আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিটেকটিভ গল্প: সেলিব্রিটি প্রবলেমস ৯

যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে, ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হাসনাইনের সন্দেহের লিস্টে এখন রেশমা পুরোপুরি ঢুকে গেছে। পুরো ঘটনাটা হয় ক্রেজী মাতাল কোন ভক্ত ঘটিয়েছে, অথবা রেশমা। রেশমাকে সন্দেহের তালিকায় রাখার মূল কারণ দুটো, প্রথমতঃ রেশমার ডাইরীতে ক্রনোলজীকালি সব ঘটনা তুলে রাখার ব্যাপারটা; উত্তক্ত করার ক্ষেত্রে মানুষ প্রথমদিকের ঘটনাগুলোকে পাত্তাই দেবেনা, যখন ভয়াবহ রকমের সন্ত্রণা করবে, সেগুলোই ফোকাসড হবে, তার সাথে টুকরো স্মৃতি হিসেবে আসবে প্রাথমিক ঘটনাবলী। কিন্তু রেশমা সব ঘটনা সাজিয়ে রেখে উপস্থাপন করেছে, যেটা খুবই অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সেটাকে অত বড় কোন প্রমাণ হিসেবে ভাবা যায়না, হতেই পারে যে রেশমা শুরু থেকেই ঠিক করে রেখেছিল পুলিশে জানাবে, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি।

তবুও রেশমার ব্যাপারে খটকাটা হাসনাইনের সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই সামান্য খটকাটাই এখন বেশ পোটেনশিয়াল সন্দেহে পরিণত হয়েছে দ্বিতীয়আরেকটি কারণে, যেটা হাসনাইন টের পেয়েছে মূলত রুনা লায়লার ফোনের রেশ ধরেই। ফোন রেখে রেশমা যখন বলে যে সে একবারও নতুন গানটা প্র্যাকটিস করেনি, তখনই হাসনাইনের মনে পড়ে যায় যে সে ভুল করে রেশমার নতুন রিলিজ সিডির বক্সে জাজ-রক মিক্স সিডিটা রেখেছিল। এক মুহূর্তের জন্য হাসনাইন মনে মনে বলে উঠে 'সর্বনাশ!', তারপরই তার খটকা লাগে 'কই, রেশমা তো কিছু বললনা ভুল সিডির ব্যাপারে!!' দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয় হাসনঈনের কাছে, রেশমা সিডিবদল সম্পর্কে কিছুই জানেনা। তার মানে ব্রেক নিয়ে যে সময়টা রেশমার গেস্টরুমে বসে নতুন গানটা শোনার কথা ছিল, সেই সময়টা সে আসলে সেই সিডির বাক্স খুলেও দেখেনি! কারণ খুললে তো অন্য সিডি দেখতে পেত, এবং নিশ্চয়ই সেটা নিয়ে হল্লাচিল্লা হতো! তাহলে সেসময়টা সে কি করেছে? হাসনাইন মোটামুটি নিশ্চিত ঐ সময়টা রেশমা অন্য কোন কাজ করছিল।

সেই সময়টুকু রেশমা কোথায় ছিল সেই এ্যালিবাইও কেউ নেই, এবং সময়টা খুনটা ঘটে যাওয়ার টাইমের মধ্যেই। কাজেই রেশমা যে সেসময় খুনটা করেনি তার প্রমাণ নেই। তবে তারপরও হাসনাইনের মাথার ভেতর কয়েকটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এখন যেগুলোর সমাধান না করতে পারলে বলা যাবেনা আসলেই রেশমাকে সন্দেহ করা যায় কিনা। প্রথম প্রশ্ন হলো, রেশমা এঘর থেকে বের হয়েছে একবারই এবং তা সেই ব্রেক নেয়ার সময় বড়জোর পাঁচ মিনিট। এখন দেখতে হবে "এত অল্প সময়ে কি আসলেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে লবি ঘুরে গিয়ে পার্কিংয়ে ঢুকে কাউকে খুন করে, আবার ফিরে আসা সম্ভব কিনা!" তারওপর, ওয়েইটিং রুমে সেসময় কমপক্ষে কালাম আর জগলু ছিল, লিফটের পাশেই সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে তো তাদের চোখে পড়তেই পারে, লবিতে যে কারো চোখে পড়তেই পারে, আবার মুসলিমকে পেরিয়ে ঢুকতে হবে পার্কিংয়ে।

