দুঃখটাকে দিলাম ছুটি, আসবে না ফিরে
পত্রিকার জগতে প্রথম আলো একটা ভিন্ন ডাইমেনশন নিয়ে আসে। পত্রিকাটি বাজারে আসার সময় কোন ঘোষণা দিয়ে আসেনি। কিছুদিন পরে দেখলাম, পত্রিকাটির ব্যাপারে অনেকেরই আগ্রহ। পত্রিকাগুলোর গতানুগতিক ধারা থেকে এটা ছিল ভিন্ন। বিশেষ করে, তরুনদেরকে আকৃষ্ট করার মত যথেষ্ট কিছু ছিল এতে।
পত্রিকার সাথে সাপ্লিমেন্টারি হিসাবে বিদ্রুপ ম্যাগাজিনের ধারণা প্রথম প্রথম আলোর কাছ থেকেই আসে। আরো অনেক অনেক ফিচার নিয়ে প্রথম আলো খুব দ্রুতই সকলের নজর কাড়ে। এমনও দেখা গেছে আলপিন ও খেলার পাতা পড়ার জন্য লোকে প্রথম আলো রাখে।
অনেক পরে আরো দুটি পত্রিকা পত্রিকা জগতে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আসে। একটি নয়া দিগন্ত অন্যটি যায় যায় দিন।
একটি হঠাৎ করেই বেশ কম দামে বাজারে আসে আর অন্যটি প্রতিদিন কোন না কোন সাপ্লিমেন্টারি দেয়া শুরু করে। নয়া দিগন্তের আরেকটি বিশেষত্ব ছিল যে, তারা বিদ্রুপ ম্যাগাজিনের পরিবর্তে ফান ম্যাগাজিন ‘থেরাপি’ নিয়ে আসে। ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মাধ্যমে লোক হাসানো সোজা অন্য যেকোন পন্থা অবলম্বনের চেয়ে। ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে যেমন মজা, তদ্রুপ শুনেও মজা।
এসব ম্যাগাজিনে লেখা থাকে, ম্যাগাজিনে বর্ণিত সকল ঘটনা কাল্পনিক; কারও সাথে মিলে গেলে তা কাকতাল মাত্র।
‘কাকতাল’ বলা হলেও এসব কাকতাল বানানো, তা কখনই কাকতালীয় নয়। কারো ব্যাপারে বিদ্রুপ করা হলে তার আত্নপক্ষ সমর্থন বা প্রতিবাদ করার সূযোগ থাকে না, কারণ ঘটনার সবই কাল্পনিক! বেশ মজা, কাল্পনিক কথার আড়ালে যাকে তাকে যা খুশি বলা যায়। ব্যঙ্গ বিদ্রুপ যেমন হয়, পাঠক প্রিয়তাও তেমন পাওয়া যায়। এ কারণেই নয়া দিগন্তের ‘থেরাপি’র ব্যাপারটা আমাকে বেশ আগ্রহী করে এবং একটা চমৎকার আইডিয়া বলেই মনে হয়। তবুও আলপিনের মত মজাদার স্বাদ যেন তাতে নেই!
আলপিনের যে কার্টুনটা নিয়ে হইচই তা যদি কোন শিশূতোষ ম্যাগাজিনে প্রকাশ হত, তাহলে কারও চোখেই এটা কোন অন্যায় হিসাবে ধরা হত না।
আলপিনে প্রকাশিত সব লেখাতেই কোন না কোন ম্যাসেজ থাকে। ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মাধ্যমে তা তুলে ধরা হয়। আলপিনে প্রকাশিত হওয়ায় এই কার্টুন আর কোন অবস্থাতেই শিশুতোষের পর্যায়ে পড়ে না। একই জিনিসের প্রায়োগিক কারণে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশিত হয়। কার্টুনটিতে কি সত্যিই রাসুলকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে, নাকি যত্র তত্র ‘মুহাম্মদ’ নাম ব্যবহারকে বিদ্রুপ করা হয়েছে নাকি মুহাম্মদের নাম যারা ব্যবহারে আন্তরিক তাদের ব্যঙ্গ করা হয়েছে? বিষয়টা বেশ কনফিউজিং মনে হয়েছে আমার কাছে।
আমি এর ব্যাখ্যা বের করার চেষ্টা করেছি মুল পত্রিকার দৃষ্টিভঙ্গি আসলে কি তার ভিত্তিতে। ব্যক্তির চরিত্রের উপরও কথার বিভিন্ন অর্থ হয়। পত্রিকাটিকে আমি যতটুকু জানি, তারা কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী। এরকম পত্রিকায় এরকম কার্টুন অনেক মানুষের মধ্যেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, হয়েছেও তাই।
আমি আসলে ঠিক জানি না, এর পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা।
ইতোপূর্বে শুনেছি, কাদিয়ানী বিরোধীদের টাকা জোগায় কাদিয়ানীরায়। এরকম একটা গ্রুপ ঈমানের আবেদনকে সামনে নিয়ে কোন গ্রুপকে উত্তেজিত করে থাকতে পারে। দেশকে অস্থিতশীল, অসহিষ্ঞু, জঙ্গি প্রমাণ করা উদ্দেশ্য হলেও হতে পারে। আমাদের ব্লগেই যেমন কিছু ইসলাম দরদী আছেন।
তবে পুরা ব্যাপার পর্যবেক্ষণে আমার মনে হয়েছে, প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
যেহেতু ঘটনা আর চেপে থাকেনি। হইচই যেই শুরু করুক না কেন এখন তা আলোচনায় চলে এসেছে। প্রতিবাদের ক্ষেত্রে সহনশীল আচরণ করতে না পারলে ষড়যন্ত্রকারীরায় সফল হবে। পত্রিকা বন্ধের আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে, বন্ধ না হলে জ্বালাও পোড়াও চালানো হতে পারে যা কখনই কাম্য নয়। কার্টুনিস্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে, পত্রিকা থেকে বহিস্কার করা হয়েছে...... এধরনের আচরণকে স্বাগত জানাই।
অপটিমাম আচরণ করতে হবে। সাময়িক লাভ বা চূড়ান্ত ক্ষতি কোনটায় যাতে না হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।