Live with no excuses and love with no regrets আমাদের দেশের রাজধানি "ঢাকা"। এখানে আজকাল সবাই যান্রিক জীবন যাপন করে। কারো কাছে নিজের জন্য বিন্দু মাএ সময় নেই। সবাই মনে হয় টাকার পিছনে ঘুরে। আমি নিজেও এদের মত এক জন হয়ে গিয়েছি।
বাচ্চাদের বিনোদনের জায়গা নাই বললেই চলে। বাচ্চারা স্কুল থেকে বাসা আবার সকাল হলেই স্কুল, এটাই তাদের জীবন। এই সব কিছু র ফলে, বাচ্চারা সামাজিক মেলা মেশা ভুলে গেছে। খেলা ধুলা কাকে বলে, এটাই তারা জানে না! তাদের কাছে খেলা মানে সব ধরনের ইন-ডোর গেমস (In-door games)। তাদের কাছে কম্পিউটার, মোবাইল আর পি.এস.পি. (Play Station Portable) আছে সবার উপরে।
চোখে চশমা লাগা সব বাচ্চাদের ফাশ্যন। তারা তাদের ক্ষতি নিজ হাতে করছে। তাদের ও বা দোষ কি বলেল, ঢাকায় তো চারিপাশে খালি বিল্ডিং আর বিল্ডিং, আর রাস্তায় শুধু গাড়ি আর গাড়ি। খেলার মাঠ কোথায়? এরি মাঝে হঠাৎ যদি কোনো মনোরন্জনের সুযোগ আসে, তাহোলে কেও সেটা হাত ছাড়া করতে চায় না।
এই রোবোটিক শহরে আমরা যেখানে থাকি সেইটা একটি হাউজিং সোসাইটি (Housing Society)।
অনেক হাউজিং এর মত এখানে ও ৪টি বিল্ডিং রয়েছে। প্রতেকটি বিল্ডিং এ ৪০টি করে ফ্ল্যাট। টোটাল ১৬০টি ফ্ল্যাট। ঢাকায় যেকানে মানুষ আধা ইঞ্চি জায়গা কেও ছাড়ে না সেখানে আমাদের এই হাউজিং এ আছে একটি নামাজ ঘর, বিশাল পার্কিং প্ল্যস, কমিউনিটি সেনটার আর একটি বাচ্চাদের শিশু পার্ক। প্রতিদিন এই পার্কে বাচ্চারা তাদের সময় খুব মজা করেই কাটায়।
শীতকালে বড়োদের কেউ ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখা যায়। প্রতি বছর এখানে নানান রকমের বিনোদন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। মিনা বাজার, খেলার প্রতিযোগিতা এবং ফ্যামিলি ডে এদের নিয়মিত আয়োজন।
সব বছরের মত এই বার ফ্যামিলি ডে উদযাপন হলো ১৮ই জানুয়ারি' ২০১৩। এই দিন আসা মানেই বাচ্চাদের খুশির কোন ঠিকানাই থাকে না।
মনে হয় সব বাবুরা খোলা আকাশ পেয়ে গেলো। বাবা মা কারো দরকার বোধ করে না। তারা নিজেরাই একাই একশো। বড়, ছোটো সবাই নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দান করে। গান, নাচ, নাটক,আবৃতি, রা্ফেল ড্র, আর ও বিভিন্ন ধরনের আয়োজন থাকে।
এইবারের হাইলাইটস ছিলো যাদু। আমাদের হাউসিইং এর মালিকরা হারুন সাহ যাদুকর কে বিনোদন এর জন্য আমন্ত্রন করেছিল। এই বছর আমার দু ছেলে নাইল আর নাহিয়ান দু জনেই বিকেল থেকে সেখানে। তাদের বাসার কথা আর মনে পড়ছে না। যাদু আসলে বাচ্চাদের অনেক প্রিয় থাকে।
কোনো কারনে যাদুকরের আসতে একটু দেরি হয়েছে। সবাই খুব উত্তেজনায় ভুগছে। এর মাঝে সবাই তাদের কুপন দেখিয়ে রাতের খাবার শেষ করলো। রাফেল ড্র এর জন্য সবার হাতের কুপন জমা দেয়ার কথা বলা হল। সবাই কুপন ফেলছে আর ভাবছে, "আমি যদি এবার প্রাই্জ টা পাই!" অবশেষে যাদুকর তার যাদুর বাক্স নিয়ে আসলো।
সেই কি আনন্দ সবার মাঝে। চিল্লা চিল্লি আর গান বাজনা তে ভরে গেলো। হারুন সাহেব এক এক করে কয়েকটা যাদু দেখালেন। এর মাঝে কিছু কমোন যাদু ও ছিল। কিন্তু যাদু তো যাদুই! রাত বাজে ১২টা, আর তো সময় দেয়া যায় না।
সবাই কে তো বুঝতে হবে এখানে অনেক ধরনের মানুষ বসোবাস করেন। বৃদ্ধ, অসুস্থ, ছোটো বাচ্চা সবাই এখন ঘুমে কাতোর। যাই বলেন না কানো ঘুম কিন্তু সবার প্রিয়। তাই সবাই অনুষ্ঠান শেষ করার অনুরোধ জানালেন। এখন রাফেল ড্র হবে।
সবাই তার নিজ নিজ হাতে কুপন গুলো দেখছে। এনাওন্সমেন্ট শুরু হলো। ১২ তম হয়েছে কুপোন নং ৮৭। সবাই তালি দিলো। ১১ তম হয়েছে কুপোন নং ৩৩।
ফ্লাট ১/২০৩ প্রাইজ নিতে এগিয়ে গেলেন। দু ভাই এক জন আরেক জনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। এই বুঝি তাদের নাম্বার টা বলবে। কিন্তু শেষ মেষ প্রথম প্রাইজ টা পেলো কুপন নং ২৯১। ওদের আসা ভেঙ্গে গেলো।
তাদের ১৮৭ আর ১৯৩ তাহলে কি আন লাকি ছিল। সব কিছুর পরেও তারা যে মজা টা করেছে আধুনিক গানে নাচে, সেটা কি আর ভোলা যায়। আমার দুই ছেলে দেখি বড় হয়েই গালো।
ফ্যামিলি মানে পরিবার, আর ডে মানে দিন, কিন্তু আমরা এখানে একটি গেটটুগেদার করেছি। আমাদের ফ্যামিলি ডে হলো এটাই।
আপনাদের কাছে কি?
আমাদের গ্যঙনাম ষ্টাইল...................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।