*প্রথম পাতায় আসায় আবার পোস্ট দিলাম*
আমার জন্ম ১৯৭১ সালের বেশ পরে। তাই গর্বের বলুন আর দুঃসহ যন্ত্রনার বলুন, সেই ইতিহাস প্রত্যক্ষ করা হয়নি।
সেই সংগ্রাম, সেই লড়াই দেখতে না পারার আফসোস আমার যাওয়ার নয়। তবে অন্তত নির্মমতার অংশটুকু দেখার আর কোন বাসনা আমার নেই।
এমন নয় যে খুব উদগ্রীব হয়েছিলাম, নির্মমতাটা দেখার জন্য।
তারপরও দেখতে হয়েছে।
পহেলা অক্টোবর ২০০১। মাঝরাতের আওয়ামীলিগের বীরপুরুষরা টের পেয়ে গেলেন, ভোট যুদ্ধে যে কোনভাবেই হোক জেতা হচ্ছে না। জাতীয় নেতাদের হাল জানি না। তবে ভোর হওয়ার আগেই আমাদের বাগেরহাট শহর থেকে বেমালুম লাপাত্তা হয়ে গেলেন তারা।
*আগে পিঠ বাচারে ভাই*
নিজেদের পিঠটাকে কুলোয় আড়াল করে বেশ সরে পড়লেন। কিন্তু আর যারা রয়ে গেলেন? যাদেরকে আগের দিনও আওয়ামী নেতারা হুমকি দিয়ে এসেছেন, নৌকায় ভোট না দিলে কিন্তু খবর আছে। (পাল্টা হুমকিও ছিল, ভোট কেন্দ্রে গেলে কিন্তু খবর আছে)। কেউ নৌকায় দিলেন, কেউ দিলেন না। তাতে খবর আটকালো না।
কদিন পরেই হিন্দুদের দূর্গা পূজা। ভোর হতেই বিপুল বিক্রমে ঝাপিয়ে পড়লো বিএনপির পাতি নেতারা। শুরুটা হলো গ্রাম এলাকা থেকে। সাইনবোর্ড নামে একটা বাজারে, বাধাল বাজার, রামপাল, পেড়ি খালি্- সবজায়গাতে ধরে ধরে আনা হলো স্থানীয় আওয়ামী পাতি নেতাদের। প্রকাশ্যে জুতোর বাড়ি আর কান মলা হলো।
তাতে আমার কোন আফসোস ছিল না।
বিকেল হতে ব্যাপারটা দাবানলের মতো গ্রামের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লো। আমাদের বাধাল ইউনিয়নের এক মেম্বরের (নামটা বলবো না, ভদ্রলোক এখনও দেশেই আছেন) মেয়েকে ধর্ষন (বিএনপি নেতারা পরে বলেছেন, ধর্ষন না সামান্য গায়ে হাত) করা হলো ওই রাতে মেম্বরের সামনে।
একটা ঘটনা আমি নিজের চোখে দেখেছি। (এমনিতে চোখের সামনে দু-চারটে চড় থাবা বা লাঠি পেটা হতে দেখাটা বর্ননাযোগ্য নয়)।
আমাদের কচুয়া থানা ছাত্রলীগের এক নেতার বাবা (একই কারনে নাম বললাম না)। নেতাটি মোটেও শুশীল প্রকৃতির নয়। তবে তার শিক্ষক বাবার ভাবমুর্তি একটু অন্যরকম। অন্তত সেদিন পর্যন্ত ছিলো। ভদ্রলোককে সাইনবোর্ড বাজারে সাইকেল থেকে নামিয়ে পেটানো হলো ছেলের অপরাধে! সর্বশেষ দৃশ্য, চিৎকার করতে করতে ভদ্রলোক দৌড়াচ্ছেন।
লুঙ্গিটা খুলে গেছে। পিছু নিয়েছে হয়তো তারই কোন ছাত্রের ছেলে।
এখনও চোখ বুঝলে ওই অর্ধনগ্ন শরীরটা চোখে ভেসে আসে।
একটি ফুটনোট: আমার জানা মতে, আমাদের গ্রাম থেকে পাঁচটি হিন্দু পরিবার দেশ ছেড়ে গেছে পহেলা অক্টোবরের প্রতিক্রিয়ায়।
এরপর আর একাত্তরের জন্য আফসোস থাকে???
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।