"তিন জায়গায় কেউ তাকে দেখে ফেলতে পারত, যদি দেখে ফেলত তাহলে তো রেশমা সেখানেই ধরা খেয়ে যায়। এবং এই দেখে ফেলার সম্ভাবনাই তো বেশি। তাহলে সে এত বড় রিস্ক কেন নেবে?" ধরা গেল কালাম, জগলু খেয়াল করলনা, লবিতেও কেউ ছিলনা, মুসলিমও প্রভা রহমানের অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে খেয়াল করেনি, তাহলেও এতটা পথ দৌড়ে পাঁচ মিনিটে কাজটা করে আসা সোজা কথা না। আবার রেশমার ব্যাপারে দ্বিতীয় সন্দেহের ক্ষেত্রেও বলা যায় যে সে হয়ত যখন সিডিটা শুনতে যাবে তখনই কোন ঘনিষ্ট বন্ধু-বান্ধবীর ফোন আসল। গেস্ট রুমে ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতে বলতে পাঁচ মিনিট কেটে যায়, প্রফেশনালিজমের চাপে রেশমা সেকথা কাউকে না বলে চেপে গেছে।

হাসনাইনের এখন তাহলে রেশমাকে আগে জিজ্ঞেস করতে হবে সে ঐ পাঁচমিনিট কি করছিল, এবং সেটা খুব কায়দা করে। হাসনাইন নিজের কর্তব্য সর্টআউট করে, এখন তার মূল কাজ দুটো, পরীক্ষা করে দেখা যে আসলেই পাঁচ মিনিটে খুন করে ফিরে আসা সম্ভব কিনা! আর রেশমার মুখ থেকে শোনা যে ঐ পাঁচ মিনিট সে কি করছিল। হাসনাইন রাজুকে ডেকে রেশমার ব্যাপারে তার সন্দেহের কথা বলে। তারপর বলে দেয় যেন আর কেউ না জানে এই সন্দেহের কথা। রাজুকে দায়িত্ব দেয় যত দ্রুত সম্ভব খুনের ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানে ৩০ সেকেন্ড কাটিয়ে আবার ফিরে আসতে।

এদিকে কালামের মাধ্যমে সবার মধ্যে এই থিওরীটা ছড়িয়ে পড়ে যে খুনী নিশ্চয়ই পেছন থেকে অফহোয়াইট কার্ডিগান পরা পিয়াকে রেশমা বলে ভুল করে। সবাই আরো বেশী ভীত হয়ে পড়ে, কারণ কালাম বোকার মতো এই সম্ভাবনাও চালু করে যে হয়ত খুনী এই বিল্ডিংয়েই আছে, কারণ খুনী সম্ভবত একজন মানসিক রোগী, সে যদি বুঝতে পারে রেশমা মারা যায়নি তাহলে সে আজ রেশমাকে মেরে তবেই এই বিল্ডিং ছাড়বে। সবার মনের এরকম অস্থির অবস্থায় হাসনাইন যখন রূমের সবাইকে বলল যে গেস্টরূমে একজন একজন করে সবার সাথে সে কিছু কথা বলবে, তখন তারুন্যের মেম্বারদের সবার চোখ বিস্ফারিত, যেন আগুন বেরুচ্ছে, রেশমার অবস্থাও একই। রেশমা চোখ আগুন করে হাসনাইনের দিকে তাকিয়ে থাকে, তবে সেটা ঢেকে যায় হামিদ সাহেবের অধিকতর শক্ত প্রতিবাদে। হামিদ সাহেব বেশ কড়া গলায় বলেন, 'হাসান সাহেব, আপনি পেয়েছেন কি? এ্যাঁ? আপনি কি আমার অফিসের কাউকে বা রেশমা ম্যাডামকে সন্দেহ করেন? ভাল হবেনা বলে দিচ্ছি!' হাসনাইন বোঝানোর ভঙ্গিতে বলে, 'প্লীজ, প্লীজ ভুল বুঝবেননা।

