রোববার এক অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংকের ইনটিগ্রিটি ইউনিটকে ‘অপদার্থ’ আখ্যায়িত করেন তিনি, যে ইউনিটটির সঙ্গে মতদ্বন্দ্বে পদ্মা সেতুতে ঋণদাতা সংস্থাটির অর্থ আসেনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এটা আমি জোর দিয়ে বলছি, মন্ত্রী আমি থাকি বা না থাকি, বিশ্ব ব্যাংকের ইনটিগ্রিটি ইউনিটের বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করে যাব। এ ধরনের ইউনিট শুধু অসুবিধাই করে। কোনো সাহায্য করে না। এই ধরনের অপদার্থ ইউনিট কোনো উন্নয়ন সংস্থার থাকা উচিৎ নয়।
”
মুহিত এই কথা বলার সময় তার পাশে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, ‘দুর্নীতি’ নিয়ে যার দিকে অভিযোগের আঙুল ছিল বিশ্ব ব্যাংকের।
দেশের অর্থনীতির চালচিত্র উপস্থাপনের এই অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, বিদেশি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনও।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুরুর আগে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদের দিকে একবার দৃষ্টি দেন মুহিত।
এরপর পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, বিশ্ব ব্যাংকের ইনটিগ্রিটি ইউনিট যে ধীর গতিতে তদন্ত করছে, তাতে অভিযোগটির সুরাহা হতে কমপক্ষে দুই বছর লেগে যাবে।
“কিন্তু আমরা তো আমাদের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটির কাজ শুরুর জন্য ততদিন অপেক্ষা করতে পারি না। সে কারণেই বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ আমরা নেব না বলে ‘না’ করে দিয়েছিলাম। ”
দেশের বৃহত্তম নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক অর্থ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়।
এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় বিশ্ব ব্যাংক প্রকল্পে ফিরলেও ‘দুর্নীতির’ তদন্ত নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়।
তারপর সরকার বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ না নিয়েই ২৯১ কোটি ডলারের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মুহিত বলেন, “পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ক্যানসেল করা উচিৎ হয়নি। তারা যেভাবে আমাদের এই প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করেছিল- সেটা করার অধিকার তাদের ছিল না।
“পরে অবশ্য তারা বুঝতে পেরে ফিরে এসেছিল। কিন্তু আমরা যখন বুঝতে পারলাম তাদের সঙ্গে থাকলে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করতে আরো দুই বছর লেগে যাবে।
তখনি আমরা তাদের না করে দিয়েছিলাম। ”
বিশ্ব ব্যাংকের আচরণকে ‘জিহাদী’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “জিহাদী মনোভাব বড় ধ্বংসাত্মক। বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতি প্রমাণ করতে জিহাদী মনোভাব নিয়ে নেমেছিল। সেটা মোটেই উচিৎ নয়। ”
পদ্মা প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে।
“চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতুর কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। চার প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে দরপত্র জমা দেওয়ার সময় আট সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।