যেতে চাও যাবে, আকাশও দিগন্তে বাঁধা, কোথায় পালাবে!
এর আগের পর্বে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রস্তাবিত দুটি বিষয় ছিল টিউশন ফি বৃদ্ধি করা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা বিনিময় কার্যক্রম চালু করা। টিউশন ফি এর ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত শিক্ষা ঋণ পদ্ধতিও প্রস্তাব করা হয়েছিল। এই পর্বে আরো তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি।
# ৫। বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তন করে জাতীয়ভাবে সমন্বিত শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি চালু করা।
----------------------------------------------------
বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি অস্বচ্ছ এবং অনেক ক্ষেত্রেই মেধা নির্ভর নয়। বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগের পরিবর্তে ভোটার নিয়োগের যে ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা বন্ধ করতে না পারলে মান সম্পন্ন শিক্ষার আশা করা যায় না। মেধার পরিবর্তে দলীয় আনুগত্য শিক্ষক নিয়োগের মাপকাঠি হলে নিয়োগকৃত শিক্ষকগণ শিক্ষা ও গবেষণার পরিবর্তে দলীয় স্বার্থরক্ষার দিকে অধিকভাবে মনোযোগী হন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হারাচ্ছে শুধু পাঠদান ও গবেষণায় মনোযোগী নিষ্ঠাবান শিক্ষক মন্ডলী থেকে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আদলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করা যেতে পারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দ্বারা।
প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আওতাভূক্ত করা যেতে পারে।
# ৬। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য শিক্ষকতার মৌলিক কোর্স চালু
-----------------------------------------------------
উন্নত বিশ্বে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার আগে পি এইচ ডি ও পোষ্ট ডক্টরাল গবেষণা ও ট্রেনিং এর মাধ্যমে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানে প্রয়োজনীয় প্রস্ততি লাভ করেন। আমাদের দেশের বাস্তবতায় সেটি সম্ভব না হলেও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সকল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরুর পূর্বে ৪-৬ মাস মেয়াদী শিক্ষকতার মৌলিক কোর্স সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই পাঠক্রমের একটা বড় অংশ পড়ানোর দায়িত্ব থাকেন অনভিজ্ঞ নতুন শিক্ষকগণ যার ফলে শিক্ষার্থীগণ অনেক সময় বন্চিত হন মানসম্পন্ন শিক্ষা থেকে।
এর ব্যতিক্রম আছে, কিন্ত প্রয়োজনীয় ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হলে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান এর মানের সার্বিক উন্নতি হবে।
# ৭। কোর্স এর মান, শিক্ষক এর পাঠদানে সক্ষমতা ও কার্যকারিতা এবং মেধা যাচাই প্রক্রিয়া বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ফিডব্যাক দেয়ার অধিকার প্রদান।
---------------------------------------------------
এটি সময়ের দাবী এবং অধিকাংশ আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি চালু আছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকগণ কোর্সের প্রয়োজনীয় পরিমার্জন বা পরিবর্ধন করতে পারবেন এবং শিক্ষকমন্ডলী পাঠদানের জন্য আরো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।
শুরুতে সীমিত আকারে বা পরীক্ষামূলক ভাবে এটি চালু করে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এটি রিভিউ করা যেতে পারে ।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।