আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'নিজামীর নির্দেশে চাচাকে গুলি করে পাক সেনারা'

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ২২তম সাক্ষী মো. শাহজাহান আলীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে মো. শাহজাহান আলী বলেন, নিজামীর হাতের ইশারায় এক পাকিস্তানি সেনা আমার চাচাকে গুলি করে। পরে সাক্ষীকে জেরা করেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। এ মামলার কার্যক্রম রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

শাহজাহান আলী বলেন, '৭১ সালের আগস্টের প্রথম দিকে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে চাচা সোহরাব আলী প্রামাণিকসহ ২০-২৫ জন ভারতে যান। ২ ডিসেম্বর তিনি বাড়ি আসেন। পরদিন ফজরের আজানের আগে ঘরের দরজা ভেঙে চাচাকে টেনে রাস্তায় নিয়ে যায় কয়েকজন রাজাকার। তারা তাকে নিয়ে বাড়ির পশ্চিমে চৌরাস্তার দিকে গেলে পেছনে পেছনে আমিও যাই। বাঁশঝাড়ের আড়াল থেকে রাজাকার ও আলবদর সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি মতিউর রহমান নিজামীকে।

বুঝতে পারি নিজামীর নির্দেশেই চাচাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। অনেক মারধর করা হয় চাচাকে। এরপর নিজামী হাতের ইশারায় কিছু বলার পরে একজন পাক সেনা চাচাকে দু-তিনটি গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সাক্ষী জানান, এর কিছু সময় পরে পাক সেনারা পাশের হিন্দুপাড়ার দিকে যায়।

সেখানেও গুলির শব্দ শোনা যায়। পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হিন্দুপাড়ার কয়েকটি বাড়িতে অগি্নসংযোগ করা হয়। সাত-আট জন হিন্দুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শাহজাহান আলী পাবনার বেড়া উপজেলার বৃশাখালী গ্রামের বাসিন্দা।

'আমার বাবার হত্যাকাণ্ডে মাঈনুদ্দিন-আশরাফুজ্জামান জড়িত' : মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক চৌধুরী মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন প্রসিকিউশনের ২৩তম সাক্ষী শাফকাত নিজাম। ট্রাইব্যুনাল-২ জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে শাফকাত নিজাম বলেন, আমার বাবাসহ অন্য বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আলবদর নেতা মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান জড়িত ছিলেন বলে পত্রিকা এবং আত্দীয়স্বজনের মাধ্যমে জেনেছি। প্রসিকিউশনের এই সাক্ষী শহীদ সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমদের ছেলে। এরপর প্রসিকিউশনের ২৪তম এবং এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবিরের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

জবানবন্দি শেষে এ দুই সাক্ষীকে জেরা করেন আসামি পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুকুর খান ও সালমা হাই টুনি। তদন্ত কর্মকর্তাকে আসামি পক্ষের জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এ মামলার কার্যক্রম ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। জবানবন্দিতে শাফকাত নিজাম বলেন, বড় হয়ে চৌধুরী মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের হাতে আমার বাবা এবং অন্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত প্রতিবেদন পত্রিকায় পড়েছি। ৪০ বছর ধরে বাবার অপহরণের ঘটনার স্মৃতি নিয়ে বড় হয়েছি। সাক্ষী জানান, '৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর কড়া নাড়ার শব্দে দরজা খোলামাত্রই দুজন অস্ত্রধারী বাসায় প্রবেশ করে।

তারা সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমদের খোঁজ করতে থাকে। পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিজাম উদ্দিনকে তারা ধরে নিয়ে যায়। পরে আর বাবার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।