আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্মনিরপেক্ষতার মিথ্যা দাবিদার ভারতের হায়দারাবাদে চলছে মুসলমান শহীদ করার দাঙ্গা। তথাকথিত মানবতাবাদীরা কোথায়? মুসলমান দেশের নেতারা নিশ্চুপ কেন?

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমাদেরকে অর্থাৎ মুসলমানগণকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। অতএব, তোমাদের দায়িত্ব হলো- নেক কাজে আদেশ করবে আর পাপ কাজে নিষেধ করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। ’ এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা পৃথিবীতেই মুসলমানগণ ইসলাম-এর খিলাফ কিছু প্রকাশ পেলেই প্রতিবাদ করেন। আর এটাকেই বিধর্মীগুলি সন্ত্রাসমূলক আচরণ বলে প্রচার করে। নাউযুবিল্লাহ! আর ইহুদী-নাছারা, বৌদ্ধরা সারা পৃথিবীব্যাপী আর মুশরিকগুলি ভারতের সর্বত্র মুসলমানদের প্রতি যুলুম করে শহীদ করে যাচ্ছে।

এর বিরুদ্ধে এরা কখনো উচ্চবাচ্যও করে না। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দারাবাদ ও সানগারেড্ডি শহরে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা চলছে। ২৯ মার্চ ২০১২ ঈসায়ী তারিখ হতে শুরু হওয়া এই দাঙ্গায় মুসলমানদের বহু মসজিদ ও বাড়িঘর পুড়ানো হয়েছে, লুটপাট করা হয়েছে মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে মুসলিম স্থাপনা। তবে মুসলমানের আহত হওয়ার কথা প্রকাশ করলেও নিহতের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো। দেশটির পুলিশের ‘স্পেশাল ব্রাঞ্চ’র ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিভাগ’র একটি সূত্র জানিয়েছে, “কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা, অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের হুইপ এবং সানগারেড্ডি শহর থেকে বিধানসভার সদস্য, টি জয়প্রকাশ রেড্ডি এই দাঙ্গা সৃষ্টির মূল হোতা।

সেই হিন্দু মৌলবাদী উগ্র সন্ত্রাসীদেরকে মুসলমানদের উপর আক্রমণ করতে লেলিয়ে দেয়। ” পুলিশের সূত্র জানায়, “রেড্ডির দিকেই মূল সন্দেহের তীর। তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ যোগাড় করা হয়েছে। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কিরন কুমার রেড্ডির সাথে তার সু-সম্পর্কের কারণে তা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। ” খবরে বলা হয়, দাঙ্গার সূচনা হয় গত মার্চ মাসের ২৯ তারিখ সানগারেড্ডি শহরে।

ঐ শহরে এক সাইবার ক্যাফেতে কম্পিউটারের স্ক্রীন সেভারে মৌলবাদী হিন্দুরা একটি ছবি সেভ করে। সেখানে দেখানো হয়, “রাম একটি মুসলিম স্থাপনা ধ্বংস করছে। ’ এই বিষয়টি মুসলমানদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা তৎক্ষণাত তার প্রতিবাদ করে। হিন্দুরা এই প্রতিবাদ শুনে জড়ো হয় এবং মুসলমানদের উপর চরম আক্রশে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মৌলবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীরা মুসলমানদের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়।

পরিস্থিতি পর্যায়ক্রমে উত্তপ্ত আকার ধারণ করতে থাকে। গত ৬ই এপ্রিল ছিল হিন্দুদের ‘হনুমান জয়ন্তী’। এ সময় পুলিশ দাঙ্গা এড়াতে উগ্রবাদী হিন্দুদের সংগঠন ‘বিশ্বহিন্দু পরিষদ’র নেতা প্রাভিন টোগাডিয়াকে ঐ এলাকায় না যেতে বার বার অনুরোধ করে। কিন্তু সে এরপরও ঐ এলাকায় যায় এবং র‌্যালির মধ্যে মুসলিমবিরোধী উত্তেজক বক্তব্য প্রদান করে। এরপর পরিস্থিতি বিপর্যয়কর রূপ ধারণ করে।

এর একদিন পরেই ৭ই এপ্রিল হায়দারাবাদে ‘একটি মন্দিরে সবুজ কাপড়ে মুড়ানো গরুর গোশত পাওয়া গিয়েছে’ এমন অজুহাতে হায়দারাবাদে নিরীহ মুসলমানদের মসজিদ ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয় মৌলবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীরা। ৭-৮ এপ্রিল দুই দিন এই দাঙ্গা তীব্র আকার ধারণ করে। পুলিশ ঐ এলাকায় কারফিউ জারি করলেও মুসলমানদের উপর আক্রমণ থেমে থাকেনি। ১৩ এপ্রিল তারিখেও আক্রমণ চলে মুসলমানদের উপর। মুসলমানরা এই দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উল্টো মুসলমানদেরই ধরপাকড়-গণগ্রেফতার করা হচ্ছে।

এদিকে উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’-এর আন্তর্জাতিক প্রেসিডেন্ট জি রাগহাবা রেড্ডি মুসলমানদের উপর দোষ চাপিয়ে বলেছে, “আমরা অবশ্যই তাদের উপর প্রতিশোধ নেব”। মুসলিম ও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মুসলমানসহ সরকারের উচিত- ভারতে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে মুসলমানদের উপর যে চরম যুলুম করা হচ্ছে এবং প্রায়ই দাঙ্গা লাগিয়ে মুসলমানদের অকাতরে শহীদ করা হচ্ছে তার তীব্র প্রতিবাদ করা। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “সব মুসলমান মিলে একটা দেহের ন্যায়। দেহের এক স্থান আঘাত পেলে তা সারা দেহেই সঞ্চালিত হয়। ” সে হিসেবে ভারতের মুসলমানদের প্রতি এত অবর্ণনীয় অত্যাচার নিপীড়নে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ কেউ চুপ করে বসে থাকতে পারে না।

বাংলাদেশের জনগণসহ সরকারকেও প্রতিবাদে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হতে হবে। ভারতের প্রতি চাপ প্রয়োগ করতে হবে। সেখানে মুসলমানদের প্রতি নিপীড়ন বন্ধে ও হক্ব আদায়ের ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। লিংক ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.