেকেই দেশপ্রেম দেখাইছি।

বিভিন্ন প্রকার প্রোমো, ফিলার, নিউজ এগুলা বানাইছি। এখানকার বিবিসি, চ্যানেল ফোরে পাঠাইছি। হাউজ অফ লর্ডসের ভিডিও প্রেজেন্টেশনে এইগুলা দেখানি হইছে। বিভিন্ন তথ্য এসএমএস কইরা মোটামুটি সবাইরে আপডেট রাখছি। যদিও সবাই এইসময়ে নিজেরাই আপডেট থাকার চেষ্টা করছেন।

এইগুলা করনের ফাঁকে ঢাকায় ছোট্ট কইরা একটা ফুন কইরা বাপজানরে দিয়া ত্রাণ তহবিলে দশ হাজার জমা দিছি। হাচাই কই এর বাইরে আর কিছুই করি নাই। সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশের যে কোনো দুর্যোগের সময় এগিয়ে আসেন। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় লন্ডন তথা পুরো ইংল্যান্ডের ভূমিকা থাকে সবচেয়ে বেশি। উপরের প্রবাসীদের যে উদ্যোগগুলোর কথা বললাম তা থেমে যায়নি।

এখনো চলছে। বি.দ্র. : ব্লগে যুক্তরাজ্যের অনেক ব্লগার রয়েছেন। সিডর নিয়ে আপনাদের উদ্যোগ বা কর্মকান্ডের কথা এই পোস্টে জানিয়ে যেতে পারেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।