কাউকে সন্দেহ করছিনা। খুনের ঘটনার ক্ষেত্রে যারা আশেপাশে থাকেন তাদের সবার জবানবন্দী নিতে হয়। পরে মামলায় সাক্ষ্য দিতে হলে যাতে অনুরোধ করা যায় সেই রেকর্ড রাখার জন্য। অবশ্যই আপনাদের কাউকেই আমি সন্দেহ করছিনা। আরে বাবা! সন্দেহ করব কিভাবে? আমি এখানে ছিলামনা?' সবার চেহারায় আলো ফিরে আসতে থাকে।

হাসনাইন বলে যেতে থাকে, 'আমি খেয়াল করেছিনা? কে কতক্ষণ অফিসে বা স্টুডিও তে ছিলেন? লাবু ভাই দুবার সিগারেট খেতে বের হয়েছেন, আখতার সাহেব একবার টয়লেটে গেছেন, হামিদ সাহেব একবার বের হয়েছেন ১৫ মিনিটের জন্য ডিনারের পরপরই, টুটুল সাহেব রেশমা ম্যাডামকে গেস্টরূম থেকে ডেকে আনতে গিয়ে নিজে সেখানে মিনিট দশেক রেস্ট নিয়েছেন, আর রেশমা ম্যাডাম মিনিট পাঁচেক গেস্টরূমে ছিলেন। আমি তো সবই খেয়াল করেছি, এমনকি লুৎফা ম্যাডাম যে একবারও বের হননি, সেটাও। ' হাসনাইন বলে আর মিটিমিটি হাসে, মনে মনে বলে 'ম্যান! ইউ যাস্ট হিট আ সিক্স হিয়ার। ' সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। মুখ আবারও অন্ধকার হয়ে যায়, এই বোকা বোকা ডি.বি'র লোকটা এত খুঁটিনাটি খেয়াল করে!! রেশমার গলা শুকিয়ে হাসে,হাত বাড়িয়ে পানি খেতে যেয়েও ফিরিয়ে নেয় হাত।

একজন একজন করে সবার কথা শোনে হাসনাইন, প্রায় আধঘন্টা লেগেযায়। সবার সাথে জবানবন্দীতে হাসনাইন দুটো প্রশ্নই করে মূলতঃ, একটি হলো যখন সে বের হয়েছিল তখন সে কি করছিল। আরেকটি প্রশ্ন হলো, বাই এ্যানি চান্স কাউকে কোনভাবে সামান্যতম সন্দেহ হয় কিনা, হলে কেন? প্রথম প্রশ্নটি শুধু রেশমার জন্য করা, রেশমা যখন বলল গান শুনছিলাম হাসনাইন তখন আবারও জিজ্ঞেস করে, 'ম্যাডাম, কোন গান?' রেশমা নির্বিকারভাবে বলে 'পাওয়া না পাওয়া। ' হাসনাইন ব্যাকুলভাবে বলে, 'আপনি নিশ্চিত? এমন কি সম্ভব না আপনি অন্য গান শুনছিলেন?' রেশমা চটে যায়, চড়া গলায় বলে, 'ফাজলামো করবেননা! পিয়া আমার আপন কাজিন না হলেও গত একবছর দুমাস আমার কাছে ছিল, আমার এমনিতেই অনেক কষ্ট হচ্ছে। ' পিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জানা যায় যে, রেশমার দুঃসম্পর্কের মামাতো বোন, মফস্বলে ছিল, অতিরিক্ত সুন্দর হবার কারণে পাড়ায় ছেলেদের উৎপাত খুব বেড়ে যায়, মামা-মামী রেশমার কাছে নিয়ে আসে।

