আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'মুসলমান হইয়াও চাকরির ভয়ে হাতে শাঁখা কপালে সিঁদুর পরতে হইলো'--সাভারে আল মুসলিম গ্রুপের গার্মেন্টস শ্রমিক

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

'অভাবের সংসারে দু'বেলা দু'মুঠো ভাতের জন্য পেটের দায়ে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি নিছি কিন্তু ধর্মানস্নর তো হই নাই। অহন মুসলমান হইয়াও চাকরি হারানোর ভয়ে হাতে শাঁখা কপালে সিঁদুর পইরা হিন্দু সাজতে অইছে'_ কথাগুলো ক্ষোভে-দুঃখে জানালেন সাভারের রাজ্জাক প্ট্নাজায় অবস্টি্থত আল মুসলিম গ্রুপের মহিলা গার্মেন্টকর্মী রিনা আকতার। শুধু তিনি নন, এ রকম আক্ষেপ আরো অনেকের। শুধু মহিলা নয়, ওই গার্মেন্টের পুরুষ শ্রমিকদেরও ধুতি ও পাঞ্জাবি পরিয়ে খাঁটি হিন্দু বাবু বানিয়ে বুধবার বিকেলে রাজধানীর বনানী মডেল স্ট্কুল প্রাঙ্গণে মুন্সীগঞ্জ-1 আসনে সিরাজদিখান-শ্রীনগরের সংখালঘু সমঙ্্রদায় বিএনপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে সাভার থেকে বাসে করে ওইসব নারী-পুরুষ শ্রমিককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ফ্যাক্টরির মালিক শেখ আবদুল্ক্নাহকে মহাজোট নেতাকর্মীরা সাভারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। আসল্পম্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-1 আসনে (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) বিএনপির প্রার্থী হতে চাচ্ছেন আল-মুসলিম গ্রুপের ব্যবস্ট্থাপনা পরিচালক শেখ আবদুল্ক্নাহ। বুধবার বিকেলে রাজধানীর বনানী মডেল স্ট্কুল প্রাঙ্গণে তার সমর্থনে মুন্সীগঞ্জের কয়েক হাজার হিন্দু ধর্মাবলল্ফ্বী বিএনপিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু যোগদানে আসা ওইসব হিন্দু নারী-পুরুষের মধ্যে অধিকাংশই ছিল তার গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির মুসলমান শ্রমিক। বুধবার সকালে সাভার রাজ্জাক প্ট্নাজায় অবস্টি্থত তার গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির মুসলমান মহিলা শ্রমিকদের চাকরি হারানোর ভয় দেখিয়ে জোরপহৃর্বক হাতে শাঁখা ও কপালে সিঁদুর পরিয়ে 7 শ' শ্রমিককে বাসে করে ওই যোগদান অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়।

এছাড়াও পুরুষ শ্রমিকদেরও ধুতি ও পাঞ্জাবি পরিয়ে খাঁটি হিন্দু বাবু বানিয়ে যোগদান অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যেই একজন মহিলা অপারেটর রিনা। তিনি ক্ষোভ আর দুঃখের সঙ্গে জানালেন, পেটের দায়ে চাকরি করি তাই মুসলমান হয়েও হাতে শাঁখা ও কপালে সিঁদুর পরতে হয়েছে। মালিকের নির্দেশে লাইনম্যান ও সুপারভাইজারসহ বড় স্যাররা গার্মেন্টের হিন্দু-মুসলমান সব মহিলা শ্রমিককে হাতে শাঁখা ও কপালে সিঁদুর পরিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান। এছাড়াও পুরুষ শ্রমিকদেরও ধুতি-পাঞ্জাবি পরানো হয়।

এদিকে এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর বৃহসঙ্তিবার সকালে মহাজোটের নেতাকর্মীরা থানা বাসসদ্ব্যান্ডে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য ওই ব্যবসায়ীকে অবিলল্ফ্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়াও সমাবেশে আল মুসলিম গ্রুপের মালিক শেখ আবদুল্ক্নাহকে সাভারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ চৌধুরী জানান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আশরাফ উদ্দিন খান ইমু, মুরাদ জং, আলী হায়দার, জাহাঙ্গীর আলম ও আবদুল হালিম। এ ব্যাপারে শেখ আবদুল্ক্নাহ সমকালকে জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদব্দে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।

দুপুরের খাবার, একটা ভালো শাড়ি, নগদ 100 টাকা দিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো সমাবেশে; সেখানে গিয়ে দেখলাম হিন্দুরা খালেদা জিয়ার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছে। আমরা বিএনপিতে যোগ দেওয়া না দেওয়ার কী জানি? মুন্সীগঞ্জ-1 আসনের সিরাজদিখান উপজেলার শেখেরনগর ইউনিয়নের চিত্রকোট, ঘনশ্যামপুর, শেখেরনগর, পশ্চিমহাটি জেলেপাড়া, উত্তরহাটি পাল ঋষিপাড়া, রাজানগর, ঘোষনগর, কালসুর প্রভৃতি গ্রামের মঞ্জু দে, রাখী দাস, শিবানী ম-ল, রণধীর শীল, সনস্নোষ পালসহ অনেকেই এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয়নি। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চার দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী এক বিএনপি নেতা জানান, 'মনোনয়ন নিশ্চিত করতে মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যবসায়ী শেখ মোঃ আবদুল্ক্নাহ ম্যাডামের সামনে এ নাটকের আয়োজন করে। এর সঙ্গে দলকে জড়ানো ঠিক হবে না। তবে ঘটনায় এই অঞ্চলের দলের ভাবমহৃর্তি দারুণভাবে ক্ষুণম্ন হয়েছে।

এই ধাপ্টপ্পাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে ম্যাডামের নামও। ' ওই অঞ্চলের জনৈক ব্যবসায়ী জানান, কথিত শিল্কপ্পপতি হিন্দু ধর্মাবলল্ফ্বী লোকজনকে তার বাড়িতে নিমন্পণ করে নিয়ে গেছেন। অনেকে ভেবেছেন, আবদুল্ক্নাহ সাহেব নির্বাচন করবেন এ কারণেই ডেকেছেন। কিন্তু এটা যে বিএনপিতে যোগদানের নাটকে পরিণত হবে তা কেউ ভাবেনি। এটা প্রতারণার শামিল।

এ ব্যাপারে ওই যোগদান অনুষ্ঠানের অতিথি বিএনপি নেতা সাবেক পানিসমঙ্দ প্রতিমন্পী গৌতম চত্রক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি অনুষ্ঠান শুরুর মাত্র 1 ঘণ্টা আগে জেনেছি। তারপরও অনুষ্ঠানকে আমার সাজানো নাটক মনে হয়নি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.