আগামী প্রজন্মের জন্যে স্বপ্নের বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই।
ঘটনা ১: সম্ভবত ৯৫/৯৬ দিকের ঘটনা রাজনীতি বুঝার বয়স তখনো হয়নি আমার ইমিডিয়েত বড় ভাই আমারে রাজনীতি বুজাইতে উনার লেকচার শেষ করলো "তারেক জিয়ার পকেট গরম" এই স্লোগান দিয়ে। এভাবেই জীবনে প্রথম বারের মত তারেক জিয়া সম্পর্কে পরিচিত হই।
ঘটনা ২: মোবাইল কল রেট ৭ টাকা মিনিট ২০০১ এ বিএনপি সরকার ক্ষমতা আসছে চারদিকে একই খবর তারেক জিয়ার মালিকানায় ইন্ডিয়ান এয়ার টেল বাংলাদেশে আসবে কল রেট হবে ২ টাকা মিনিট। বিএনপির সাপোর্টার হিসেবে সুযোগ পাইলেই এর কৃতিত্ব নিতে ভুল করি নাই।
সত্যি বলতে এই প্রসংগে কৃতিত্ব নেয়ার সুযোগ কমই হইছে কারন যেখানেই এই প্রশংগ আসছে আমার আগেই কেউ না কেউ (আওয়ামি/বিএনপি/সাধারণ /অসাধারণ সবাই) এ নিয়া আমার কথা গুলা বলে ফেলছে। বছর ২ পরে উল্টো সুর সবার দেশি মোবাইল কম্পানীগুলা থেকে টাকা গেয়ে তারেক রহমান তার এয়ারটেল পজেক্ট বাতিল করছে।
ঘটনা ৩: আমাদের আসনে ২০০৭এর নির্বাচনে বিএনপির পার্থী মোট ১২ জন একা একজন বিপরীতে ১১ জনের জোট। শেষে ১১ জনের মধ্য থেকে সাবেক এম্পিকে মনোনয়ন দেয়া হয়। শুরু হল নতুন খেলা বাকী ১০ জন সাথে আরো ১১/১২ জন মিলে এক মিটিংয়ে প্রার্থীর কাছে দুই কোটি টাকা চাওয়া হল নির্বাচন পরিচালনায় খরচের জন্যে।
যদিও তাদের আসল উদ্যেশ্য ছিল পার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়াক এতে তাদের পছন্দমত অন্য পার্থীকে দল বেছে নিবে। এসব দর কষাকষির এক পর্যায়ে পার্থী সাবেক এম্পিকে তারা শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে, অবশেষে সাবেক এম্পি পার্থীতা প্রত্যাহারে রাজী হন। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। ঐ দিন চারদিকে থেকে একই খবর তারেক রহমান এম্পির কাছে টাকা চাইছে তাই এম্পি ইলেকশন করবে না। কাউকে কিছু বলার সুযোগই নাই, কেউ শুনতে আগ্রহী না।
(নোট: ২০০৮এর নির্বাচনে প্রায় একই ঘটনা ঘটিয়েছে ঐ ১১ জন, প্রথমে সবাই এমপিকে সাপোর্ট পরে এম্পি অসুস্থতার কারন দেখিয়ে সরে যান তারপর ঐকই ব্যাক্তি দলের হয়ে ইলেশনের জন্যে মনোনয়ন পান। খিয়াল কইরা এইবার কিন্তু সবাই আগে থেকেই জানতো কে কিভাবে খেলবে, দ্বাদশ ব্যাক্তিও একই যার মনোনয়ন ঠেকাতে অন্যরা একট্টা)
ঘটনা ৪: কক্সবাজারে সে সময় কার সেরা হোটেল সী প্যালেস নাটক ফাটক অনেক কিছুই হইছে ঐ হোটেলে সারা দেশে ফেমাস বিলাস বহুল ঐ আধুনিক ঐ হোটেল তবে সী প্যালেস নামে না তারেক জিয়ার হোটেল নামে!! এখনো যদি গ্রামে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে কক্সবাজারের সেরা হোটেলের নাম কি বা মালিক কে এক মুহুর্ত চিন্তা না করে আপনাকে উত্তর দিবে তারেক জিয়া। ২০০৭ এর নির্বাচনে কাজ করতে গিয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয় বড় ভাই শিখিয়ে দিলেন প্রার্থীর পেশা সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলবা তারেক জিয়ার সাথে ব্যাবসায় পার্টনার হোটেল সী প্যালেস ও কয়েকটা গার্মেন্টসের মালিক। সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের সময় কই শুরু করে দিলাম প্রচারনা (নতুন প্রার্থীদের তারাতারি পরিচিত করার জন্যে এ ধরনের প্রচারনা দেশ ব্যাপী চালানো হইছে নিঃসন্দেহে বলতে পারি)।
ঘটনা ৫: দেশের প্রথম শ্রেনীর পত্রিকা থেকে শুরু করে সব ধরনের গণমাধ্যমেই সিন্ডিকেট, বিশেষ মহল, হাওয়া ভবন, মামুন সবশেষে সরাসরি তারেক রহমানের নামসহ প্রতিবেদন, গবেশনা (প্রপাগন্ডা), কলাম প্রকাশ করেছে তারেক রহমানের দুর্নীতি নিয়ে।