রেশমা এই মেয়েকে গড়ে তোলে, ড্রাইভিং শেখায়, টিচার রেখে ড্যান্স শেখায়, ক্যাটওয়াক শেখায়, আর শেখাতে শেখাতে যতদিন না পাকা হয়ে উঠে তটদিন নিজের সেক্রেটারী হিসেবে কাজ করায়। ভাল বেতন দিত, একই ঘরে থাকত। বাকীদের সাথে কথা বলে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানা না গেলেও লুৎফা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্য দেয়। লুৎফার মতে পসিবল খুনী হলো তানিম। লুৎফা যা জানয়, তার সারমর্ম হলো, পিয়া আসার আগেও তানিম আর রেশমা খুব ভাল বন্ধু ছিল, তানিম নাকি রেশমার জন্য পাগল ছিল, কিন্তু রেশমা পাততা দেয়নি, বয়েসে সাত বছরের ছোট ছেলেকে রেশমা কিভাবে পাত্তা দেবে।

এরমধ্যে পিয়া যখন আসে তখন পিয়া উল্টো তানিমকে টার্গেট করে, এমনি এক সন্ধ্যায় হেভীমেটাল ডিস্কো পার্টির পর তানিমকে ভালোমতো মাতাল করে পিয়া বেডে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে তানিম নিজেকে আবিষ্কার করে পিয়ার বেডে। তানিম জাটকা মাছের মতো আটকা পড়ে যায় পিয়ার জালে। লুৎফার মতামত হলো, তানিম ব্যাপারটা বুঝতে পারে, কিন্তু রেশমার মতো হাই প্রোফাইল মেয়ের এত কাছে যে গেছে সে রেশমাকে ছাড়বে কেন? কিন্তু তানিম জানে রেশমা পিয়াকে অসম্ভব পছন্দ করে, কাজেই পিয়া বেঁচে থাকলে সে শুধু পিয়াকে ছেড়ে চলে যেতেই পারবে, রেশমাকে পাবেনা। তাই পিয়াকে খুন করে সান্ত্বনা দেবার জন্য রেশমার কাছে আসার ফন্দি তার।

হাসনাইন বলেছিল, 'কিন্তু পিয়াও তো দেখতে ভীষন সুন্দরী, তারওপর ইয়াং, তেইশ বছর বয়েস। ' লুৎফা অবজ্ঞার হাসি হেসে বলে, 'ইয়াং অফিসার, হোয়্যার আর ইউ পসিবলি লিভিং? এদেশে এখন ছেলেরাও রূপ দেখেনা, ক্যারিয়ার দেখে, রেশমার হাজব্যান্ড হলে তানিম ক্যারিয়ারে কত সুবিধা পাবে ভেবে দেখেছেন?' হাসনাইন তার পোটেনশিয়াল সাসপেক্ট লিস্টে তানিমকেও ঢোকায়, তবে তার কোথায় যেন খটকা লাগে। একারণে মেরে ফেলা পর্যন্ত কি কেউ যাবে? সবার সাথে কথা শেষ হাসনাইন যখন গেস্টরুম থেকে বের হয়ে আসে, তখন দেখে করিডোরে রাজু দাঁড়িয়ে। এরমধ্যে রাজু তিন-তিনবার দৌড়ে চেষ্টা করে ছয়তলা থেকে পার্কিংয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসতে, কিন্তু সর্বনিন্ম ৬ মিনিট ২৮ সেকেন্ডে সে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। এবং সেটা ভীষন হাঁপাতে হাঁপাতে।

অমন হাঁপালে যে কারু কাছে ধরা পড়ে যেত রেশমা। নতুন সমস্যায় পড়ে হাসনাইন, পাঁচ মিনিটের মধ্যে যদি রেশমা নিচে গিয়ে ফিরে আসতে না পারে তাহলে তো খুনটা রেশমা করেনি! বরং, অন্য কেউ রেশমার সাথে জড়িত সেই সম্ভাবনাটাই বেশী। এমনও হতে পারে রেশমা আর তানিম মিলে খুন করেছে। পসিবিলিটির সংখ্যা আবার বেড়ে যাচ্ছে, হাসনাইন হতাশ বোধ করে। রাজুর দিকে ফিরেঘাসনাইন জিজ্ঞেস করে, 'রাজু, কি মনে হয়? নায়িকার সঙ্গে কেউ আছে? কারণ উনিতো বাকী সময় রুমেই ছিল।

