আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাজিদ মাজিদির বারান (২০০১)

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

সিনেমা দেখা কমে গেছে। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে অফিস থেকে বারাইতে পারি না। তাই বাজারে গিয়া সিনেমা কিনবো তারো উপায় থাকে না। তারপরও পরশু বসুন্ধরা গেছলাম।

শুক্রবার বিধায়, খানিকটা ছুটি আছিল। এক বিগ ব্রাদারের সংগ্রহ থেকে বারান পেয়েছিলাম এর মধ্যে। দেখার পরও নোট লিখতে বাধো বাধো ঠেকছিল। না জানি সুমেরুর মতো সিনেমা-বোদ্ধারা কি বলেন। পাছে লোকে কিছু বলে।

সুমেরুর কাছে জানতে চেয়েছিলাম উনি যেন কাইন্ডলি জানান কোনটি তার কাছে সিনেমা কোনটি নয়। মহাশয় উত্তর দেন নাই। দক্ষিণ দিয়েছেন বটে। তারপরও সাহস করে লিখতেছি। সুমেরু সমা করবেন।

মাজিদ মাজিদির চিলড্রেন অফ হেভেন দেখছিলাম আগে। দিল বহুত খুশ হুয়া। বারান দেখেও ভাল লাগলো। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক আগ্রাসনের পর সেখান থেকে লাখ লাক মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে গিয়েছিল। এদের অনেকে আশ্রয় নিয়েছিল ইরানে।

এই উদ্বাস্তুদের দ্বিতীয় প্রজন্মের জন্ম ইরানেই। কিন্তু, তারা ইরানি নয়। তাদের কাছে স্বদেশ মানে পোড়া আফগানিস্তানই। জানি না, আফগানিস্তানে মার্কিন আক্রমনের কথা মাজিদ মাজিদি মনে রেখেছিলেন কিনা। না রাখারই কথা, কারণ আক্রমণ সিনেমা রিলিজ হওয়ার পর সে আক্রমণ ঘটেছিল ২০০১ সালে।

অথবা আফগানদের নতুন ভাগ্যবিপর্যয়ের পর তার মাথায় আরও একটি সিনেমা তৈরির আইডিয়া এসেছিল কিনা তাও জানি না। তরুণ লতিফ কাজ করে একটা কনস্টাকশন সাইটে। শ্রমিকদের খাবার তৈরি ও জোগান দেয়ার দায়িত্ব তার। সাইটে আফগান শ্রমিকরা কাজ করে। সরকারের ওয়ার্ক পরমিট নেই বলে তাদের কাজ করতে হয় লুকয় চুরিয়ে।

এরকমই এক শ্রমিক গুরুতর আহত হলে তার মেয়েকে ছেলে সাজিয়ে ওই সাইটে আনা হয়। সে বাচ্চা ছেলে, ভারি কাজের উপযুক্ত নয়, এই ভেবে সাইটের ফোরম্যান মেমার তাকে লতিফের জায়গায় নিয়োগ দেয়। লতিফের ভাগ্যে জোটে ভারি কাজ। ফলে তার সঙ্গে লতিফের তৈরি হয় শত্রুতার সম্পর্ক। কিন্তু একদিন আচানক লতিন জেনে যায় বারান ওরফে রহমত মেয়ে।

আর এই জেনে যাওয়া থেকে প্রেমে পড়ে যায় লতিফ। আফগান শ্রমিকদের প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে একদনি বারানদের চলে যেতে হয় সাইট থেকে। লতিফ ছুটি নিয়ে আফগান সীমান্তের কাছে গিয়ে খুজে বের করে তাকে। বারানের চাচা সুলতানের দুর্দশায় কাতর হয়ে নিজের জামানো টাকা নিয়ে আবার যায় সেখানে। সুলতান সে টাকা দিয়ে আফগানিস্তান চলে যায়।

এরপর আবার সেখানে গেলে লতিফ বারনের বাবা নাজাফের সাক্ষাৎ পায়। জানতে পারে সুলতানের কথা আর আফগানিস্তানে তার মৃত্যুর কথাও। নাজাফের দুর্দশার ঘোচাতে নিজের সবশেষ সম্পদ ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করে টাকা নিয়ে নাজাফের কাছে যায় লতিফ। এবার নাজাফের পরিবার আফগানিস্তান যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। লতিফ তাদের গাড়িতে তুলে দেয়।

একবার বারানা তার চোখে চোখে তাকায়। গাড়ি চলে গেলে বৃষ্টিস্নাত মাটিতে থাকে শুধু বারানের জুতার ছাপ। এসব কিছই ঘটে প্রেমের কারণে। এক অনাস্বাদিত, অচরিতার্থ প্রেম। রাজনীতি, যুদ্ধ, শরণার্থী, গ্লোবাল পলিটিক্স, আগ্রাসন সবকিছুর পর এই প্রেম।

কত শক্তিশালী এক ব্যাপার!


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।