রূপা ভাবীর ফিরে আসা
-মাহফুজ খান
একদিন রূপা ভাবীকে দেখে মনে হয়েছিল যে, তিনি আর সব সাধারন বাঙালী নারীর মতই একজন। ভুলটা ভাঙ্গল সেদিন, যেদিন দেখলাম তিনি ডেলিভারির (সন্তান জন্মদানের) আগের দিন পর্যন্ত আমাদের সাথে অফিসে ছিলেন।
যা হোক, তার কোলে এখন একটি ফুটফুটে পরীর মত মেয়ে। রাজপুত্রের মত একটি পুত্রও আছে। শোনা যাচ্ছে তিনি আবারো তার কর্মক্ষেত্রে যোগ দিচ্ছেন।
'নারী অবলা'- এ কথাটি এখন আর মানতে ইচ্ছে করে না।
তবে জাপানে একটি বিষয় আমি সবসময় লক্ষ্য করি, আর তা হলো এদেশের মেয়েরা অনেক কর্মঠ হয়। আমার দেশের মেয়েরাও কর্মঠ। তবে তা একটি বিশেষ শ্রেণীতে পরিলক্ষিত হয়। কখনো সেটি পরিবার বা দারিদ্রতা কেন্দ্রিক।
কিন্তু আমাদের প্রয়োজন সেটা সমাজ বা জাতী কেন্দ্রিক হোক। রূপা ভাবী কিছুটা হলেও প্রমাণ করেছেন যে, আমাদের দেশের মেয়েরাও ইচ্ছে করলে অনেক কিছু করতে পারে। কেননা 'ইচ্ছা শক্তি', এমন একটি শক্তি যা কিনা একটি বড় পরিবর্তনের মূল কারণ গুলোর অন্যতম।
কাজের স্পৃহা মানব জাতির জন্য সবসময়ই সুফল বয়ে আনে। আর তা যদি নারীর মধ্যে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় তাহলে তো একটি সমাজ কিংবা দেশের উন্নয়ন হতে বাধ্য।
সহজ সরল অংক। কিন্তু একটি অসচেতন নীতিমালা সেই সরল অঙ্কটিকে অনেক জটিল করে ফেলে। ফলে কার্য এবং তার ফলাফল নারীকে বিপদগ্রস্ত করতে পারে। নারী তখর পরগাছা হয়ে বেঁচে থাকে। যা কিনা নারীকে শঙ্কিত ও অসহায় করে।
আর যারা নারী উন্নয়নে সর্বদাই বাধার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তারা এই ভেবে আতংকিত যে, যদি সরল অঙ্কটি ভুল হয়। তখন তারা ধর্মের বেড়া জালে নারীকে আবদ্ধ করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
নারী-কন্যা-জায়া-জননী। যদিও এ কথাটি ধ্রুবক সত্য। তবে আমরা সর্বদাই একটি কথাই বিশ্বাস করতে চাই যে- “মানুষ” শব্দটির মাঝে আমরা সকলে সমান।
এক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারী উভয় উভয়ের সাহায্যকারী হিসেবে বিবেচিত হওয়া সমীচিন।
আমরা চাই রূপা ভাবীরা বার বার ফিরে আসুক। সমাজে পুরুষের সাথে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুক। একদিন আমার দেশটি জাপানের চেয়েও একধাপ এগিয়ে থাকবে। এই স্বপ্নটি দেখার দুর্দান্ত সাহস করতে বেশ ভালই লাগছে।
ইচ্ছে ছিল রূপা ভাবীকে নিয়ে একটি গণ্প লিখব। গল্পটির নামও ঠিক করেছিলাম- "আমাদের রূপা ভাবী"। গল্পটি এখনো লেখা হয়নি। তবে আমি আশাবাদী। সময় করে ঠিকই একদিন লিখে ফেলব।
[একটি চিন্তামূলক রচনা] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।