আমি একজন নিরাপদ ব্লগার
তিনটার দিকে হঠাৎ ফোন। ভাবী বললেন, তুমি একটু আমাদের বাসায় এসো। এর আগে কখনো ভাবীর বাসায় যাইনি তাই জেনে নিলাম বাসা নম্বর। ভাবীর বাসা উত্তরা দশ নম্বর সেক্টরে, তাই যেতে হবে একটু ঘুরে। ভাবীদের বাড়ীটা একটা ফ্লাট বাড়ী।
ফ্লাটটি তার ভাই বোনদের মধ্যে ভাগ করে তৈরী। দেতলায় থাকেন ভাবীর আব্বাও ভাই। তিন ও চার তলায় তার বোনরা । বলা যেতে পারে, পারিবারিক ফ্লাট। বললেন, আমার আব্বু তোমার সাথে একটু কথা বলবেন।
আমি বরাবরই বড়দের সাথে কথা বলতে আগ্রহী । আমার সাথে বড়দের জমে ভাল। কথা বলার আগে ভাবীর আব্বু সম্বন্ধে বলে নেয়া প্রয়োজন। তিনি হচ্ছেন মো: ইউনুস মিয়া। যিনি ছিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আরো অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেছেন ।
তাঁর সাথে কথা বলব, বুঝতেই পারছেন। আমার বাড়ি কুমিল্লা হওয়ায় দেশি মানুষ পেয়ে তিনি কথা বলতে খুব আগ্রহী হলেন। অনেকক্ষন পর তিনি বাইরে হাটতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আমার সামনে আসলেন। মানে আমার সাথে কথা বলে, বাইরে বের হবেন। বৃদ্ধ মানুষদের সাথে কথা বলার সময় প্রথমেই তাদের শরীরের অবস্থা জিজ্ঞাসা করলে,তারা খুশি হয়।
তাই জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কেমন আছেন?
- ভাল ।
-আপনার কি ডায়াবেটিস আছে?
-আছে। পনের বছর ধরে।
-ইনসুলিন নিতে হয়।
- ছয় বছর ধরে নিচ্ছি।
-নিয়মিত হাটেন।
- বাড়ীর আশে পাশে হাটি।
তোমার বাড়ী যেন কোথায়?
-কুমিল্লায়। নাঙ্গলকোটে।
-আচ্ছা।
আমার বাড়ী চাদপুর। কুমিল্লার মানুষরা ভাল, এ রকম মানুষ হয় না।
এই জীবনে প্রথম শুনলাম, কুমিল্লার মানুষ ভাল। আমাকে অনেকেই বলেছে কুমিল্লার মানুষ ভাল না।
যাই হোক কথা চলছে...
-আমার দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে।
বড় ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকে আর ছোটজন আছে প্রশিকায়।
বড় ছেলে অষ্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পরিসংখ্যানে । এখন এম আইটিতে আছে।
ছোট ছেলে সিএসই থেকে পাশ করে প্রশিকার সিস্টেম অ্যানালিস্ট ছিল, এখন আইটি ম্যানেজার।
মেয়ের জামাইরাও এক একজন প্রতিষ্ঠিত।
কেউ বিশ্ববিদ্ব্যালয়ের ভিসি, আবার কেউ মন্ত্রানালয়ের ডিজি ।
এবার বললেন গিয়েছিলেন পটুয়াখালী মেয়ের জামাই বাড়ী দেখতে। জামাই বাড়ী দ্বীপের মধ্যে। সেখানে সৌর চুল্লির মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপন্ন হয়। বাড়ীতে সুন্দর ফুলের বাগান।
এ রকম অনেক কথাই চলল । মন চায় আরো অনেক কথা বলি। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার খুব আগ্রহ ছিল। যেমন কেন আমরা পারছি না অন্যদের সাথে? আমাদের থেকে অন্যান্য দেশের ছেলে মেয়েরা কি মেধাবী? ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু সময় না থাকায় উঠতে হল।
তবে এখান থেকে একটা জিনিস বুঝলাম, দেশের মাথাগুলো ঘুটি কতক পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
আর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে না বলতে পারা কথা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব কোন এক সময়। আশা করি আপনারাও সারা দিবেন সেই আলোচনায়।
ছবিটি: ইন্টারনেট থেকে নেয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।