আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুবক যুবতী নেশার কবলে আক্রান্ত

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

মরনব্যাধী নেশার কবলে আক্রান্ত হয়ে শত শত যুবক যুবতী হচ্ছে বিপদগামী। অনেকে নেশার টাকা সংগ্রহ করতে প্রকাশ্যে করছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপকর্ম। যা সুস্থ সমাজকে ক্যান্সারের ন্যায় ক্ষত বিক্ষত করছে। বিভিন্ন উপজেলার ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে মেয়েরাই বেশী মাদকাসক্ত হয়ে নিজেরাও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। মাদকদ্রব্য ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে মৌলভীবাজার জেলায় একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

প্রভাব প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে চক্রটি সহজে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মাদকদ্রব্যের বিস্তার ঘটিয়ে অনেকটা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। আখাউড়া-কুলাউড়া রেলরুটের শমসেরনগর ও শ্রীমঙ্গল এলাকা থেকে হেরোইন,প্যাথেড্রিন, ফেনসিডিল গাঁজা ও নেশা জাতীয় (সেক্সোয়াল) টেবলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে বিভিন্ন পান দোকান থেকে হোটেল রেস্তোরা পর্যন্ত প্রকাশ্যে, কোথাও গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে দেদারছে। তাছাড়া সম্প্রতি মোবাইল ফোন এবং ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের মাধ্যমেও মাদক জাতীয় পন্য বিক্রি করা হচ্ছে বলে জনৈক মাদকসেবীর কাছ থেকে জানা গেছে। তিকারক যৌন উদ্দীপক (সেক্সোয়াল) ট্যাবলেট জেলার বিভিন্ন বড় বড় ফার্মেসীতে বিক্রি করার ফলে এসব টেবলেট উঠতি বয়সী যুবক যুবতিদের জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল শহরে গড়ে ওঠা একাধিক ড্রাগ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারও মাদকাসক্তদের সংশোধনের নামে মাদকসেবন ও বিক্রির নিরাপদ আখড়ায় পরিণত হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরের শমসেরনগর রোডের বিভিন্ন হোটেল ও হোটেলের পেছনের খালি জায়গা মাদক সেবন ও বেচাকেনার নিরাপদ স্পটে পরিনত হয়েছে। অপরদিকে শহরের শমসেরনগর বাসস্ট্যান্ড, মনু ব্যারেজ এলাকা, কাশীনাথ রোড, সৈয়ারপুর, শ্মশানঘাটসহ গোটা এলাকা, টিসি মার্কেটের পেছনের এলাকা, শ্রীমঙ্গল রোড, বেরিরপাড়, কাজিরগাঁও, উত্তর কলিমাবাদ, সদর হাসপাতালের পেছনের এলাকা, ওয়াপদা এলাকা, কাব রোড, কুসুমবাগ এলাকা, মোস্তফাপুর রোড, বড়হাট, বড়কাঁপনসহ শহরের ২৫-৩০টি স্পট মাদক সেবন ও বিক্রির জোন হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। অপরদিকে জেল গেট সংলগ্ন মোকামবাজার এলাকা, শমসেরগঞ্জবাজার, ভৈরবগঞ্জ, শেরপুরসহ শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও রাজনগরে অবাধে মাদকদ্রব্য বিক্রির ফলে গোটা মৌলভীবাজার জেলা মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়ে গেছে। যুবকদের পাশাপাশি মৌলভীবাজার শহরে কর্মরত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ধনাঢ্য-অভিজাত পরিবারগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশ তরুণীও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।

দিনে দিনে এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একাধিক মাদক নিরাময় কেন্দ্রের রোগীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ড্রাগস নেওয়া এখন তারুণ্যের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্রেফ কৌতুহল, কখনো বা বন্ধু বান্ধবদের পাল্লায় পড়ে অথবা শখের বসে অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। সুস্থ্য জীবনে ফিরে যেতে নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। তাদের অনেকেই অভিযোগ করে জানায়, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সহযোগিতা না পাওয়ায় একাধিকবার সুস্থ্য হওয়ার পরও আবার অসুস্থ্য হয়ে এই কেন্দ্রে এসেছেন।

সুস্থ্য জীবনে ফিরতে ব্যাকুল এই মাদকাসক্তরা মানষিকভাবে সেনসেটিভ (নাজুক) বা অভিমানী থাকে। তাই তাদের ঘৃণা না করে বরং তাদের সঙ্গে বন্ধু সুলভ আচরণ করা প্রয়োজন। জেলার মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ও এর প্রতিকার নিয়ে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও কার্যকরী পদপে না নেওয়ায় ক্রমশ মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন-শৃগ্ধখলা কমিটির একাধিক সদস্য জানান। ডিবি ও থানা পুলিশ মাঝে মাঝে কিছু অভিযান চালালেও ধারাবহিকতা না থাকায় অভিযান স্তবির হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে জনৈক পৌর কমিশনার বলেন, মাদকের ভয়াবহতা এতই প্রকট হয়ে উঠেছে, এখনই তা প্রতিরোধ না করলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ভালো ছেলে কিংবা মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাদক নিয়ন্ত্রনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছে। মাদকের বিভিন্ন উৎসস্থল নির্ধারণ করে সেগুলো নির্মুলের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি মনে করছেন মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রনের মধ্যে চলে এসেছে। জেলা প্রশাসক আলকামা সিদ্দিকী জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর এ ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে। তার মতে মাদক নিয়ন্ত্রন করতে হলে সচেতন মহলের সবাইকে নিজস্ব অবস্থান থেকে কাজ করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলা প্রয়োজন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।