এসব প্রতিবেদনের বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তারা লিখেছে- যেমন 'রুপালী ব্যাংক বিক্রি' ক্রেতা অন্য কেউ নয় তারেক রহমান নামেই শুধু সৌদি রাজ পরিবার, বিদুৎ খাতে তারেকের খাম্বা ২০ হাজার কোটি টাকা লুপাট (যেখানে ৫ বছরে সরকারের বাজেট ছিল ৭হাজার কোটি টাকা), মালয়শিয়ায় তারেকের ইন্ডাস্ট্রীয়াল জোন এ ধরনের অভিযোগের ইয়ত্তা নেই।
ঘটনা ৬: তারেক রহমানের ব্যাবসায়িক পার্টনার মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল উদ্দিন গং সরকারের প্রথম সাপ্তায় কিন্তু দেড় মাস পর তাকে আদালতে হাজির করা হয় এই দেড় মাস চলে তারেক রহমান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা আর মনপুত তথ্য না পাওয়ায় দিন রাত নির্যাতন এর মধ্যে তিন বার তাকে ক্রস ফায়ারের জন্যে ফায়ারিং স্পটে নিয়ে যাওয়া হয় তথ্যের জন্যে।
ঘটনা ৭: ৭ই মার্চ, ২০০৭ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। কিভাবে গ্রেফতার করা হয় সবাই জানেন কমবেশী। ২৩ মার্চ ৬ ঘন্টা ব্যাপী তল্লাশি চালানো হয় হাওয়া ভবনে।
জব্দ করা হয় পেপার কাটিং, সিডি, ফ্লপি, কয়েকটা কম্পিউটার। গ্রেফতারের পরবর্তী দুই সাপ্তায় প্রায় সব পত্রিকায় যেসব অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টতার সংবাদ বের হয়- ১. মামুন ও তারেক দু'জনেই স্বীকার করেছেন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফিদ্ধকা, থাইল্যান্ড, দুবাই ও সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের একাধিক দেশে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। ২. দুবাইতে তিনি একটি মার্কেট করেছেন। ৩. দক্ষিণ আফিদ্ধকায় ১৫ মিলিয়ন প্রজেক্টে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। ৪. রয়েছে মালয়শিয়া ও সিংগাপুরে বিশাল বিনিয়োগ।
৫. দেশে তিনি টিভি চ্যানেলসহ ওয়ান গ্রুপ, জাজ ডিসি্টলারিজ, খাম্বা, টেক্সটাইল মিল, ড্যান্ডি ডাইংয়ের শেয়ার, কোকো জাহাজ, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ইত্যাদি বহু প্রতিষ্ঠানের মালিক। ৬. অপরাধ জগতের সম্রাট দাউদ ইব্রাহিমের সাথে দোস্তি।
৬ও৭ নম্বর ঘটনা বাদ দিলে তারেক রহমানের ইমেজ সংকটের জন্যে দায়ী তারেক রহমানের শুভাকাংখী ও কর্মীরা। বুঝে না বুঝেই তারা/আমরা আওয়ামী ফাদে পা দিয়েছিল/ছিলাম। নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্যে ডিম দেয়া হাসটাকে গিলে খেয়েছিলাম।
কিন্তু আমরা কি অনুতপ্ত? আমি অনুতপ্ত কারন আমি ও আমাদের বছরের পর পর উচ্চ অভিলাসী স্বপ্ন বিলাসী নিত্যকার দিনের মিথ্যা গুলিই ৬ এবং ৭ নম্বর প্রপাগন্ডা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে।
অনেকে মনে করেন তারেক রহমানের বিরোধ্যে মামলা গুলা তার ব্যাক্তিগত। কিন্তু আমি মনে করি তা মনে করি না। কারন আমাদের ছোট ছোট অভিলাস, আকাংখা ও আত্মতৃপ্ত করার মিথ্যাগুলিই তারেক রহমানের আজকের ইমেজ সংকট ও পাহাড়সম নির্যাতনের জন্যে দায়ী। আমি ও আমার মত সাধারন কর্মী ও সাধারন মানুষ তারেক রহমানকে নিয়ে সেসব মিথ্যাচার গুলি ছিল নিঃস্বার্থ ও নিঃর্লোভ।
কিন্তু যারা তারেক রহমানকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছিল বিক্রি করেছিল পন্যের মত তারা কি অনুতপ্ত? তাদের কি কোন চেষ্টা আছে তাদের দোকানটা (তারেক রহমানের ইমেজ) রক্ষার?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।