ফিনল্যান্ডে দুর্নীতি বিরোধী একটি আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধানরা সেখানে সমবেত হয়েছেন, সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল নিজ নিজ দেশের দুর্নীতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা এবং সেটা কিভাবে কমানো যায় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। মঞ্চে অনেক চেয়ার, লোকজন ভর্তি অডিটোরিয়াম, একটি চেয়ার খালি, পাশরে চেয়ারে বসে আছেন নাইজেরিয়ার রাষট্রপ্রধান। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান অডিটোরিয়ামে ঢুকে দেখেন এই অবস্থা। শেষে নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের পাশে গিয়েই বসলেন।
পরিচয় হলো তাদের মধ্যে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান বললেন, ভাই পর পর তিনবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হ্ওয়ার পরে এসব সম্মেলনে আসতে একটু লজ্জা লাগে, কিন্তু কি করবো সরকারী টাকায় বিশ্বভ্রমনের সুযোগ হাতছাড়া করলাম না.................। এভাবেই কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি পেল। সম্মেলন শেষে নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধানকে তার দেশে আসার আমন্ত্রন জানালেন।
মাস তিনেক পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান আবার সরকারী ভ্রমনের অংশ হিসেবে এবার নাইজেরিয়া গেলেন। সেখানে নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান তাকে দুপুরের লাঞ্চের জন্য তার বাংলোয় ডাকলেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধানের বাংলোয় গিয়ে তো অবাক!! একি কান্ড!! এত বড় বাংলো!!
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বাংলো দেখে কৌতুহল বেড়ে গেল। তিনি বললেন, ভাই আপনার দেশে তো সীমাহীন ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব তারপরেও আপনি এতবড় বাংলো করলেন কি করে?? জবাবে, নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান একটি বাইনোকুলার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে দিয়ে বললেন, এই ঐদিকে দ্যাখেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বাইনোকুলার দিয়ে দ্যাখেন অনেকদূরে একটা নদীতে কয়েকটা খুটি দেখা যাচ্ছে। তিনি কিছুই বুললেন না। তিনি বললেন ঐদিকে তো নদীতে কয়েকটা খুটি ছাড়া আর কিছুই নাই।
এবার নাইজেরিয়ান রাষ্্রটপ্রধান বললেন, হ্যা ঐথানে একটি বিরাট ব্রিজ এর বাজেট ছিল, ঐ কয়েকটা খুটি তৈরী করে বাকি টাকাটা দিয়ে এই বাংলো বানিয়েছি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান তো অবাক!!
এবার বিদায়ের পালা। তিনি নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রন জানিয়ে দেশে চলে আসলেন। দেশে ফিরে মহা চিন্তার মধ্রে পড়ে গেলেন। নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান দেশে আসলে তো মুখ দেখানো যাবে না।
তাকে কি দেখাবেন এই ভাবেন সবসময়। অবশেষে একটা বুদ্ধি বের করলেন। এবং ছয় মাস পরে নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধানে বাংলাদেশে আসার জন্য আবার অনুরোধ করেলেন। দু’সপ্তাহ পরে নাইজেরিয়ান রাষ্ট্রপ্রধান আসলেন। তাকে এবার দুপুরের লাঞ্চেরে জন্য দাওয়াত দিলেন একটি বাংলোয়।
নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান সেই বাংলে গেলেন। বাংলোতে গিয়ে তিনিও বিস্ময়ে অবাক হলেন। দ্যানের বিশাল, বিশাল একটা প্রাসাদ। তার নিজের বাংলোর চেয়ে কমপক্ষে পাচ গুন বড় আর অনেক বেশি সুন্দর। বাংলোর নিজস্ব বন (সরকারী খরচে), সরকারী ব্যাংকের শাখা, সুইমংিপুল, হ্যালিপ্যাড, ছোট রানওয়ে, আরও কত কি...।
তারও ভীষণ কৌতহুল জাগলো মনে। তিনিও লাঞ্চ সেরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে জানতে চাইলেন। আপনার দেশেও তো আমার দেশের মত সীমাহীন ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব তারপরেও আপনি এতবড় বাংলো করলেন কি করে?? এবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান ঠোটের কোনায় একটা হাসি/বিজয়ের আভা নিয়ে একটা বাইনোকুলার ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ঐদিকে দ্যাখেন। নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ঐদিকে দেখে বললে, একটা মস্ত বড় নদী আর কিছু চর এলাকা ছাড়া তো কিছুই দেখতে পেলাম না। উত্তরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বললেন, হ্যা ঐখানে একটি বহুমুখি ব্রিজ/সেতু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরো টাকাটাই এই বাংলোতে খরচ করেছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।