আমার ভিতর তুমি থাকো আমি কোথায় রই, আমি না থাকিলে তোমার থাকার জায়গা কই?
বাসর রাতে নাকি বিড়াল মারতে হয়। তাইতো বিড়াল ধরে খাটের তলায় বস্তা পুরে রেখে দিয়েছি। শুনেছি বাসর রাত বিড়াল মারতে পারলে সে পুরুষের সংসারে যেমন কর্তৃত্ব বজায় থাকে তেমনি সংসার নাকি সুখের হয়। আর ভাগ্যে যদি জল্লাদ স্ত্রী জুটেও যায় তাহলে নাকি সে স্ত্রীর মেজাজ জল দিয়ে আগুন নেভানোর মত ঠান্ডা হয়ে যায়। সংসার জীবনে সুখ কে না চায়? তাই আমি যত সব অশুভ শক্তি দুর করতে বিড়াল মারার ব্যবস্থা নিয়েছি।
বাসর ঘরে ঢুকতেই বিড়ালটা মিঁউ মিঁউ করে ডেকে উঠলো। আর বউ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে খাটের এক কোনে বসে সারা ঘরময় চেয়ে কি যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে। রাত তো ক্রমেই গভীর থেকে আরো গভীর হতে চলেছে। এক সময় খাটের তলা থেকে বস্তায় আটকে রাখা বিড়ালটা বের করে বউয়ের সামনে লাঠি পেটা করে মেরে ফেললাম। এ দৃশ্য দেখে বউ আমার আঁতকে উঠে ভয়ার্ত কণ্ঠে আমাকে বললো, তুমিতো দেখছি খুব নিষ্ঠুর, দয়া-মায়া বলতে তোমার কিছই নেই।
বিড়ালটা না হয় দুধ-মাছ কিংবা মাংস খেয়েই ফেলেছে, তাই বলে আজকের দিনে বিড়ালটাকে এভাবে খুন করলে? আমি ওর কথার জবাবে তেমন কিছু বলিনি, শুধু বলেছিলাম, ও তুমি বুঝবেনা। কিন্তু বাসর রাতে কেন যে আমি বিড়াল মেরেছি সেটাতো আর ওকে বলা যায়না। এর কারন ব্যাখ্যা করলেতো সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। তাইতো বাসর রাতে কেন বিড়াল মেরেছি সে কথা বউকে আর বলিনি।
ওকে আমার বিয়ে করার প্রায় একমাস পার হতে চললো।
ওর আদর সোহাগ ভালোবাসার কোনো কমতি দেখছিনা। আমার মনে হচ্ছে বাসর রাতে বিড়াল মারার কারনেই এমন সুখের পরশ পাচ্ছি। শুনেছি নারীর আসল রুপ অর্থাত স্বভাব-চরিত্র প্রকাশ পায় বিয়ের পর। এভাবে মহাসুখে আমাদের দিনকাল ভালোই যাচ্ছিল। এরমাঝে আমাদের বিয়ের মাস তিনেক পার হয়েছি কি হয়নি এমন সময় ও আমাকে বললো-গো মূর্খ! আমিতো ওর কথা শুনে অবাক।
বলে কি! আমি গো মূর্খ! আমি হলাম একটা দলের ক্যাডার। আমার কথায় অনেক কিছুই হয়ে থাকে। বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। আর আমাকে আমার বউ বললো গো মূর্খ! এই আন্ডার মেট্রিক কদম আলী একসময় এম.পি হবে তারপর মন্ত্রীও হতে পারে। এই স্বপ্ন বউয়ের কাছ প্রকাশ করতেই বউ বলে কিনা গো মূর্খ! আমার বউ আমার থেকে দুই ক্লাশ বেশী পড়েছে।
তাই বলে গো মূর্খ বলবে! এই ক্যাডারি করেইতো দুপয়সা কামিয়ে সংসারে জৌলুস বাড়িয়েছি। বাপেরতো তেমন কিছুই ছিলনা। আর এই জাঁক-জমক পূর্ণ জৌলুস দেখেইতো আন্ডার মেট্রিক কদম আলীর সঙ্গে তোমার বাবা তোমার বিয়ে দিয়েছে। কেন এম.পি বা মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে আমার দোষের কী? এদেশে এমন করে এম.পি বা মন্ত্রী কি হতে পারেনা?
বউয়ের মুখে দেখি এখন বোল ফুটেছে। ভেবেছিলাম বাসর রাতেতো বিড়াল মেরেছিই।
কিন্তু এ যে দেখছি ভিজে বিড়াল। ইদানিং আমাকে আবার জ্ঞানও দিচ্ছে। নীতিজ্ঞানের কথা, স্বদেশপ্রেমের কথা বলে আমার স্বভাব চরিত্র পাল্টাতে বলছে। এখন দেখি ঘরের মধ্যেই ভেজাল। দিন যতই যাচ্ছে ওর আসল রম্নপ প্রকাশ পাচ্ছে।
বুঝেছি এ বিড়ালের গলায় এবার ঘন্টা বাঁধতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।