আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
যখন চুয়েটে পড়তাম, তখন বাচা বাবায় (একটি অস্বাস্হ্যকর একমাএ হোটেল) প্রতিদিন খেতে যেতাম। ওখানে একটা ছেলে কাজ করতো, নাম সেলিম। একদিন ওকে জিজ্ঞেস করলাম,"তোর বাসা কই?" বললো," কুমিল্লা। " "তো এইখানে কি করস?" সে উওর দিলো না।
হয়তো আমারি বুঝা উচিত ছিলো-পেটের টান অথবা migration। পরে জানতে পারলাম এরা ভাই বোন মিলিয়ে ৬ জন। বাপ ১২ মাসের মধ্যে ১০ মাস বাড়ীর বাইরে।
দুনিয়াটা মস্ত বড়, নিজের পেট নিজেই চালাইবো। এইটা ওর বাপেও বুঝছে-তাই হয়তো অন্য কোথাও যৌতুক নিয়া ঘর করছে আর ওর মাধ্যমিক শিক্ষাব্যাবস্হার কপাল পুড়েছে।
আমাদের এক শ্রদ্বেয় স্যার আছেন নাম এস আলম। উনি ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জিনিয়ার পিএইচডি হলেও ওকালতীও পাশ করেছেন। তো একবার অক্সিডেন্টাল নামের কোম্পানী মাগুড়ছড়ায় কি দুর্ঘটনা হলো- সে কিছু উকিল মিলে কেস করে বসলো। এখন মাঝেমধ্যেই সে ঐখানে জনমত সৃষ্টি করতে চলে যান। কে শোনে কার কথা? ক্ষমতা না থাকলে কেউ কিছু করতে পারে না আর সেতো সামান্য শিক্ষক।
তবে এই লোকটা আমার কাছে অসাধারণ-কেন জানেন: সে স্বপ্ন দেখাতে পারে, খুব গভীর স্বপ্ন। তার চিন্তাধারার কাছে আমরা কিছুই না।
কোনো এক সামরিক জান্তা একটা কাজ হাতে নিয়েছিলেন-পাগলাটে কাজ! ম্যাট্রিক পাশ করতে গেলে কমপক্ষে ৩ জন নিরক্ষর লোককে স্বাক্ষর জ্ঞান দিতে হবে। অনেকের কাছেই বিষয়টা হাস্যকর মনে হয়েছিলো। দু-একটা পাগল বলেছিলো ভালো-তার মধ্যে আমিও ছিলাম।
যদিও এই কাজটাতেও দুর্নীতি হয়েছিলো এবং আপনারা হয়তো সবাই জানে দুর্নীতি আমাদের অধিকার।
আমার উপরোক্ত বর্ণিত ৩ জন নানান কিসিমের মানুষের মধ্যে থেকে তুলে আনা। তাদের মধ্যে কেউ আছেন অনেক ক্ষেত্রে ধিকৃত, কেউ আছেন তারে চেনেও না।
আজকাল অনেকেই বড় বড় কথা বলি, কত বড় বড় প্রতীজ্ঞা করি। সেলিমের কি কোনো লাভ হয়েছে, মাগুরছড়ার আগুন কি টেংরাটিলায় ছড়িয়ে পড়েনি?
আমি ফরিদপুর জিলা স্কুলে পড়তাম।
আমার স্কুলের সাথে একটা জেলা পাঠাগার ছিলো। ওখানে বেশ কিছু ভালো গবেষণামূলক বই ছিলো। BNPশাসনামল শুরুর কিছুদিন পর পাঠাগারটি দেখতে গেলাম। হায়! এতো দেখি জামাত-শিবিরের কোচিং সেন্টার। বুকের ভিতর মুচড়ে উঠলো।
প্রথমেই মনে হলো ঐবইগুলোর কি হলো? তারপর মনে হলো আমরা যা পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম পরবর্তী প্রজন্ম কি সেটা পেলো না?
চন্দ্রশেখরের নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। তার মাঝেমধ্যেই একটু ঘোর লেগে থাকতো-কি হয়েছে? সে সুর্য্যের মরণ নিয়ে চিন্তাগ্রস্হ। পাগল হয় আমগাছে! যাই হোক, মাত্র ১৮ বছর বয়সে জাহাজে করে Englandপাড়ি জমান। জাহাজে কিছু হাবিজাবি অন্ক কষেন, কিছুদিন পর নোবেলটা পকেটস্হ হয়। উল্লেখ্য তার এক ভাই ১৯৮৫ সালে physicsনিয়া পাগলামির কারণে নোবেলটা পকেটে ভরেন।
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল তার কোনো এক বই dedicate করেছিলেন সেইসব ঝরে পড়া শিশুদের প্রতি যাদের মধ্যে কেউ না কেউ Einstein অথবা অতিমানবীয় মস্তিস্ক নিয়ে জন্মেছিলো। আমাদের দেশের এমপি, মন্ত্রীরা এতো ছোটোখাটো জিনিস নিয়ে মাথা ঘামান না। তারা তো উন্নয়নের জোয়ারে দেশের ডায়রিয়া বাধায় দিতে চান আর আমরা চাই দুর্নীতির অধিকার। অবশ্য কেন চাইবো না? BCS ক্যাডার যে হন তার বেতন কত? সর্বসাকূল্যে ১৩,০০০ টাকা মাত্র, একজন পুলিশ তার বেতন সর্বসাকূল্যে ১২,০০০ টাকা মাত্র। চালের কেজি কত? সয়াবিন তেল কত? আলকাতরা তো খাইতে পারে না।
তারাও তো আপনার আমার মতো সাধারণ মানুষ।
দুঃখ লাগে সেই সেলিমের জন্য দু'মুঠো ভাতের জন্য নিগ্রহের শিকার হয়, দুঃখ লাগে সেই শিক্ষকের জন্য যার প্রতিবাদের জন্য মৃত্যুর হুমকির চিঠি পেতে হয়।
কপাল ভালো ৫২',৭১' এর যোদ্বাদের ৯৫% মারা গেছে। যারা বেচে আছেন তাদের অলরেডী জবান বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমরা মুখ দেখাতে পারি।
আমার তো কোনো লজ্জা নেই! পুরা জাতিরই তো লজ্জা নাই (দু'একটা বাদে)............
থাকলে জানায়েন!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।