' রাজু হাসনাইনকে আরও হতাশ করে দেয়, 'আর কেউ জড়িত থাকলে সেতো একাও কাজটা করতে পারে। এখানে তো নায়িকারে টানার দরকার নাই। সে হয়ত অন্যকাজ করতেছিল। ' 'আরে নাহ। ' হাসনাইন বলতে থাকে, 'আমি ভালভাবে জেরা করছি, সে বলল সে গানই শুনতেছিল।

' রাজু প্যাঁচ লাগায়, 'গিয়া দেখেন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে প্রেমালাপ করছিল, সেইটা আপনাকে বলে স্ক্যান্ডাল বাড়াইতে চায়নাই হয়ত। ' 'হুমম' হাসনাইন আবার চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়। দুজনই ওয়েইটিং রুমে গিয়ে সোফায় বসে, টিভি দেখতে থাকে। টিভি দেখতে দেখতে হাসনাইন যখন সব ঘটনাগুনো উল্টোপাল্টা করে ভাজছিল, তখনই তার চোখে পড়ল যে জগলু মজা করে পেয়ারা খাচ্ছে। হাসনাইন পেয়ারার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কেসটা নিয়ে ভাবছিল, আর তা দেখে জগলু জিজ্ঞেস করে, 'ইনসেকটর সাব, পেয়ারা খাইবেন? মুসলিম ভাইর ঐহানে অনেক আছে' একনিষ্ঠমনে ভাবতে থাকা হাসনাইন কি বুঝে হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ে সে নিজেও জানেনা, জগলু দরজা দিয়ে বের হয়ে বামে চলে যায়।

ভাবনায় মগ্ন হাসনাইনের হঠাৎ খটকা লাগে, আরে? জগলু লিফটের পাশের সিঁড়ির দিকে গেলনা কেন? ডানে না গিয়ে বামে গেল কেন? মুসলিম এখন কোথায়? তিন মিনিটে জগলু ফিরে আসে, হাসনাইন পেয়ারা রেখে জগলুকে জিজ্ঞেস করে, 'মুসলিম এখন কোথায়?' জগলু বলে, 'ক্যান? হের গাডরুমে' হাসনাইন জগলুর বাহু ধরে বলে, 'চলোতো ঐখানে' জগলু বিচলিতভাবে বলে 'স্যার, একটা কথা কই। মুসলিম ভাইরে সন্দেহ কইরেননা, এরাম বালা মানুষ দেহিনাই। ' 'কথা কম!' হাসনাইনের ঝাড়িতে জগলু আরো বিচলিত। জগলু যে পথে গিয়েছিল সেপথে তারা পার্কিংয়ে গিয়ে ৩০ সেকেন্ড থেকে আবার ফিরে আসে, আশ্চর্য ব্যাপার। মডারেট স্পীডেও ৩ মিনিটেই সম্ভব! সম্ভব! পেছনের সিঁড়ি দিয়ে গেলে সম্ভব! হাসনাইন অজান্তেই দুই হাত মুঠো করে খুশীতে নেচে ওঠে, যেন বিশ্বজয় করেছে।

ভাগ্য ভাল হতে শুরু করলে সবদিকেই হয়; লিফটের সামনে সিগারেট খেতে খেতে হাসনাইন যখন ভাবছিল মোটামুটি কেইস গুটিয়ে এনেছি এখন শুধু দরকার জানা কিভাবে রেশমা পেছনের সিঁড়ির কথা জানল আর শক্তিশালী কোন প্রমাণ যে রেশমা ঐসময় পার্কিংয়ের কাছে ছিল, তাহলেই মামলা ডিসমিস, ঠিক তখনই ছয়তলায় এসে লিফট থামল, হন্তদন্ত হয়ে রওনক, তানিম আর আরেকটা মেয়ে বের হয়ে গেল। শূন্য লিফটের বামপাশের দেয়ালে হাসনাইন দেখল, ভুঁইয়া টওয়ারের ফ্লোর প্ল্যান এঁকে দেয়া আছে; লিফটে ঢুকে প্ল্যানটায় চোখ বুলিয়েই বুঝল একটা ছোট বাচ্চাও বুঝবে পেছনের সিঁড়িটা বেইজমেন্ট পার্কিংয়ের অনেক কাছে। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.