আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কতটুকু স্পর্শ করি, কতটুকু স্পর্শিত!

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

কেউ কারো সংবেদন কতটুকু বুঝতে পারে? জিজ্ঞাসাটা আমার নিজের কাছেই। আমি যখন আমার সংবেদন কাউকে স্পর্শ করতে দেখি তখন যতটুকু ভাল লাগে, কারো সংবেদন ততটুকু কি আমার স্পর্শ হয়! বিষয়টা আমার কাছে একপেশে মনে হয়। আমি কার সংবেদন স্পর্শ করতে পারি! ভেবে দেখলাম, যার স্পর্শ করতে চাই, তারটাই পারি। শুধু কিছুটা সময় নিজেকে তার জায়গায় বসিয়ে দেখতে হয়। এছাড়া আর কার কার ব্যাপারে এমনিতেই সংবেদন স্পর্শ করে! সেক্ষেত্রে বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী, নিকটাত্মীয়, একদম ঘনিষ্ট কিছু বন্ধুর নাম চলে আসে।

এদের অনেককেই আমি পছন্দ করি না, আমাকেও তেমনি কিন্তু তাদের সংবেদন আঘাতপ্রাপ্ত ও উল্লসিত হলে আমিও তার স্পর্শ পাই। এটা নিজস্ব বলে বোধ হয়। এদের সাথে সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, দীর্ঘ পথচলার, সুখ, দুঃখ, হাসি, আনন্দ সংমিশ্রনে বলে এটা হয় মনে হয়। এর বাইরের বিশাল পরিচিত মানুষজন, জনগণ ও পেশাসূত্রের সহযোগী কত মুখ, তাদের সাথে সংবেদনের প্রকাশ আন্তরিক হতো না আমার। কেমন যেন আরোপিত, অভিনীত ছিল।

কয়েকটা ঘটনা আমার এই সংবেদনকে বহুমাত্রিক রূপ পরিগ্রহের বিষয় করেছে। আমি দেখলাম অন্যের মুখে আমার সেই অভিনীত মুখের প্রতিচ্ছবি। তারাও তাই করছে যা আমি তাদেরকে উপহার দিয়েছি। ভেতরে আমার তোলপাড় হলো। এ অন্যায়! আমি সহ্য করতে পারি না মুখোশ পরা মানুষের সংবেদন স্পর্শের হাতরানি।

কেঁচো হয়ে গর্তে সেধিয়ে গেলাম। ভুলতে বললাম নিজেকে। তোমার দেখা মানুষ সব তোমার মতই। দরকার নিজেকে সংশোধন। কিভাবে! নিজেকে বসিয়ে দেয় তার আত্মার ভেতরে।

আমি তাই করলাম। আমি স্পর্শ করলাম এবার তার সংবেদনকে। খাটি। তাতে নিজেকে নিগৃহিত দেখলাম, অশান্ত দেখলাম, বিক্ষিপ্ত দেখলাম, দুঃখিত দেখলাম। আমার ভেতরে জন্ম নিল অনেক মানুষ।

প্রতিটি মানুষ আমাকে স্পর্শ করে। প্রতিটি মানুষকে ধারণ করে ইশ্বর হয়েছেন। মানুষ ইশ্বর হয়ে গেলে তার মানবীয় অনুভূতি নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের সুখ মানুষ হিসাবে যাপনের, ইশ্বর হিসাবে নয়। আমি নিজের সংবেদনে কোন চাপ দেখলাম না, কারণ ইশ্বর অনেক বেশী ধারণক্ষম।

আমি নিজেকে হারালাম, কারণ ইশ্বর সবকিছু বিলীণ করে দেয়। একদিন আমি নিজেকে আবিস্কার করলাম মানুষ হিসাবে নয়, একজন মানুষের ছায়া হিসাবে। যেখানে বাস করতো আগে কৌশিক নামে কেউ। নিজের একান্ত অনুভূতিগুলো জানার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম। আমার কি কি বিষয় ছিল যা আমাকে দুঃখিত করতো, মনে করার চেষ্টা করলাম, কিন্তু অনেক বেশী ধারণক্ষমদের নিজের পুরোটা দেখা কষ্টসাধ্য, কোনটা অন্যের আর কোনটা নিজের তাই আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়লো।

তবে আমি নিশ্চিত কোননাকোনভাবে আমার ভেতরের মানুষবিয়োগ সম্ভব হবে, আমি স্পর্শিত হবো আমার স্বত্তায়, আমার সংবেদন চারপাঁচটে সুখ, দুঃখ, হতাশা আর চরমতম পুলকে সিটি বাজাবে, অট্টহাসিতে জানাবে কৌশিক ফিরে এসেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.