আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যরা নির্দোষ!

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির মামলায় দুদকের করা তদন্ত প্রতিবেদনে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম, পর্ষদের সাবেক সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমল, সুভাষ সিংহ রায়, মো. আনোয়ার শহিদ ও জান্নাত আরা হেনরি এবং পর্ষদের পক্ষে নিরীক্ষা কমিটির প্রধান কে এম জামান রোমেল ও সদস্য সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্তর নাম আলোচনায় ছিল। তাঁদের মধ্যে সাইমুম সরোয়ার কমলকে তিন কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীকে দুদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এ সময় সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার একাধিক কর্মকর্তার কাছে যেতেন বলে স্বীকারও করেছিলেন এই উপদেষ্টা।

সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বাকি সদস্যদেরও দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সুভাষ সিংহ রায়, জান্নাত আরা হেনরি, কে এম জামান ও সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্ত এর আগে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে এই বিপুল আর্থিক অনিয়মের জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছিলেন। পরিচালনা পর্ষদের কোনো দায় নেই বলে তাঁরা দাবি করেছিলেন। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনও যেন তাঁদের দাবিরই প্রতিধ্বনি করছে। দুদকও সব অভিযোগ এনেছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

গত বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত) জিয়াউদ্দিন আহমেদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সংশ্লিষ্ট তদন্তপ্রধান ও উপপরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী। তবে কমিশনের কাছে এখনো এই প্রতিবেদন জমা পড়েনি বলে দাবি করেছেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবউদ্দিন। দুদক সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে হল-মার্কের এমডি, চেয়ারম্যান, মহাব্যবস্থাপকসহ (কমার্শিয়াল) ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৪ অক্টোবর রমনা থানায় করা ১১ মামলায় আসামি করা হয়েছিল ২৭ জনকে। তদন্ত প্রতিবেদনে নতুন করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আর মামলার এজাহারে নাম থাকা  ব্যাংকের আটজন কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে ১৫ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নামও রয়েছে। তিনি আগে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি ছিলেন। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মো. ইব্রাহীম খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, এত বড় একটি ঘটনায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না।

যেকোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদ সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তাঁদের সর্বশেষ অনুমোদন ছাড়া কোনোভাবেই এত বড় অঙ্কের বিল, এলসি পাস হতে পারে না। ইব্রাহীম খালেদ বলেন, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক একই ধারণা পোষণ করে বলেই তাৎক্ষণিকভাবে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পর্ষদের কেউ ব্যক্তিগতভাবে বা প্রভাবশালী কেউ এ আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কি না, সে বিষয়ে ভালো করে তদন্ত করে দেখার পরামর্শ দেন তিনি।
তদন্ত প্রতিবেদনের ২৫ আসামি যাঁরা: হল-মার্কের এমডি মো. তানভীর মাহমুদ ওরফে তফছীর, তাঁর স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম (জামিনে আছেন), তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল) তুষার আহমেদ, হল-মার্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. জিয়াউর রহমান, আনোয়ারা স্পিনিং মিলসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম, স্টার স্পিনিং মিলসের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।