নিজেকে নিয়ে কিছু একটা লেখার চেষ্টা, এখোনো করে যাচ্ছি . . .
ইশ্বর আমাদের সবকিছু দেখেন, শোনেন ও সিদ্ধান্ত নেন। হঠাৎই তিনি ইচ্ছে করলেন তার ঐশ্বরিক ক্ষমতায় তিনি জগৎে দুটি কাজ করবেন। সেখানে পরিবর্তনের পাশাপাশি থাকবে ঘটনাচক্রও। সবই ইশ্বরের একান্ত ইচ্ছা।
প্রথমত যে কাজটি করবেন
তার সৃষ্টি ব্রক্ষান্ডের সকল সৃষ্ট জীব, সকল স্থান, সকল সময়ের মধ্যে শুধু একটি সৃষ্টি, একটি সময়কাল ও একটি স্থান পরিবর্তন করবেন
১) যে সৃষ্টি জীবটিকে তিনি পরিবর্তন করবেন তিনি হলেন “শফি সামী” নামের এক ভদ্রআবেষ্টিত কুৎসিত একটি পুরুষ তাকে রুপান্তর করে বানানো হবে সম্মানিত নারী ভেলরি'তে।
২) ২০০৭ সালকে টেনে পিছনে নিয়ে যাওয়া হবে ১৯৭২ সালে
ঐশ্বরিক পরিবর্তন শেষ। এবার ঘটনাচক্র।
পরিবর্তীত জীবটি অর্থ্যাৎ “শফি সামী” থেকে সম্মানীয় ভেলরি তিনি ১৯৬৯ সালে সুদূর আমেরিকা থেকে থেকে উড়ে আসেন বাংলাদেশে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দেখে তার ভিতরকার অনুভূতি প্রবল হয়ে কিছু একটা করার তাড়নাই তাকে বারবার ভাবাতে থাকে। তিনি ফিরে গিয়ে আবার দেশে আসেন ৭২’এ।
সোহরাওর্য়াদী হাসপাতালরে ছোট্ট একটি জায়াগা সংগ্রহে শুরু হবে তার সংগ্রাম তার পথ চলা। তিনি তার সংকল্পবদ্ধ প্রতিজ্ঞা রক্ষায় দ্বারে দ্বারে ছুটবেন, অপমানিত হবেন, নুইয়ে পড়বেন তবুও মচকাবেন না। জীবনের সাথে এ যেন তার নতুন সংগ্রাম। এ যে তার পথ চলা শুরু হোচক খাবেন আবার ভর দিয়ে উঠে অনন্ত পথের ঠিকানায় হেটে চলবেন। তাকে চলতেই হবে কারণ তিনি যা করছেন তা তো নিজের জন্য নয়, তিনি তার জন্য নয় তিনি তাদের জন্য ভাগ্য যাদেরকে পঙ্গুত্ব করে রেখেছে তাকে ভর করে চলাই যাদের প্রেরণা, একজন অসহায় পিতার করুণ চোখে মুখে সন্তানের পরিণতির যে ক্লান্ত ছাপ তার কিছুটা হলেও তিনি চেয়েছিলেন মুছতে ।
নিজের দিকে তাকানোর সময় কোথায়, সময়ের গন্ডী পেরিয়ে একা একাই চলে আসতে হল এতদূর। শুরু যেভাবেই হোক এবার সময় হল পরিধি বাড়াবার সাভারের অদূরে বিধাতার সৃষ্টি এক পবিত্র ভূমিতে জন্ম নিল “সিআরপি” নামক দাতব্যলয়। সময় পরিচিত করল ভেলরির সৃষ্টিকে। তার সৃষ্টির সেবায় অসংখ্য হাসতে ভূলে যাওয়া মানুষের মুখে যেমন হাসি ফুটল, তেমনি নিজেকে পূর্ণ সাবলম্বি হওয়ার প্রবল বিশ্বাসে যে মানুষগুলো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখত তাদের স্বপ্ন পূরনে সেই মানুষগুলো ভেজা চোখে বিধাতার কাছে দুটো হাত তুলতে কিন্তু ভুলেননি। বাংলা, ইংরেজী ভাষা নয়, মুসলমান, হিন্দু আবদ্ধ নয়, শুধু মসজিদ, গীর্জা নয় ভেলর সর্ব আশীর্বাদে আশীর্বাদ পুষ্ট হন।
হৃদয় জয় করে ভিনদেশী সেই মহিলা। প্রতিষ্ঠিত হয় ভেলরি ও তার সৃষ্টি সিআরপি।
হঠাৎই এক আগুন্তুকের আগমনে সবকিছু কেমন জানি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে থাকে ভেলরির জীবন। সন্তুানের মত লালিত এত সাজানো গোছানো স্বপ্ন যেন ফিকে হয়ে যায় মূহূর্তে, যখন ভেলরের শুনতে পান তিনি ম্যানেজমেন্ট বুঝেন না। প্রমানহীন মিথ্যে দূর্নিতির অভিযোগ চাপানো হয় তার ঘাড়ে।
সারে সাত হাজার টাকা বেতনের ভেলর কিছু বুঝে উঠার আগেই আগুন্তুকের ক্ষমতার লেলিহান শিখায় তাকে পুড়তে হয়। ডিপার্টমেন্ট পরিবর্তন হয় বেশ কয়েকবার। তার ভাবনার জগৎে একটি প্রশ্ন বারবার সামনে চলে আসে যদি দুই লক্ষ টাকা একজন কর্মকর্তার বেতন হয় তাহলে একটি দাতব্যলয় পরিচালনার মূল উদ্দেশ্য কি হতে পারে ? শুরুর দিকটার মত ভেলর আবার অপমানিত হয়, তবে এ অপমান শুধু ভেলরের একার নয় অপমান দেশের প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যেকটি আত্মার। শুধু একজন কাপুরুষ, কুপুরুষ আগুন্তুকের জন্য।
ঐশ্বরিক ক্ষমতার প্রথম ঘটনাচক্রের আপাতত এখানেই সমাপ্তি।
এবার দ্বিতীয় পরিবর্তনের পালা, তারপর শুরু হবে দ্বিতীয় ঘটনাচক্র
ইশ্বর দ্বিতীয় পরিবর্তন করতে গিয়ে থেমে গেলেন, তিনি তার ঐশ্বরিক ক্ষমতায় দ্বিতীয় পরিবর্তনটি আর করতে পারলেন না । তিনি যে কাজটি পারলেন না তা হল ভেলরিকে শফি সামী তে রুপান্তর করতে পারলেন না, তিনি প্রশ্নাবদ্ধ, ভেলরি’রা কি কখনো শফি সামী হতে পারে? কখনো পারে না। অজস্র প্রার্থনায় সিক্ত যে প্রাণ, হৃদয় থেকে উৎসরিত ইশ্বরের কাছে আকুতি ইশ্বরকে থামিয়ে দিল। তিনি কোন কলংকের অধ্যায় রচিত হতে দিলেন না।
ইশ্বরের ইচ্ছায় ভেলরি শফি সামী হলেন না।
ভেলরি’রা যে কখনো শফি সামী হয়না। ইশ্বরের সৃষ্টি ভেলরি ভেলরিই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।