আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিবর্তনের নতুন হাওয়ায় সৌদি নারীরা

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

রিয়াদের সুরম্য মুজাক পান্ডা হাইবার বিপণি বিতানে ঘুরলে প্রথম ধাক্কায় একটু খটকা লাগবে বৈকি। বহুতল বিপণির সিনেমা ও গানের জন্য নির্ধারিত সিডি, ভিসিডির তাকের পাশে লেখা 'ডিয়ার কাস্টমার-ফিমেল আর নট এলাউড টু এন্টার দিস এরিয়া'। নারীকে পৃথিবীর জঞ্জাল (!) থেকে মুক্ত রাখার সে কি প্রয়াস সৌদি রাজার! নারী শিক্ষার জন্য খোলা হয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানকার শিক্ষকদের মুখচ্ছবি দেখার সৌভাগ্যও তাদের হয় না।

ক্লাস নেওয়া হয় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। পড়ালেখার মাধ্যম হিসেবে ইসলামি ওহাবি মাজহাবের মুখসত্দ বিদ্যাকে দেওয়া হয় প্রাধান্য। কারিগরি শিক্ষা সে তো স্বপ্ন আর পেশাগত জীবনে সৌদি নারীর অবস্থান মোট কর্মীর এক ভাগেরও কম। অর্থাৎ দেশটি নারীদের জন্য প্রকাণ্ড এক জেলখানা। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থান খুব একটা না বদলালেও সৌদি মেয়েদের জীবন কিন' থেমে নেই।

পরিবর্তনের কিঞ্চিৎ ছিটে বর্ণিল বোরকা। শপিং মলের আনাচে কানাচে প্রবেশ নিষেধ হলেও মোবাইলের বদৌলতে বিশ্বের অনেক অলিগলি তারা ঘুরে আসছে। তাদের জীবনে আইপড এসেছে। সাইবার ক্যাফে নিষিদ্ধ হলেও তাদের জীবনে এসেছে ল্যাপটপ কম্পিউটার। প্রতিবাদী কণ্ঠও শোনাচ্ছে অনেকে।

রাজশক্তির বিরুদ্ধে কথা বলার দায়ে কারাগারেও যাচ্ছে তারা। তবে এটা সত্য যে, নতুন বাদশাহ আবদুল্লাহ সৌদি নারীদের জীবনে খানিকটা স্বসত্দি এনেছেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্ত করেছেন রাজশক্তির বিরোধী তিন বন্দী নারীকে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক এক সাংবাদিককে মুক্তি দিয়েছেন_ যিনি সৌদি অন্দর মহলের খবর নিয়ে বই প্রকাশ করে বিশ্বের কাছে সৌদির ঘরের খবর তুলে ধরেছেন। তাছাড়া রিয়াদ পাবলিক লাইব্রেরিতে অল্প সময়ের জন্য হলেও নারীর প্রবেশাধিকার দিয়েছেন তিনি।

তবে এগুলোর পেছনে সসত্দা জনপ্রিয়তার মোহ কাজ করেছে কি না সেটাও দেখার বিষয়। সৌদি কতর্ৃপক্ষ, বিশেষত বাদশাহ আবদুল্লাহর ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশের শিক্ষা বিসত্দার নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। কিং ফয়সাল ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যে দুটি সম্পূর্ণ নারী-বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। যেখানে প্রতি বছর দশ হাজার নারী ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও যোগাযোগ বিষয়ে ডিগ্রি নিতে পারবেন। এ প্রকল্পের আওতায় গত বছর চার হাজার নারী স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

সৌদি আরবের চিরচেনা কট্টর সমাজব্যবস্থা একটু একটু করে বদলাচ্ছে। উচ্চ শিক্ষায় তারা এগিয়ে আছে পুরুষের চেয়ে। কর্মক্ষেত্রে বিপত্তি থাকলেও এগিয়ে যাচ্ছে তারা। রিয়াদের পূর্ণাঙ্গ নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করা রিজিভা হিলদা দ্য ইকনমিস্ট-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বললেন, সৌদির প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন খুবই ধীরে হচ্ছে এটা সত্য। তবে পরিবর্তনটাই এখানে মুখ্য।

শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়া নারীরা এক সময় কট্টর সমাজের আগল ভাঙতে পারবে বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস করেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।