হৃদরোগ হচ্ছে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বেশি ঘাতক। ১৫ বছর আগেও এমন একটা ধারণা ছিল যে, যদি একবার কারও এ রোগ হয় তাহলে রোগটি শুধু বেড়েই চলে। এমনটা মনে করা হতো যে, এটা হচ্ছে লাগাতার বেড়েচলা এক রোগ। গত বেশকিছু দশক ধরে আমরা এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলতে দেখেছি। বিরাট সংখ্যায় লোকেদের হার্টঅ্যাটাক হয় আর তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ লোক হাসপাতাল যাওয়ার আগেই মারা যায় ।
ভালোভাবে অধ্যয়ন করলে এটা জানা যাবে যে, এ রোগের মুখ্য কারণ হচ্ছে হৃদয়ের ধমনীগুলোয় জমে থাকা ফ্যাটের অর্থাৎ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগি্লসারাইডসের লাগাতার স্থায়ী রূপে জমা হওয়া আর এই জিনিসটাকে আমরা নিজেদের আধুনিক জীবনশৈলী দ্বারা আরও বাড়িয়ে তুলেছি।
আমরা শারীরিক পরিশ্রম করা এখন প্রায় বন্ধই করে দিয়েছি। সুতরাং আমরা যে তেল, ঘি বা অন্য ফ্যাট দিয়ে তৈরি খাবার খাই, সেগুলোকে আমাদের শরীর পূর্ণরূপে প্রয়োগ করতে পারে না। অনুপযুক্ত এবং অতিরিক্ত ফ্যাট, অন্য তত্ত্বগুলোর সহায়তায়, যেমন আধুনিক জীবনের চাপ, ধূমপানের অভ্যাস এবং এরকমই আরও অনেক কারণে শরীর আর হৃদয়ের ধমনীগুলোয় জমা হতে শুরু করে, যার ফলে হৃদয় রোগের উৎপত্তি হয়। একটা ভালো খবর হচ্ছে- আমরা নিজেদের জীবনশৈলীতে ছোটখাটো সঠিক পরিবর্তন নিয়ে এলে বেড়েচলা হৃদয় রোগকে আটকাতে পারব তাই নয়, তার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনাকেও কমাতে পারব।
এ কথা বলা যায় যে, এখন ফ্যাট আর কোলেস্টেরল, যেগুলো হৃদয়ের ধমনীগুলোয় রক্তের প্রবাহকে বাধা প্রদান করে সেগুলোকে সরানো যেতে পারে। এ লক্ষ্যে নতুন যেসব চিকিৎসা পদ্ধতি এগিয়ে চলেছে সেগুলোর মধ্যে হলিস্টিক অন্যতম। এ চিকিৎসায় রোগী নিজেই চিকিৎসক, ডাক্তার শুধু নিমিত্ত। তারা কেবল সঠিক নিয়ম এবং রোগীকে সুস্থ হওয়ার পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন। তার আগে মন নিয়ন্ত্রণের জন্য চাই সঠিক উপায়ে মেডিটেশন।
মানসিক চাপই মানুষের অসুখ ও অশান্তির অন্যতম কারণ।
কারা হবেন উপকৃত : যার এক বা একাধিকবার হার্টঅ্যাটাক হয়ে গেছে িযিনি এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারির জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছেন, বিশেষতঃ
হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা বেশি কমে গেলে * বেশি বয়স িমাল্টিপল ব্লকেজ * মাইক্রোভাসকুলার ব্লকেজ * কিডনির কার্যকরী ক্ষমতা কমে গেলে * হেপাটাইটিস বি পজিটিভ হলে * পায়ের আর্টারিতে অত্যাধিক ব্লকেজ থাকলে * কেরোটিড আর্টারি ও কিডনি আর্টারিতে ব্লকেজ থাকলে * এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারির পর যার পুনরায় ব্লকেজ ধরা পড়েছে * যিনি ইতোমধ্যে এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করেছেন এবং পুনরায় যাতে ব্লকেজ না হয় * যিনি ভয় পান * যিনি উচ্চ রক্তচাপে (হাইপার টেনশন) ভুগছেন * যার অস্বাভাবিক মাত্রায় রক্তে কোলেস্টরল বিদ্যমান * যিনি ডায়াবেটিসে ভুগছেন, রক্তে শর্করার মাত্রা ঊঁচু * যিনি অসম্ভব মুটিয়ে গেছেন, চলা ফেরায় অসুবিধা * সে সব কর্মজীবী যাদের অত্যন্ত মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়। হলিস্টিক চিকিৎসায় যে সব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডায়েট, ম্যানেজমেন্ট, স্ট্রেস ফ্রি টেকনিক, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম, নিউরোবিক, আকুপ্রেশার।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস,সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ফোন : ০১৭২১৮৬৮৬০৬, ০১৮৪৩৭০৮৯৪৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।