সুন্দরী বালিকাদের যত্ন করে কামড়াই
আমার ক্রিকেটজ্ঞান বাশারের মতোই। স্কুলজীবনে বছর চারেক আমি আমার বন্ধুদের সাথে নিয়মিত প্যাড, বিচিগার্ড ও খাঁটি ক্রিকেটবল নিয়ে ক্রিকেট খেলেছি। আমি ঠিকমতো ব্যাট বা বল এস্তেমাল করতে পারতাম না বলে অনেক ভেবেচিন্তে আমার সহৃদয় বন্ধুরা আমাকে হাতে গ্লাভস ধরিয়ে দেয়। অবশ্য আমি ফুটবল খেলতে গিয়েো গোলকীপিং করতাম, তাই উইকেটকীপার হিসেবে আমি মোটামুটি সম্মানজনক একটি ইমেজ তৈরি করে ফেলি, এবং উইকেটকীপার হিসেবেই স্কুলজীবন ফুরানোর পর মাঠের ক্রিকেট থেকে অবসর নিই।
কলেজে উঠে আমি কলেজের মাঠে খেলার ফুরসৎ পেতাম না, কদাচিৎ বাড়ির সামনে রাস্তা দখল করে পড়শি পোলাপানদের সাথে টেপটেনিস নামক এক দারুণ বস্তু দিয়ে খেলতাম।
রাস্তায় খেলতে গিয়ে আমি অফ এ আমার অসাধারণ প্রতিভা এবং লেগে আমার অসাধারণ দুর্বলতার কথা টের পাই, এবং যেহেতু অফসাইডে দেয়াল এবং লেগসাইডে ফাঁকা জায়গা ছিলো, তাই আমার রানের খাতা তেমন আর খোলা হতো না।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বুয়েটের বেচারা ক্যাফেচত্বরে আমি মাঝে মাঝে গলাবাজি করে ব্যাট বা বল হাতে নিতাম। সাধারণত এক ওভার বল করে বিশ পঁচিশ রান দিয়ে আমি ব্যাটসম্যানের দক্ষতায় বিরক্ত হয়ে টেবিল টেনিস খেলতে চলে যেতাম। ব্যাটিং করতে গেলে অত কষ্ট হতো না, কারণ জাতীয় দলের ওপেনারদের মতো আমিও একটা বল ঠেকিয়ে আরেকটা বল ফসকে তৃতীয় বলে ঠিক ঠিক আউট হয়ে দুই তিনবার শ্যাডো শট (যেগুলি কখনোই খেলায় এস্তেমাল করতে পারবো না) খেলতে খেলতে উত্তরসূরীর হাতে ব্যাট দিয়ে ভাগতাম। বুয়েটের ক্যাফেচত্বরে উইকেটকীপার না হলেও চলতো, তাই গ্লাভস হাতে আমি যে রীতিমতো টাইগার তা প্রমাণ করার সুযোগও আমার আসেনি।
বুয়েটের পালা চুকানোর পর চাকরিবাকরির শুরুতে আমার মধ্যে আবারও অমোচনীয় ক্রিকেটতৃষ্ণা জেগে ওঠে। আমার বন্ধুরাও আমার মতোই, তাই আমরা অচিরেই আমার বন্ধু রাশেদের বাড়ির সামনের রাস্তা চান্দে চান্দে দখল করে খেলতে থাকি। সুন্দরী বালিকাসমৃদ্ধ বাড়িগুলিকে আমরা বাউন্ডারি হিসেবে চিহ্নিত করি, এবং চার ছয় মারার প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকি। ওসব বাড়িতে বল গিয়ে পড়লে কে আগে বল আনতে যাবে এ নিয়ে আমাদের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়। পাশাপাশি খতরনাক বাড়িওয়ালাদের বাড়িগুলোতে নেগেটিভ মার্কিং এর ব্যবস্থা জারি করা হয়, এবং সেসব বাড়িতে বল পড়লে চাইতে না গিয়ে দায়ী ব্যাটসম্যানকে জরিমানা করা শুরু হয়।
আমার অনাদায়ী জরিমানা বেশ বড় অঙ্কে পৌঁছানোর পর আমি নিজেই একদিন গন্ডগোল করে খেলা পন্ড করে দিই। মনের দুঃখে আমার বন্ধু রাশেদ বিয়ে করে ফ্যালে এবং খেলার ঐতিহ্যটি পন্ড হয়ে যায়।
তো ইদানীং আবার আমার ক্রিকেট খেলতে মন চায়। আমার দীর্ঘ খেলোয়াড়ি জীবনে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে সুন্দরীদের আর্তনাদ কুকুরের দাঁতখিঁচানি সয়ে আমি যেসব অমূল্য ক্রিকেটজ্ঞান লাভ করেছি, তা আমি বাশারের সাথে শেয়ার করতে চাই। এ প্রসঙ্গে আমি বাশার মনে করিয়ে দিতে চাই অস্টিন পাওয়ারসকে বলা ডক্টর্ ঈভল এর সেই স্মরণীয় সংলাপটি, "উই আর নট সো ডিফ্রেন্ট ... ইউ অ্যান্ড আই!"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।